প্রিপেড স্মার্ট মিটার ব্যবস্থা চালু রুখতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে সিপিআই(এম)। পশ্চিমবঙ্গের মতো বিভিন্ন রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ। সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বিদ্যুৎ পরিষেবা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যেই স্মার্ট মিটার চালু করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মানুষের অবর্ণনীয় সঙ্কটের মুখে পড়তে হবে। মাশুল বাড়বে চড়া হারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা পুরোপুরি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গে সরকারে আসীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার একই অভিমুখে চলছে। রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানোর তৎপরতা জারি রয়েছে। প্রতিবাদে শামিল রয়েছে সিপিআই(এম)। কেন্দ্রীয় কমিটি এই প্রতিবাদ আরও জোরালো করার আহ্বান জানিয়েছে যাতে স্মার্ট মিটার বন্ধ করা যায়।’’
সিপিআই(এম)’র পলিট ব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রবিবার শেষ হয়েছে দিল্লিতে। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। কেরালায় বোমা বিস্ফোরণের নিন্দা করা হয়েছে।
২৬-২৮ নভেম্বর পদযাত্রা বা ‘মহাপড়াও’-র ডাক দিয়েছে কৃষক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। দিল্লিতে ৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন দলিত সংগঠনের ডাকে সমাবেশের আহ্বানে সংহতিও জানিয়েছে সিপিআই(এম)। প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সংহতি কর্মসূচির আহ্বানও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারির বিরুদ্ধে কর্মসূচি জারি রাখবে পার্টি।
জাতভিত্তিক জনগণনার পাশাপাশি সাধারণ জনগণনা করার দাবিও জোরালো করেছে সিপিআই(এম)। কেন্দ্রীয় কমিটি বলেছে, ‘‘২০২১’র সাধারণ জনগণনাও বন্ধ রাখা হয়েছে। জনগণের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি জানতে জাতভিত্তিক সমীক্ষার কাজও বন্ধ। জাতভিত্তিক এবং আর্থ সামাজিক সমীক্ষা জরুরি আইনে স্বীকৃত প্রাপ্য নিশ্চিত করতে। যেমন সংরক্ষণের জন্য তা জরুরি। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কোন অংশের তা নির্দিষ্ট করতে পারে এই সমীক্ষা।’’
উল্লেখ্য, ইউপিএ সরকারের মেয়াদে ২০১১’তে জাতভিত্তিক এবং আর্থ সামাজিক সমীক্ষা হয়। আবাস যোজনার মতো একাধিক প্রকল্পে উপভোক্তা চিহ্নিত হয় এই সমীক্ষার মাধ্যমে। তারপরও বহু গরিব মানুষ বাদ রয়েছেন। অথচ কেন্দ্র নতুন সমীক্ষা করতে নারাজ। তেমনই স্বাধীনতার পর এই প্রথম দশ বছর অন্তর সার্বিক জনগণনার কাজ বন্ধ রেখেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
‘এক দেশ এক ভোট’ কমিটি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটি বলেছে, ‘‘সাধারণ নির্বাচনের কয়েকমাস আগে, ১৮ জানুয়ারির মধ্যে, লিখিত বক্তব্য জানাতে বলেছে। পার্টির বক্তব্য পরিষ্কার। এই নীতিতে সংসদীয় গণতন্ত্র এবং সংবিধানে বর্নিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, দু’য়ের ওপরই আঘাত নামানো হচ্ছে। সংবিধানে গুরুতর সংশোধনের চেষ্টার পাশাপাশি রাজ্য বিধানসভাগুলির একাংশের মেয়াদ ছাঁটা হবে, আবার আরেক অংশের মেয়াদ বাড়ানো হবে লোকসভার সঙ্গে ভোট করানোর জন্য। সরকার আইনসভায় গরিষ্ঠতা হারালে চলা অবৈধ। জনতার সরকারি নির্বাচনের অধিকার কেড়ে কেন্দ্রীয় শাসন জারি হলে তা হবে অগণতান্ত্রিক।’’
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে নভেম্বরের বিভিন্ন দিনে। তার মধ্যে তেলেঙ্গানা ছাড়া বাকি চার রাজ্য সম্পর্কে আলোচনা চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনে ১৭ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে সিপিআই(এম)। এ রাজ্যে দু’জন বিধায়ক রয়েছে পার্টির। ছত্তিশগড়ে ৩, মধ্য প্রদেশে ৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সিপিআই(এম)।
Comments :0