বাজারে একটি ডিমের দাম ৮ টাকা। সরকার দিচ্ছে ডিম প্রতি ৬ টাকা থেকে সাড়ে ছয় টাকা। দিন দিন জ্বালানির খরচ বাড়ছে। অথচ জ্বালানি বাবদ খরচের টাকার পরিমাণ বাড়ে না। বাজারে প্রতি দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। তারপরেও কেন্দ্র চালাতে মাসিক যা খরচ তা বকেয়া পড়ে থাকছে মাসের পর মাস। তাৎপর্যপূর্ণভাবে অধিকাংশ সেন্টারে পানীয়জল, শৌচাগারের কোন ব্যবস্থা নেই। অন্যান্য যেটুকু পরিকাঠামো আছে তা দিনদিন ভেঙে পড়ছে। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বহু গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যত বাধ্য করছে বিনা পারিশ্রমিকে কেন্দ্রের নির্দিষ্ট কাজের বাইরে পঞ্চায়েতের অন্যান্য কাজ করতে। গ্রামে পরিযায়ী শ্রমিক কত? তারও গননা করতে হবে কর্মী সহায়িকাদের। মাসিক অনুদান সরকার যা দেয় তার প্রায় অর্ধেক খরচ হয়ে যায় কেন্দ্র পরিচালনা করতে। এমনই এক দুঃসহ জীবন সাথে করে কেন্দ্র চালাতে হচ্ছে আইসিডিএস কর্মী সহায়িকাদের। কেন্দ্র এবং এই রাজ্যের এ হেন অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো আচরণের তীব্র বিরোধিতা করতে এবং ১০ দফা দাবির দ্রুত নিরসনের দাবি তুলে শুক্রবার পথে নেমে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সভা ও ডেপুটেশনে সামিল হয় বসিরহাট -১নং ব্লকের আইসিডিএস কেন্দ্রের কয়েকশ কর্মী ও সহায়িকা।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতি(সিআইটিইউ) উত্তর ২৪পরগনা জেলা কমিটির আহ্বানে এদিন বসিরহাট -১ ব্লকের উদ্যোগে অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত সিডিপিও সন্তু দাসের অনুপস্থিতিতে সুপারভাইজারকে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেয় ৭ জনের প্রতিনিধিদল। দাবিগুলির দ্রুত নিরসনের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মলি সিংহ, সম্পাদক কনিকা দাস, ভারতী মিত্র ও সিআইটিইউ নেত্রী ইরিনা ইরানি। নেত্রীবৃন্দ বলেন, ঐক্যবদ্ধ না হলে উভয় সরকারের ঘুম ভাঙ্গবে না। আমাদের প্রতিদিনকার জীবন যন্ত্রনা ভোগ কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আমরা কেন্দ্রের ন্যস্ত দায়িত্ব যেমন ঠিকঠিক পালন করবো ঠিক তেমনি আন্দোলন করে দাবি আদায়ে রাস্তায় থাকবো। স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ১০ দফা দাবিগুলি পড়ে শোনান ছন্দা সরকার। উল্লেখিত দাবিগুলি হলো, প্রতিমাসে ন্যুনতম ২৬ হাজার টাকা মজুরি দিতে হবে। গ্রাচ্যুয়িটি, পেনশন সহ প্রতিটি আইসিডিএস কর্মী সহায়িকাদের সরকারি কর্মচারীর স্বীকৃতি দিতে হবে। ডিম সবজি সহ অন্যান্য বিলের টাকা প্রত্যেক মাসে পরিশোধ করতে হবে। মূল্যবৃদ্ধির সহিত সামঞ্জস্য রেখে বর্তমানে প্রতিটি ডিমের দাম ৮ টাকা দিতে হবে এবং জ্বালানির খরচ মাসিক ১০০০ টাকা বৃদ্ধি করতে হবে। যেখানে সেন্টারের পরিকাঠামো ভালো না সেই সেন্টারগুলোতে অবিলম্বে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে দিতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পানীয় জল ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে। সেন্টার পরিচালনার জন্য অন্যান্য সরঞ্জাম সঠিক সময়ে সরবরাহ করতে হবে। প্রকল্প বহির্ভূত কোন কাজ কর্মীদের দ্বারা করাতে চাইলে আলোচনা সাপেক্ষে উপযুক্ত মজুরি প্রত্যেক কর্মীকে দিতে হবে। কোন সেন্টারে সমস্যা দেখা দিলে সেই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অফিসে মিটিং ডাকতে হবে। সেই সাথে এই মিটিংগুলিতে ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা যাহাতে অংশগ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
Comments :0