DUTTAPUKUR BLAST SALIM

ফের মিলল দেহ, এতদিন কি ঘুমাচ্ছিলেন? পুলিশকে বলছে মোচপোল, ঘটনাস্থলে সেলিম

রাজ্য জেলা

DUTTAPUKUR BLAST SALIM সোমবার দত্তপুকুরের মোচপোলে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দাদের কাছে মহম্মদ সেলিম। ছবি; ফেসবুক থেকে।

অপরাজিত বন্দোপাধ্যায়

দত্তপুকুরে আবার মিলল ছিন্নভিন্ন দেহ। সোমবার মোচপোল গ্রামে যে দেহ মিলেছে তার মাথা আর বুকের পর আর কিছু নেই। এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন বিস্ফোরণের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। রবিবার বিস্ফোরণের চব্বিশ ঘন্টা পরও পুলিশের ক্ষোভ বিন্দুমাত্র কমেনি স্থানীয়দের। 

এদিন বিস্ফোরণের এলাকায় আসেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘এগরার বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন চোখ খুলে গিয়েছে। আমরা তো দেখছি চোখে ঠুলিই পরা রয়েছে।’’ সেলিম বলেন, ‘‘যে কোনও ঘটনায় অন্যের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। দায় তাঁকেই নিতে হবে।’’ বাজি কারখানার নামে বোমা তৈরির কাজে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সেলিম। 

সোমবার এলাকায় ঘুরে যতজনের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রত্যেকে বলছেন বাজির আড়ালে বোমা তৈরি হতো। তাঁরা নিজেরাই দেখেছেন কারখানা থেকে হাজার ফুট দূরে ছিটকে পড়েছে দেহের অংশ। উঠে গিয়েছে কংক্রিটের ছাদ। কারও বাড়িতে ছিটকে পড়েছে হাত, কারও বাড়িতে দেহের অন্য কোনও অংশ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মফিজুদ্দিন আলি জানিয়েছেন তাঁর নতুন তৈরি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বিস্ফোরণে। রাজমিস্তির কাজ করেন তিনি আর তাঁর ছেলে। বড় টাকা ঋণ নিয়ে বানিয়েছিলেন বাড়ি। সেই টাকা শোধ করবেন কিভাবে, থাকবেন বা কোথায়, এখন তা নিয়েই চিন্তা তাঁর। অসুস্থ হয়ে পড়েছে ঘটনার অভিঘাতে। 

ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সিপিআই(এম)। রবিবারই ঘটনাস্থলে যান সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃবৃন্দ। তৃণমূল ঘটনার দায় চাপাতে চাইছে আইএসএফ’র উপর। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘কোনও বিপদ হলেই মুখ্যমন্ত্রী কারও না কারও ঘাড়ে দোষ চাপান। কখনও সিপিআই(এম), কখনও বামফ্রন্ট আবার এই ঘটনায় আইএসএফ-কে দায়ী করছেন। জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এই কারখানা চলছিল কিভাবে। প্রশাসনের কাছে, পুলিশের কাছে, তৃণমূলের কাছে কোনও খবর ছিল না এটা হতে পারে? এর আগে বগটুইয়ের ঘটনায় তৃণমূলেরই এক অংশ আরেক অংশকে পুড়িয়ে মেরেছিল। তখন তৃণমূলের এক নেতা বলেছিলেন শর্ট সার্কিট। সেই নেতা এখন তিহার জেলে। মিথ্যা বলাই তৃণমূলের অভ্যাস।’’ 

স্থানীয়দের কথায় সেই সাক্ষ্যই মিলছে সোমবার সকালে। তাঁরা বলছেন, পুলিশকে জানিয়ে লাভ তো হয়নি তার বদলে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। এমন মারাত্মক কাজে প্রশাসন এবং তৃণমূলের মদত যে ছিল, জানাচ্ছেন প্রায় প্রত্যেক বাসিন্দা। দেখা গেল, পুলিশকে সরাসরি বলছেন তাঁরা, ‘এতদিন কী ঘুমাচ্ছিলেন?’

Comments :0

Login to leave a comment