Gauhati High Court

বুলডোজার নীতি নিয়ে আসাম পুলিশকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

জাতীয়

Gauhati High Court

বুলডোজার নীতি নিয়ে আসাম পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করলো গৌহাটি হাইকোর্ট। পুলিশের এরকম ভূমিকাকে গ্যাং ওয়ারের সঙ্গে তুলনা করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। অভিযুক্তের বাড়ি তল্লাশির নামে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া ফৌজদারি আইনের কোথায় লেখা আছে, তা জানতে পুলিশের কাছে জবাবদিহি করেন বিচারপতি। গত মে মাসে রাজ্যের নঁগাও জেলার বটদ্রবা থানা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার বদলা নিতে পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় দুই আইনজীবির জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বতঃস্ফুর্ত মামলা গ্রহণ করে শুনানি আরম্ভ করেছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় শুনানির দিন সেদিনের ঘটনার হলফনামা আদালতে জমা দেয় নঁগাও পুলিশ। হলফনামা পেয়ে আসাম পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন প্রধান বিচারপতি। এক্ষেত্রে উদাহরণ টেনে বিচারপতি বলেন, 'রোহিত শেট্টির সিনেমায় বুলডোজার দিয়ে অভিযুক্তের বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য থাকতে পারে। কিন্তু সিনেমা তো সিনেমাই। বাস্তবে পুলিশকে ফৌজদারি আইন মেনে কাজ করতে হয়। কিন্তু আসাম পুলিশ সে আইন ভঙ্গ করছে'। 
উল্লেখ্য, গত ২০ মে রাতে শফিকুল ইসলাম নামের এক যুবককে থানায় তুলে এনে তাঁর স্ত্রীর কাছে দশ হাজার টাকা ও একটি হাঁস দাবি করে বটদ্রবা থানার পুলিশ। কিন্তু শফিকুলের স্ত্রী তা দিতে না পারায় শফিকুলের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার করে পুলিশ। এতে শফিকুলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শফিকুলের প্রতিবেশীরা। পরের দিন প্রায় সহস্রাধিক মানুষ থানা ঘেরাও করে শফিকুলের মৃত্যুর কারণ জানতে চান। কিন্তু পুলিশের কাছে সদুত্তর না মেলায় থানায় আগুন ধরিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা। এই ঘটনার বদলা নিতে এর পরেরদিন মৃত শফিকুল ও তাঁর নিকটাত্মীয়দের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় পুলিশ। এছাড়া ব্যাপক ধড়-পাকড় শুরু করে। ঘটনার দশদিন পর শফিকুলের পাশের গ্রামের আশিকুল ইসলাম নামের এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আশিকুলও পুলিশের গাড়ি চাপায় খুন হয়। গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষ। 

 

রাজ্যে পুলিশি গুন্ডারাজ কায়েম করেছে বিজেপি সরকার, এই  অভিযোগ তুলেন বিরোধীরা। বুলডোজার দিয়ে অভিযুক্তের বাড়ি ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে ৬ জুলাই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ পালন করে সিপিআই(এম)। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করে পার্টি। 


পুলিশের ভূমিকার নিয়ে বিচারপতির কঠোর সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির রাজ্য সম্পাদক সুপ্রকাশ তালুকদার এক বিবৃতিতে জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার নির্দেশেই পুলিশ ন্যক্কারজনক কাজ করছে।উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হলে এই ঘটনায় আরও ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ হতে পারে। হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি পুলিশের কঠোর সমালোচনার পর হিমন্তবিশ্ব শর্মা কি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে থাকার অধিকার রয়েছে, এই প্রশ্ন তুলেন সুপ্রকাশ তালুকদার।

Comments :0

Login to leave a comment