দেশের উচ্চশিক্ষার কর্তৃত্ব নেওয়ার বিল পেশ করল কেন্দ্র। সোমবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান পেশ করেছেন ‘বিকশিত ভারত শিক্ষা অধিষ্ঠান বিল’।
ইউজিসি, এআইসিটিই, এনসিটিই আইন বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকারের বেছে নেওয়া লোকজনকে নিয়ে তৈরি কমিশনের ওপর সব সিদ্ধান্তের ভার দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বিলে।
আরএসএস’র মতাদর্শের সহযোগী ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা এবং ভাষাচর্চা উচ্চশিক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেবে এই কমিশন। সেই সঙ্গে আর্থিক স্বচ্ছতার নামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন কাঠামোকে বাণিজ্যিকীকরণের দিকে ঠেলে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
কেন্দ্রের এই বিলের প্রস্তাবের সময় থেকে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিলের ১৫(৩)(ছ) ধারায় পরিষ্কার বলা হয়েছে যে কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্র। কেন্দ্রের নির্দেশিকায় কমিশনের কোনও বিরোধ থাকলে কেন্দ্রেরই বক্তব্য চূড়ান্ত থাকবে।
বিলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্তরে এই কমিশনের অধীনে থাকবে তিনটি পরিষদ। এক, নিয়ন্ত্রক পরিষদ। এই পরিষদের দায়িত্ব থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া বা বাতিলের সিদ্ধান্ত। নির্দেশিকা মেনে চলছে কিনা তা দেখবে এই পরিষদ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজেদের প্রশাসন, আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়গুলি দেখবে।
দুই, অনুমোদন পরিষদ। এই পরিষদ অনুমোদন দেওয়া এবং বাতিলের বিষয়টি দেখবে। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘ফলাফল মূল্যায়ন’ করে অনুমোদন রাখা বা না রাখার বিষয় বিবেচনা করবে।
তিন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান সংক্রান্ত পরিষদ। বলা হয়েছে বিলে যে পাঠক্রমের মান, ক্রেডিট ট্রান্সফার সংক্রান্ত বিধির মতো বিষয়গুলি দেখবে এই পরিষদ।
শিক্ষাবিদদের অনেকেই বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পাঠক্রম ঠিক করা থেকে গবেষণার বিষয়ের মতো শিক্ষা সংক্রান্ত বিষবঘুলি ঠিক করত। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের মেয়াদে বারবার সেই স্বশাসন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। বস্তুত বহু ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাধীন চিন্তা বিকাশেরই সুযোগ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাসকদলের মতাদর্শের সঙ্গে খাপ খায় এমন বিষয়ে গবেষণা বাড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারপরও যেটুকু অবশিষ্ট ছিল সেটুকুও কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে এই বিল পেশ করে।
বিলে বলা হয়েছে কেবল কেন্দ্রীয় নয়, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রস্তাবিত আইনের আওতায় থাকবে। ফলে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এই আইন মানতে বাধ্য করা হবে। মেডিক্যাল, আইন, ফার্মাসি, নার্সিংয়ের মতো ক্ষেত্রগুলি সরাসরি আইনের আওতায় আনার কথা বলা না হলেও প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
Viksit Bharat Shiksha Adhikshan Bill
উচ্চশিক্ষা মুঠোয় নিতে সংসদে বিল পেশ কেন্দ্রের
×
Comments :0