Cyclone Biparjoy

‘বিপর্যয়’এর ধাক্কায় মারাত্মক বিপর্যস্ত গুজরাটের ৮ জেলা

জাতীয়

Cyclone Biparjoy

‘বিপর্যয়’এর  তাণ্ডবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত গুজরাটের সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ অঞ্চলের ৮টি জেলা। পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে অন্তত এক হাজার গ্রাম। অসংখ্য গাছ বিদ্যুতের খুঁটি উপরে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকেই বিদ্যুৎহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে গ্রামগুলি। গাছ পড়ে যাওয়ায় তিনটি জাতীয় সড়কে যান চলচল পুরোপুরি বন্ধ। এছাড়াও সমুদ্র লাগাোয়া গ্রামগুলি সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। শুক্রবারও অঝোর ধারায় বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় হওয়া চলছে। প্লাবিত হয়ে গেছে বহু অঞ্চল। অসংখ্য কাঁচা বাড়ি ধসে পড়েছে। উড়ে গেছে পাকা বাড়ির ছাদও। এমনকি পাক দেওয়ালও ধসে পড়েছে ঝড়ের ধাক্কায়। কচ্ছ, দ্বারকা, জামনগর, পোরবন্দর, জুনাগড়, গির সোমনাথ, মোরবি, রাজকোট জেলাগুলিতে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে শুক্রবার সরকারি সূত্র জানিয়েছে। এই অঞ্চলে ট্রেন চালাচলও বিপর্যস্ত।    


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ জাখাউ বন্দরের কাছে আছড়ে পড়ে অতি মারাত্মক আকার নেওয়া ঘূর্ণিঝড়। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫ কিমির ওপর। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ কিমি। ওই দিন মাঝরাত পর্যন্ত চলে ঝড়ের ল্যান্ডফল’র প্রক্রিয়া। সমুদ্র থেকে ডাঙায় ওঠার পরপরই শক্তি হারাতে থাকে। গভীর রাত থেকে ‘বিপর্যয়’ শক্তি ক্রমশ খুইয়ে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেয় এবং উত্তর দিকে সরতে থাকে। এদিন সকালেও প্রবল ঝড় সঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে কচ্ছ অঞ্চলে। অন্যত্র এর প্রভাব পড়ছে। এদিন রাতে গভীর নিম্নচাপ হয়ে কচ্ছ ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছেই ধোলাভিরা অঞ্চলের কাছে অবস্থান করছে। শনিবার সাকলে নিম্নচাপে পরিণত হয় পাক সীমানা লাগোয়া রাজস্থানের বারমের জেলার দক্ষিণ অংশে প্রবেশ করবে বলে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ওই দিন সকাল পর্যন্ত কচ্ছ অঞ্চল সহ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানের জেলাগুলিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলবে। শনিবার এই অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ও হবে। ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিমি। শনিবার রাতে আরও শক্তি হারিয়ে ঝড়ের গতিবেগও কমতে থাকবে বলে এদিন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এর প্রভাবে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত আরব সাগর উত্তাল থাকবে। ওই দিন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। রবিবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই নিষেধাজ্ঞা তোলা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।


এদিকে, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দিতে গিয়ে রাজ্যের ত্রাণ কমিশনার অলোক কুমার পান্ডে এদিন জানিয়েছেন, পশ্চিম গুজরাট ভিজ লিমিটেড নামের বিদ্যুৎ সংস্থার অন্তত ৫,১২০টি বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ‘বিপর্যয়’ এর তাণ্ডবে। প্রাথমিকভাবে সতর্কতামূলকভাবে ৪৬০০ ওপর গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলেও এদন ৩৫৮০টি গ্রামে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ করতে সম্ভব হয়েছে। ত্রাণ কমিশনার পান্ডে জানিয়েছেন অন্তত ৬০০টি গাছ উপড়ে পড়ায় তিনটি রাজ্য সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিনও রাস্তার ওপর থেকে গাছের ডালপালা সরানো যায়নি। 
তবে, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় ‘বিপর্যয়’এর তাণ্ডব থেকে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন পান্ডে। তবে, ২২ জন জখম হয়েছেন তিনি জানান। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা পেয়ে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন সহ এনডিআরএফ’র ৩৩টি টিম উদ্ধার কাজে নামনো হয়। সমুদ্র লাগোয়া অঞ্চল থেকে প্রায় একলক্ষ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়। 

Comments :0

Login to leave a comment