Manipur Violence follow up

হিংসা অব্যাহত চাষের খেতে যেতে ভয় মণিপুরী কৃষকদের

জাতীয়

মণিপুরে লাগাতার হিংসার ব্যাপক প্রভাব পড়ছে চাষবাসের ওপরে। বহু কৃষকই ফসল তুলতে পারছেন না ক্রমবর্ধমান হিংসার জেরে। যদি অবিলম্বে পরিস্থিতি পরিবর্তন না হয় তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উত্তর পূর্বাবাঞ্চলের রাজ্য গুলির মধ্যে খাদ্যের সংকট দেখা দেবে।
কৃষি দপ্তরের আধিকারিক এন গজেন্দ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানান মণিপুরের কৃষকরা এই হিংসার জেরে প্রায় ৫,১২৭ হেক্টর জমিতে ফসলই উৎপাদন করতে পারেননি। জার ফলে ২৮ জুন পর্যন্ত উৎপাদনে ঘটাতি রয়েছে প্রায় ১৫,৪৩৭.২৩ মেট্রিক টন। তিনি আরও জানান যদি এই বর্ষাতে কৃষকরা ধান চাষ করতে না পারেন তা হলে জুলাইয়ের শেষে ঘাটতির পরিমান আরও বাড়বে। রাজ্য সরকারের পক্ষে বীজ ও সারর ব্যবস্থাও করা হবে যাতে কৃষকরা অল্প সময়ের মধ্যে ফসল উৎপাদন করতে পারে বলে জানান তিনি।


পরিসংখ্যান অণুযায়ী মণিপুরে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ কৃষক ১.৯৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করে থাকেন। থউবাল জেলায় হেক্টর প্রতি সর্বাধিক ফসল চাষ হয় প্রতিবছর। এবার সেখান থেকেও উঠে আসছে নেতি বাচক পরিস্থিতি। অন্যান্য ফসলের সঙ্গে আদাও চাষ হয় মণিপুরে। সেই আদা উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও আসে। কিন্তু মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির ফলে আদা জমি থেকে তুলছেন না চাষিরা। ফলে রপ্তানিতেও টান, সেই কারণেই আদার দাম বেড়েছে আকাশ ছোঁয়া। কলকাতার বাজারে আদা ছুঁয়েছে সারে তিনশো টাকা কেজি। রাজ্য সরকারের আরও আশঙ্কা চলতি মাসের শেষের দিকে যদি ‘মেইতেই ধানের’ চাষ না হয় তাহলে আগামী বছরে ব্যাপক হারে দাম বাড়বে মেইতেই চালের।


বহু চাষিই ফসল তুলতে যাচ্ছেন না চাষের জমিতে। তাদের আশঙ্কা চাষের ক্ষেতে গেলেই হয়তো সন্ত্রাসবাদীরা গুলি চালিয়ে হত্যা করতে পারে তাদের। আবার অনেক চাষি খালি জমি ফেলে রেখেছে চাষ করছেন না নিজেদের প্রাণের ভয়ে। বিষ্ণুপুর জেলার মইদাংপকপি এলাকার বাসিন্দা থকচম মিলান জানান ‘সন্ত্রাসবাদীরা পাহারে বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকে। মাঠে চাষিরা গেলেই তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। অতীতেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। তাই অনেকেই চাষ করতে মাঠে যাচ্ছেন না। কিন্তু আমাদের মতো অনেক চাষিই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে যাচ্ছেন। নইলে সারা বছর খাবার মিলবে না।’

{ad{
একই জেলার মইরাং খুনউ এলাকার কৃষক সবিত কুমার জানান জুন এবং জুলাইয়ের শেষে মইতেই ধানের বীজ বপন করা হয় এবং ফসল তোলা হয় নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে। কিন্তু ইতিমধ্যে জুন চলে গেছে, জুলাইয়ের আর কয়েকটা দিন হাতে। এর মধ্যে বীজ বপন করতে না পারলে বছরের শেষে ধান তোলা মুশকিল। তারপর যদি পর্যাপ্ত পরিমানে বৃষ্টি না হয় তাহলে আরও সংকটে পরবে চাষিরা।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং দাবি করেছএন চাষিদের নিরাপত্তা দিতে স্পর্ষকাতর এলাকা গুলোতে সেনা ও আধা সেনা টহল দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের ওপর ভরষা করতে পারছে না মণিপুরের সাধারণ মানুষ থেকে চাষিরা।

মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে সে রাজ্যে যাচ্ছে সিপিআই ও সিপিআই(এম) প্রতিনিধি দল। ৬ থেকে ৮ জুলাই সেখানে থাকবেন তারা।

Comments :0

Login to leave a comment