পূজা বোস
শীতের সকালে গৌর-নিতাইয়ের জন্মস্থান ছেড়ে গাড়ি তখন এগিয়ে চলেছে বর্ধমান জেলার দিকে। আর গাড়ির সামনে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁদের একদম সামনের সারিতে রয়েছেন লালঝান্ডা হাতে একদল সাঁওতাল মহিলা।
ওঁরাও সামিল হয়েছেন 'বাংলা বাঁচাও যাত্রা' য়। কারণ একটাই, শাসকদলের দৌরাত্ম্যে বিপন্নতা বাড়ছে।
শুক্রবার, পূর্ব বর্ধমানের মেমারীর সভা থেকেও একই কথা উঠে আসল ছাত্রীনেত্রী ঐশী ঘোষের বক্তৃতাতেও। তিনি বলেন, "শাসককে বুঝিয়ে দিতে হবে লাল ঝান্ডা হাতে বাংলার মানুষ যখন মাঠে নামে তখন তারা লড়াইটা বুঝেই নেয়।"
ঐশী বলেন, "দেশে, রাজ্যে যে সরকার আছে তারা মানুষের অধিকার ধ্বংস করতে চায়। প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা সবই বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। এই নিয়ে শাসকের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করলে বলছে টাকা নেই । আসলে ওরা চায় না শ্রমজীবী মানুষের সন্তানেরা মাথা উঁচু করে বাঁচুক। আরএসএস, বিজেপি চাইছে দেশের শিক্ষার পরিকাঠামোকে ধ্বংস করে দিতে। আর এই পরিকাঠামো ধ্বংস করে, প্রাইভেট স্কুলে পরিণত করতে চাইছে। এমন একটা ব্যবস্থা করবে যাতে যাদের কাছে টাকা আছে তারাই পড়াশোনা করপ্রজেক্টতে পারবে। "
তিনি আরও বলেন, "আরএসএস - বিজেপি তৃণমুলকে তৈরি করেছে। লাল ঝান্ডাকে ঠেকাতে এই প্রজেক্ট। কেন্দ্র যেভাবে শিক্ষা কর্মসংস্থান কর্পোরেটদের হাতে বেঁচে দিচ্ছে রাজ্যে তৃণমূলও একই কায়দায় চলছে। আজ সরকারি স্কুল নেই, স্কুল যেখানে রয়েছে সেখানে টিচার নেই। পড়াশোনা লাটে তুলে দিচ্ছেন মূখ্যমন্ত্রী। কারণ একটাই, যদি আজকে সব বেসরকারি হয়ে যায় ওনারা সেখান থেকে টাকা আদায় করতে পারবেন। সরকারি স্কুল হলে সরকারকে টাকা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে প্রাইভেট স্কুল হলে তৃণমুলের নেতারা টাকা পাবে।
ঐশী বলেন, পশ্চিম বর্ধমানের শিল্প, পূর্ব বর্ধমানের কৃষিকে ধ্বংস করছে। ওরা ভেবেছিলো শিল্পকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে বেঁচে দিয়ে পুঁজিবাদীদের হাতে কারী কারী টাকা তুলে দেবে। এর ফলে শ্রমজীবী অধিকার হারাচ্ছে। আরএস এস এমন রাজ্য তৈরি করত চাইছে যেখানে সাধারণের অধিকার থাকবে না। এই মাটি সংগ্রাম, লড়াইয়ের মাটি - শ্রমিক, কৃষক দেখিয়েছে কিভাবে লড়তে হয়।"
ঐশী আরও বলেন, " আমাদের শিক্ষাকে বাঁচাতে হবে। নাহলে ওরা আগামী প্রজন্মকে জানতে দেবে না গণতান্ত্রিক অধিকার কী। দুই শাসকদলকে বোঝাতে হবে বাংলার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে এত সহজে হারানো যায় না। শাসককে বুঝিয়ে দিতে হবে লাল ঝান্ডা হাতে বাংলার মানুষ যখন মাঠে নামে তখন তাঁরা লড়াইটা বুঝেই নেন। "
Comments :0