কংগ্রেসের ইশ্তেহারে চিন্তিত নরেন্দ্র মোদী। চিন্তিত বামপন্থীদের নিয়েও। যথেষ্ট অঙ্কা রয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ নিয়েও। শনিবার সাহরানপুরে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ভাষণে স্পষ্ট ধরা পড়েছে এই উদ্বেগ। কংগ্রেসের ইশ্তেহারকে স্বাধীনতার আগে মুসলিম লিগের ভাবনার সঙ্গে তুলনা করে বিভাজনের রাজনীতিকে আরও গতি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা ইশ্তেহারে একদিকে জোর দিয়েছে দেশের সংবিধানকে রক্ষার আহ্বানে। আরেকদিকে জনমুখী কর্মসূচিতে দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব। সমাজের সব অংশের নাগরিক অধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্পষ্টতই মোদী না-খুশ।
মোদী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার লড়াই লড়েছিল যে কংগ্রেস তা কয়েক দশক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আজকের কংগ্রেসে না আছে দেশ গড়ার মতো দৃষ্টিভঙ্গি না রয়েছে লক্ষ্য।’’
মোদীর ভাষণ, ‘‘কংগ্রেসের ইশ্তেহার আজকের ভারতের আশা আকাঙ্ক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন। স্বাধীনতার সময় মুসলিম লিগের যে ভাবনা ছিল, কংগ্রেসের ঘোষণাপত্রে তা রয়েছে। কংগ্রেসের ঘোষণাপত্রে পুরোপুরি মুসলিম লিগের ছাপ রয়েছে।’’
মোদী টেনে এনেছেন বামপন্থীদেরও। বলেছেন, ‘‘মুসলিম লিগের ভাবনার পর যেটুকু জায়গা ছিল সেখানে বামপন্থীদের চিন্তা ঢুকে পড়েছে। এই কংগ্রেস একুশ শতকে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।’’যদিও এই প্রথম নয়, গত বছর আরএসএসের ‘বিজয়া দশমীর’ ভাষণেও কমিউনিস্টদের আক্রমণ করা হয়। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দেশের প্রধান শত্রু ‘কালচারাল মার্ক্সিস্ট’রা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ধর্মীয় বিভাজনের নিরিখে সংখ্যাগুরুবাদকে একমাত্র আশ্রয় করছেন মোদী। বিরোধীরা সংখ্যালঘুদের অধিকার দাবি করলে ‘মুসলিম তোষণের’ অভিযোগ বরাবরই তুলেছে বিজেপি এবং আরএএস। কখনও প্রতিবাদীদের ‘টুকরে টুকরে গ্যাঙ’ মানে দেশকে ভাঙতে চায়, এমন আখ্যা দিয়েছে। এবার মহম্মদ আলি জিন্নার মুসলিম লিগকে টেনে এনেছে সরাসরি। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, স্বাধীনতার লড়াইয়ে আরএসএস’র ভূমিকা কী?
মোদীর দাবি, ‘‘‘ইন্ডি’ ব্লক অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার সমার্থক। জনতা এদের গুরুত্বও দিচ্ছে না।’’
বিরোধী নেতানেত্রীদের বক্তব্য, দেশের যে যে প্রান্তে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের ডাকে সমাবেশ হয়েছে, উপচে পড়েছে ভিড়। মার্চের শেষদিনে দিল্লির রামলীলা ময়দানেও হয়েছে বিশাল সমাবেশ। বিজেপি এবং আরএসএস শঙ্কিত। মোদীর ভাষণে শঙ্কারই সুর।
Comments :0