ADANI SC OCCRP

ঘনিষ্ঠ দুই বিদেশির বিনিয়োগ বৈধ? জবাব মেলেনি আদানিকাণ্ডের রায়ে

জাতীয়

তৃতীয় কোনও পক্ষের বা সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভরসা না করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদানি শেয়ার কাণ্ড ঘিরে জনস্বার্থ আবেদন বাতিলে এই যুক্তিও দেখিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তা’হলে কী আদানির শেয়ারে দুই বিদেশি নাগরিকের যোগাযোগ সংক্রান্ত অভিযোগ অসত্য? 
বুধবার শীর্ষ আদালতের রায়ে এই প্রশ্নের জবাব মেলেনি। ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ (ওসিসিআরপি)-র প্রতিবেদনে দুই বিদেশি নাসের আলি শাবন আলি এবং চ্যাঙ চুঙ লিঙয়ের নাম উঠে এসেছিল। তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বিদেশের ‘গার্ডিয়ান’ এবং ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’ পত্রিকায়। যার ওপর নির্ভর করতে বারণ করছে সুপ্রিম কোর্ট। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল আদানির বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত জালের হদিশ পায়নি শেয়ার বাজার নিয়ামক প্রতিষ্ঠান ‘সেবি’ বা সুপ্রিম কোর্টের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটি। বরং তাদের রিপোর্টেই স্বীকার করা হয়েছিল যে একটি সীমার বাইরে তদন্ত দেওয়ালে ধাক্কা খেয়েছে। 
রিপোর্টে বলা হয় আলি এবং লিঙ আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ। গোষ্ঠীর মালিকানাধীন একাধিক সংস্থার ডিরেক্টরও। এদের নামে বিদেশি বিনিয়োগ দেখিয়ে শেয়ার কেনা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ তহবিল বা কর ফাঁকির মুক্তাঞ্চল বলে পরিচিত মরিশাস কেন্দ্রীক বিনিয়োগ তহবিলও ব্যবহার হয়েছে। টাকা এনে শেয়ারের দাম বেড়েছে। কিন্তু ‘সেবি’-র নিয়মে এই পদ্ধতিতে শেয়ারের দাম বাড়ানো বেআইনি। 
সংগঠিত অপরাধ এবং দুর্নীতির খোঁজ বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। ২০২২’রই জানুয়ারিতে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বেআইনি পদ্দতিতে শেয়ারের দাম ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ফাঁপিয়ে বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। উত্তাল হয় সংসদ। বিজেপি সরকার বা প্রধানমন্ত্রী যদিও জবাবদিহি করেননি। উদ্বেগের বড় কারণ হলো রাষ্ট্রায়ত্ত এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের বহু টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। এরপর শেয়ারের দাম পড়ায় লোকসানও হয়েছে ভারতের জনতার টাকায় চলা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। তারপর সেপ্টেম্বরে ওসিসিআরপি রিপোর্ট বের হয়। 
আবেদনে দেখানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটির  এক সদস্য আদানির সঙ্গে লেনদেন রয়েছে এমন সংস্থার শীর্ষ পদে আসীন। যেমন স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ওপি ভাট এখন ‘গ্রিনকো’ সংস্থার চেয়ারম্যান। এই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন সংস্থা আবার আদানি গোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এমন একাধিক উদাহরণ দেওয়া হলেও সুপ্রিম কোর্ট এদিনের রায়ে ‘সেবি’-র ওপরই ভরসা রেখেছে।

Comments :0

Login to leave a comment