JALPAIGURI KOROLA

আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে করলা নদী, ক্ষোভ নাগরিকদের

জেলা

কচুরিপানা, জঞ্জালে ভরে করলা নদী। ছবি: প্রবীর দাশগুপ্ত

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি

আবারও বেহাল ছবি দেখল শহরবাসী। কচুরিপানা আবর্জনায় পরিপূর্ণ জলপাইগুড়ির হৃদয় করলা নদী। দিন দিন করলা নদীর দূষণ বেড়েই চলেছে। দূষণের মাত্রা এখন মারাত্মক। 
করলা নদীর জলের মাঝখানে পুকুরের মতো হয়ে রয়েছেণ। চারদিকে কচুরিপানা ভরা। হারাচ্ছে নদীর নাব্যতাও। নদী পরিষ্কার করা এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের তরফে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু জলপাইগুড়ি শহরের বাবুঘাট থেকে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার আবর্জনায় ভরা করলা নদী। 
দীর্ঘদিন ধরে জলপাইগুড়ি পৌরসভা, করলা অ্যাকশন প্ল্যান রূপায়ণের নামে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের তরফে এসডিও’র তত্ত্বাবধানে করলা নদী সংস্কারের উদ্যোগ হচ্ছে বলে প্রশাসনের দাবি। কিন্তু কাজ হয়নি।
প্রতি বছর জলপাইগুড়ি শহর জলে ডোবে, প্রতিশ্রুতির গর্জন বাড়তে থাকে, কিন্তু নদীর বুকে কচুরিপানা ও আবর্জনার অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। প্রশাসনের চোখের সামনে করলা পাড়ের জলা-নিচু জমি সবই জমি-হাঙরদের পেটে ঢুকছে। 
জলপাইগুড়ি শহরের নাগরিক সংগঠন 'অভিমুখ', যারা তিস্তা' নদী নিয়ে কাজ করছে, সেই সংগঠনের প্রশান্ত নাথ চৌধুরী বলছেন, " করলা নদীর পুনরুজ্জীবনে আমরা কাজ করে চলেছি। করলা নদী বাঁচাতে আমরা অনেক পরিকল্পনা শুনেছি। এখন কাজ চাই। প্রকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করলা বাঁচানোর পরিকল্পনা গৃহীত হোক। "                           
নদীর সৌন্দর্যায়নের নামে একের পর এক অবৈজ্ঞানিক কর্মকান্ড চলছে। নদীর পাড় বাঁচানোর জন্য নদীর ভেতর থেকে কংক্রিটের দেওয়াল তোলা হয়েছে, বর্ষার সময় শহরের অতিরিক্ত জল স্বাভাবিক নিয়মে আর করলায় পড়তে পারছে না। প্রতি বার একটু বেশি বৃষ্টি হলেই শহর ডুবছে। মাঝি, মৎস্যজীবী পরিবারগুলিকে অন্য পেশায় যেতে হচ্ছে। করলার মাছ উধাও! 
করলা নদীর অতীত ও বর্তমান নিয়ে সরেজমিনে কাজ করেছেন বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের অন্যতম প্রবীণ গবেষক জাতিস্মর ভারতী। তিনি বলেন, " শহরের পয়ঃপ্রণালীর জল, আবর্জনা যাতে কোনো ভাবেই নদীতে পড়ে দূষণের মাত্রা না বাড়ায় তার ব্যবস্থা জরুরি। করলা পাড়ের জমি যাতে বেআইনী ভাবে দখল না হয়, দেখতে হবে।" 
গবেষক সুকল্যাণ ভট্টাচার্য বলছেন, “ করলা নদীকে বাঁচানোর জন্য আর প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না। করলা পুনরুজ্জীবনের কাজের মূল্যায়নের জন্য বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করা প্রয়োজন। ”

Comments :0

Login to leave a comment