Mid day meal

মিড ডে মিলে পিঠে পায়েস, খুশি পড়ুয়ারা

জেলা

স্কুলের ছোট ছোট পড়ুয়াদের নবান্ন উৎসবের সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে অভিনব পরিকল্পনা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও গ্রামবাসীদের। 

সরকারের উদ্যোগ নেই, শিক্ষক ও স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে মিড ডে মিলে পিঠে পুলি আর পায়েস পাতে পড়ল খুদে পড়ুয়াদের। রোজকার ডিম ভাত তো ছিলই। সেই সঙ্গে পৌষ উৎসবকে সামনে রেখে মিড ডে মিলে পিঠে পুলি আর পায়েস খেল পড়ুয়ারা। এক ঘেয়ে খাবার ছেড়ে শীতের রোদ গায়ে লাগিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসে পেটপুরে পড়ুয়ারা খেলো পিঠে ও পায়েস। গন্ধেই বোঝা যাচ্ছিল কতটা সুস্বাদু হয়েছিল মিড ডে মিলের এই খাবার। খাবারের মেনুতে পিঠে পায়েস দেখে খুশি হন পড়ুয়ারা। চওড়া হাসি মুখে আনন্দে চিৎকার জুড়ে দেন তারা। রোদ গায়ে লাগিয়ে পিঠে পুলির মতো সুস্বাদু খাবার পেয়ে খুশি পড়ুয়ার দল। এই ছবিই দেখা গেল ধূপগুড়ির বটতলী বি এফ পি প্রাইমারি স্কুলে।

চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী রিমি অধিকারী বলল,‘‘আজকে মিড ডে মিলের খাবারে আমাদের পিঠা পায়েস ও দিয়েছে, আমরা দারুন খুশি।’’

মিড ডে মিলের রাধুনি ধৌলি অধিকারি বললেন, ‘‘পৌষ মাসে এটা আমরা করি। বলতে পারেন বিশেষ উৎসব। মিড ডে মিলে ওরা রোজই তো একই খাবার খায়, তাই এদিন একটু অন্যরকম করার চেষ্টা। ওদের আনন্দ দিতেই এই উদ্যোগ। এটা করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত সাহা বলেন, ‘‘পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে আজ মিড ডে মিলের খাবারের সাথে এই পিঠে পায়েসের আয়োজন করা হয়েছে। খাবারের পাতে নিত্যদিনের খাবারের পাশাপাশি পিঠে এবং পায়েস পাওয়ায় খুশি পড়ুয়ারা।’’

জানা যায়, সরকারি এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪৩ জন। বুধবার উপস্থিত ছিল ১২০ জন পড়ুয়া। এই শীতের মরশুমে অন্যান্য স্কুলগুলিতে এখন প্রায় ছাত্র-শূন্য। তবে ব্যতিক্রম ছবি দেখা যায় বটতলী বিএফপির প্রাথমিক স্কুলে। দেখলে মনে হতে পারে বিশেষ দিনে লোভেই হয়ত পড়ুয়াদের সংখ্যাটা আজকে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে শিক্ষকদের দাবি প্রায় দিনই ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ হাজির থাকে স্কুলে।

সরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের মাথা পিছু বরাদ্দ ৬ টাকা ১৯ পয়সা এবং ষষ্ট থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মাথা পিছু বরাদ্দ ৯ টাকা ২৯ পয়সা। শিশু পড়ুয়াদের মুখের খাবারের গুণাগুণ বা পরিমাণ বৃদ্ধিতে সরকার উদাসীন।

কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত নীতি অনুসারে সাধারণভাবে জম্মু-কাশ্মীর সহ কেন্দ্রীয় শাসিত রাজ্যগুলি বাদে সব রাজ্যকেই এই অর্থের ৪০ভাগ দিতে হয়। বাকি ৬০ভাগ টাকা কেন্দ্রীয় অনুদান হিসাবে সে রাজ্য পেয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের বক্তব্য, ২০২২ সালে মিড ডে মিলে বরাদ্দ যে সংখ্যাটি ৫ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ৮ টাকা ১৭ পয়সা ছিল তখন রাজ্যে দিকে দিকে মিড-ডে মিলের টাকা চুরি, চাল চুরির ঘটনা সামনে এসেছে। এখন টাকা বাড়ছে, ফলে খাবারের মান কতটা উন্নত হবে তা জানিনা, কিন্তু ওদের ‘উন্নয়ন’ হবেই।’

তাঁর বক্তব্য বাজার অনুযায়ী প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম পর্যন্ত মাথাপিছু অন্তত ১০ টাকা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত মাথাপিছু অন্তত ১৫ টাকা করা উচিত। অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র হাতে গোনা পড়ুয়া আছে। সেখানে ১০ টাকাও যথেষ্ট নয়। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় করতে হয়। এদিনও শিক্ষক ও স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে মিড ডে মিলে পিঠে পুলি আর পায়েস পাতে পড়ল খুদে পড়ুয়াদের।

Comments :0

Login to leave a comment