RBI withdraws Rs 2,000 notes

২ হাজারের নোট বদলে সময়সীমা বৃদ্ধির ইঙ্গিত আরবিআই গভর্নরের

জাতীয়

RBI withdraws Rs 2000 notes

দুই হাজার টাকা নোট বদলের জন্য সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখকে গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই! শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও সোমবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের একথা বলেছেন স্বয়ং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। রিজার্ভ ব্যাঙ্কই গত ১৯ মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকার নোট। ওই বিজ্ঞপ্তিতেই বলা হয়েছিল, হাতে ২ হাজার টাকার নোট থাকলে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্কে গিয়ে হয় সেই নোটের বদলে অন্য অঙ্কের নোট সংগ্রহ করতে হবে অথবা নিজের অ্যাকাউন্টে তা জমা দিতে হবে। তবে এই নোট বাতিল হচ্ছে না, অনুমোদিত মুদ্রা হিসাবে তা চালু থাকছে। এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর নিজেই বললেন, জনগণ যেন ওই সময়সীমাকে গুরুত্ব না দেন। কারণ, তারপরেও ওই নোট বৈধ থাকবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের পরেও কারও কাছে ২ হাজার টাকার নোট থাকলে তিনি কী করবেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা জানাবে।   


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশে। কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালনের দায়িত্বই দেওয়া আছে। অতএব ২ হাজার টাকার নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মোদী সরকারের পক্ষে ক্রিজ সামলাতে নামলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। গত ১৯ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই অঙ্কের নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। বলা ভাল, মোদী সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিয়েছে। তার ৩ দিন বাদে সোমবার প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি একদিকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন— ২ হাজার টাকার নোট মোটেই বাতিল করা হয়নি, আরেক‍‌দিকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলেন— কেন ২০১৬ সালে ২ হাজার টাকার নোট চালু করা হয়েছিল আর কেনই বা মাত্র ৭ বছরের মধ্যে সেই নোট ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ২০১৬ সালে সরকার যখন ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিল, তখন দেশের অর্থনীতিতে মুদ্রার চাহিদা দ্রুততার সঙ্গে পূরণ করার জন্য ২ হাজার টাকার নোট চালু করা হয়েছিল। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়ে গিয়েছে এবং বাজারে অন্যান্য অঙ্কের নোট যথেষ্টই রয়েছে, তাই এই নোট এখন পুরোপুরি ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০১৮-১৯ সালেই ২ হাজার টাকার নোট ছাপানো বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর যা-ই বলুন, প্রশ্ন উঠেছে অবশ্য অন্য। মাত্র ৭ বছর মেয়াদের এই খামখেয়ালিপনার জন্য ২ হাজার টাকার নোট ছাপাতে যে বিপুল অর্থ খরচ হয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে তার কী প্রভাব পড়তে চলেছে? কারণ, ওই অর্থের পুরোটাই কার্যত জলে গেল।

 


শক্তিকান্ত দাস এই আশাও প্রকাশ করেছেন যে, বাজারে ২ হাজার টাকার যত নোট রয়েছে, সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে তার প্রায় সবই বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ঢুকে যাবে। যদি তা না  হ‌য়? দাস বলেছেন, তখন ভাবা হবে— অতঃ কিম। তাঁর এই কথায় সময়সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিত আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রেও খবর, সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে গিয়ে তা বাড়ানো হতে পারে। সবটাই নির্ভর করবে, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ২ হাজার টাকার কত নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফেরত পাবে, তার উপরে। ওই সূত্রেই আরও দাবি করা হয়েছে, বাজারে চালু বিভিন্ন অঙ্কের নোটের মধ্যে ২ হাজার টাকার নোটের উপস্থিতি গত ৫ বছর ধরেই ক্রমশ কমে এসেছে। ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ বাজারে ছিল ৬ লক্ষ ৭৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার টাকার নোট, যা ছিল সব অঙ্কের নোটের মোট মূল্যের ৩৭.৩ শতাংশ। সেটিই ছিল মূল্যের দিক থেকে ওই নোটের সর্বাধিক উপস্থিতি। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ সেই মূল্যমান নেমে এসেছে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার কোটি টাকায়, যা সব অঙ্কের নোটের মোট মূল্যের ১০.৮ শতাংশ। সংখ্যার হিসাবে ২০২০ সালে বাজারে ছিল ২ হাজার টাকার ২৭৪ কোটি নোট, যা ছিল সব অঙ্কের নোটের মোট সংখ্যার ২.৪ শতাংশ। ২০২১ সালে তা কমে হয় যথাক্রমে ২৪৫ কোটি ও ২ শতাংশ। ২০২২ সালে তা আরও কমে হয়েছে যথাক্রমে ২১৪ কোটি এবং ১.৬ শতাংশ।

Comments :0

Login to leave a comment