SHAKTI SHWARUPA MODI CPI(M)

ভোটের জন্য ‘শক্তি স্বরূপা’ চমক মোদীর, বলছে সিপিআই(এম)

রাজ্য

সব অংশ একযোগে প্রতিবাদে নেমেছিলেন সন্দেশখালিতে।

নারীশক্তির বন্দনা নয়। এখন ‘শক্তি স্বরূপা’ বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার ভোটের আসলে চমক। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সন্দেশখালির বাসিন্দা রেখা পাত্রকে নরেন্দ্র মোদীর ফোন সংক্রান্ত প্রচারে এমনই প্রতিক্রিয়া সিপিআই(এম)’র।
রবিবার রাজ্যের দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকায় রেখা পাত্রের নাম ঘোষণা করে বিজেপি। সন্দেশখালির মহিলাদের একাংশ এর আগে বারাসতে মোদীর সভায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। পাত্র তাঁদের মধ্যে ছিলেন। পাত্র মঙ্গলবার জানান যে মোদী তাঁকে ফোন করেছেন। বিজেপি বলেছে, এই প্রার্থীকে ‘শক্তি স্বরূপা’ আখ্যা দিয়েছেন মোদী। 
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরাদের নেতৃত্বে লুট এবং মহিলাদের অসম্মানের প্রতিবাদে গত জানুয়ারি থেকে রাস্তায় নেমে পড়ে প্রতিবাদ। পুলিশ প্রশাসনকে তৃণমূলের পেটোয়া বাহিনী আখ্যা দিয়ে রাস্তায় নামে জনতা, সামনে ছিলেন মহিলারা। এই আন্দোলনের জেরে তৃণমূল সরকারের পুলিশ হেপাজতে নিয়েছিল সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক এবং সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য নিরাপদ সর্দারকে।
সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ ভট্টাচার্য মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘আন্দোলন যখন সরব, বিজেপি নেতারা তখন শেখ শাহজাহানের ধর্মীয় পরিচয় দেখিয়ে বিভাজন করছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি নিজে সাংবাদিক সম্মেলন করে অত্যাচিরত এবং নিপীড়কের ধর্মের পরিচয় টেনেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর দল কখনই মহিলাদের সম্ভ্রম নিয়ে চিন্তিত নয়। অন্য রাজ্যেও বিজেপি’র ভূমিকা দেখেছি।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এখন ভোটের আগে চমক দেওয়ার জন্য ফোন করে প্রচার করছেন মোদী।’’
পাত্র সংবাদমাধ্যমে বলেছেন যে ২০১১’র পর থেকে সন্দেশখালিতে ভোট দিতে না পারার অভিজ্ঞতা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে।
ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৬ এবং ২০২১’র লোকসভা ভোট হয়েছে। ২০১৯’র লোকসভা ভোটও হয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়। ২০১৮ এবং ২০২৩’র পঞ্চায়েত নির্বাচনও হয়েছে। সন্দেশখালির মানুষ, বিজেপি’র প্রার্থী নিজেও জানাচ্ছেন ভোট দিতে পারেননি। কেন্দ্র বারবার গর্জালেও বর্ষায়নি। দুর্নীতির তদন্তেও আমরা দেখেছি, চুনোপুঁটি ধরা হলেও মাথাদের ধরা হচ্ছে না। মোদীর গ্যারান্টি ২ কোটি বেকারের কাজ, প্রত্যেক অ্যাকউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার মতোই ভাঁওতা।’’
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়ি তল্লাশিতে যায় ইডি। রক্তাক্ত হন আধিকারিকরা, শাহজাহান বেপাত্তা হয়। সন্দেশখালির মানুষ নামেন আন্দোলনে। যার জেরে রাজ্য পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়, বলেছেন ভট্টাচার্য। তিনি মনে করিয়েছেন যে মার খাওয়ার ১৯ দিন পর ইডি ফের গিয়েছিল শাহজাহানের বাড়িতে। 
মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচারের জন্য মোদী তাঁকে বলেছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। মহিলাদের সম্ভ্রমহানিকেও রাখতে বলেছেন প্রচারে।
ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের মেয়াদে লাগাতার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বারবার পথে নেমেছে বামপন্থীরাই। বিজেপি’র বিশ্বাসযোগ্যতায় প্রশ্ন তুলছে উন্নাও বা হাথরসে নারী নির্যাতনে যুক্তদের পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা। বিলকিস বানো ধর্ষণে অপরাধীদের সাজার মেয়াদ কমিয়েছে বিজেপি। নারীদের সম্মান নিয়ে বিজেপি বা আরএসএস ভাবিত নয়। মতাদর্শের কারণে আরএসএস নারীদের সংগঠনে জায়গা দেয় না। সন্দেশখালির প্রশ্নে কেবল ভোটের জন্য মোদী এবং তাঁর দল উদ্বেগ দেখাচ্ছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment