আইএমএফ’র চাপে মুদ্রার বিনিময় হারে নিয়ন্ত্রণ তুলতে হয়েছে পাকিস্তানকে। তিন মাস স্থগিত রাখার পর এবার পাকিস্তানে প্রতিনিধি দল পাঠাতে রাজি হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার, আইএমএফ। কিন্তু তারপরও পাকিস্তান নিশ্চিত নয়, কবে এবং কী পরিমাণে মিলবে আইএমএফ’র ঋণ।
ঋণ সুদসহ মেটালেই কেবল হবে না। আইএমএফ সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ কাঠামো বদলের জন্যও চাপায় শর্ত। বরাবর সেই শর্তে লাভবান হয় শিল্পে এবং আর্থিক বলে এগিয়ে থাকা পশ্চিমী দুনিয়ার হাতে গোনা কয়েকটা দেশ।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম, ‘দা ডন’ জানিয়েছে আগামী সপ্তাহেই ইসলামাবাদে আসতে পারে আইএমএফ’র প্রতিনিধিদল। এই পত্রিকার একাধিক প্রতিবেদনে শর্ত মেনে বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট মিটিয়ে ফেলার ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার সমানে নামছে। শর্ত মানলে পাকিস্তানকে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আইএমএফ। ভারতীয় টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিপজ্জনক স্তরে নেমে এসেছে ডলারের ভাণ্ডার। ফলে বিদেশি ঋণ বা ডলারে মেটাতে হয় এমন জরুরি পণ্য ও পরিষেবা কেনার ক্ষমতা প্রশ্নের মুখে রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি ঘাটতি হয়ে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ রাজনৈতিক স্তরে সহমত তৈরির চেষ্টা করছেন। আইএমএফ’র এই পর্বে প্রধান শর্ত ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি রুপির বিনিময় হারে আংশিক নিয়ন্ত্রণও করা যাবে না। পাকিস্তান প্রাথমিক ভাবে গররাজি হওয়ায় প্রতিনিধি দল পাঠানো আটকে রেখেছিল আইএমএফ। চাপের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে রাজি হয়েছে। তারপর দল পাঠাচ্ছে আইএমএফ।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করেন বিনিময় হারে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে বাধ্য করে আইএমএফ। ডলারের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দেয়। লাতিন আমেরিকাতেও এই কৌশল খাটানো হয়েছে বিভিন্ন সময়। ঋণের জালে আরও ফেঁসে যায় গ্রাহক অর্থনীতি।
পাকিস্তানে বাড়তি সমস্যা হয়েছে ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধি। পাকিস্তানি রুপি প্রতি ডলারে ২৪২.২৫ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার গত ২৪ বছরে সর্বোচ্চ করেছে। কিন্তু তাতেও মূল্যবৃদ্ধি বাগ মানছে না।
Comments :0