Sheikh Shahjahan

সন্দেশখালিতে ইডি’র তল্লাশিতে ৩০টি নথি, হেভিওয়েট ৪টি নাম!

রাজ্য

প্রবীর দাস- সন্দেশখালি


সন্দেশখালির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে নোটিশ দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বুধবার শেখ সাহজাহানের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে চলে জোর তল্লাশি। তারপর আত্মীয় স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বাড়ি সিল করে নোটিশ সেঁটে দেয় ইডি। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে আগামী ২৯ জানুয়ারি সিজিও কমপ্লেক্স ইডি দপ্তরে সকাল ১১টায় হাজিরা দিতে হবে শেখ শাহজাহানকে।
এছাড়া এদিন সকালে সকালে কখন ইডি তল্লাশিতে ঢোকে কখন তল্লাশি শেষ করে বার হয় তা নোটিশে দেখানো হয়েছে। নোটিশে এও বলা হয়েছে ৩০টি নথি এবং তা কি কি যা নিয়ে গেল তারও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে। সিসিটিভির ফুটেজ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ইডির কাছে তা এদিনের তল্লাশিতে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। তবে যে ৩০টি নথি উদ্ধার করে নোটিশে উল্লেখ করে নিয়ে গেছে ইডি তাতে রয়েছে জমি সংক্রান্ত নথি, শাহজাহান শেখের নামে এলআইসি পলিসির অরিজিনাল কপি। মিলেছে ভিসা, ইন্সুরেন্স সার্টিফিকেট, এয়ার টিকিটের কাগজপত্র। রয়েছে নির্বাচন সংক্রান্ত নথি। দুটি নামী গহনা প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতা সংস্থার বিল রয়েছে। ইডি সূত্রে দাবি, ওই দুটি সংস্থা থেকে মোটা অঙ্কের গয়না কেনা হয়েছিল। এছাড়াও নির্বাচনী সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য নথি। নির্বাচনী সার্টিফিকেটের নথিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এসেছে আর তা হলো সন্দেশখালি-২নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য শিবুপ্রসাদ হাজারার নাম। সেখানে  উল্লেখ রয়েছে বিকাশ মণ্ডল ,প্রতিমা সরদার, সবিতা রায়ের নামও। ইডি’র আধিকারিকরা শাহজাহানেরবাড়ি থেকে যে নামগুলো পেয়েছে তা রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
৫ জানুয়ারির ঘটনার পর থেকে এই শিব প্রসাদ হাজরা কার্যত বেপাত্তা। তবে কী তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার যে অভিযোগ ইডি আদালতে করেছিল তা প্রমাণ করতেই এদিন সাতসকালে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি? এমনটাই মনে করছেন সন্দেশখালির মানুষ। এদিন শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য পাওয়া যায়নি তবে যা পাওয়া গিয়েছে, তাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় খবর ইডি সূত্রে
এদিনের তল্লাশির পর কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এদিন উঠতে শুরু করেছে। ২২ জানুয়ারি মমতা ব্যানার্জি'র ডাকে রাজ্য জুড়ে সংহতি যাত্রা করে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর উদ্যোগে সন্দেশখালিতেও সংহতি যাত্রা হয়। মিছিল থেকে বরাবরের মতো বেড়মজুর -২পঞ্চায়েত প্রধান হাজি সিদ্দিক মোল্লা দাবি করেন শেখ শাহজাহান সন্দেশখালিতেই আছেন। তিনি পালিয়ে যাওয়ার লোক নয়। হাজি সিদ্দিক মোল্লার কথার রেশে টেনে বিধায়ক সুকুমার মাহাতো ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাতের তারা দিনের আলোয় লুকিয়ে আছে শাজাহান শেখ। 
অন্যদিকে প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বারেবারে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন শেখ শাহজাহান ১৩টি নদী বেষ্টিত ৯টি দ্বীপাঞ্চলের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোথায় কখন কার বাড়িতে আত্মগোপন করে আছে। কখন শাহাজাহান নদী পথে নৌকায় চড়ে সড়কপথে মোটরবাইক ব্যবহার করে কোথা থেকে কোথায় গিয়েছে তার সবটাই জানিয়েছেন। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি এও বলেছেন নদীপথে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারেন শেখ শাহজাহান। তারপরেও পুলিশ তার টিঁকিটিকুও ছুঁতে পারে নি। এতোকিছু জানার পর ইডি আধিকারিকরা শেখ শাহজাহানকে খুঁজতে ওই সমস্ত এলাকায় না গিয়ে বাড়িতে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ নথি না আশঙ্কা থাকলেও কেন কাকভোরে গিয়ে হাজির শেখ শাহজাহানের বাড়িতে। এ প্রশ্নও তুলেছেন তেভাগার মাটি সন্দেশখালি। ‘ফেরার’ তৃণমূল নেতা ইডির তলবে সাড়া দেয় কিনা, সেটাই এখন দেখার।

Comments :0

Login to leave a comment