Rabies

দেবরা ব্লকে জলাতঙ্ক, রাতেও ভিড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

জেলা

জলাতঙ্কের বিপদে পুরো গ্রাম। সকাল থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভিড়। ছিলো না তার ভ্যাকসিন। যদিও শনিবার রাতে ভ্যাকসিন নিয়ে আসা হয়, তাতেও মিলেনি সবার টিকা। তৃণমূল নেতা গ্রামে নিজের ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে অসুস্থ গরুর কাচা দুধে চিড়ের প্রসাদ বিতরণ করায় এমন বিপদের আশঙ্কায় পুরো গ্রাম। রাত ভোর লাইন দিয়ে তিন দিন লাগলো সবার ভ্যাকসিন পেতে। আরও দুটো ডোজ নিতে হবে তার জন্য অপেক্ষায় গ্রামের মানুষ।
এমন ঘটনা ডেবরা ব্লকের পশং গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার পাঁচগেড়্যা গ্রামে। ঐ গ্রামেরই সুদর্শন খামরুই, তৃষা মাইতি, ভবানী সিং সহ বহু মানুষ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, গ্রামের  তৃণমূল নেতা হৃষিকেশ মাইতি নিজেকে জাহির করতে ও নেতাগিরিতে এমন বিপদে পুরো গ্রাম। ওদের একটা গাই গরু হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। জল খাওয়া ভুলে গিয়েছিলো। মুখ থেকে লালা রসের গরল গড়িয়ে পড়া সহ নানান উপস্বর্গ থাকাকালিন গত শুক্রবার পূর্ণিমা তিথিতে গ্রামের হরি মন্দিরে  সেই গরুর দুধ দিয়ে  ৫ কিলো ছিড়ের প্রসাদ বানিয়ে বিতরণ করে। সঙ্গে ছিল সুজির পায়েসও। কুসংস্কার ধর্মান্ধতায় পাঁচ জনকে বাড়ীর গরুর দুধ খাওয়ালে নাকি গাভি সুস্থ হয়ে উঠবে এমন কারনে এই প্রসাদ বিলি করা হয় বলে জানান গ্রামের মানুষের ।
আর ঠিক পরের দিন শনিবার সকালে সেই গাভির মৃত্যু হয়। ভেটেনারি সার্জেন্ট তা দেখে বলেন জলাতঙ্ক কারনে এই গাভির মৃত্যু হয়েছে। কাচা দুধের ছিড়ের  সাথে ফলমূল মেশানো প্রসাদ  গ্রামের শিশু থেকে বয়স্ক তিনশত অধিক মানুষ খায়। ঐ গড়িয়ে পড়া গরল গরুর লেজের মাধ্যমে সারা শরীর ছড়িয়ে থাকলে, কোনো ক্রমে দুধের সাথে ছিটেফোঁটা মিশে গেলে জলাতঙ্কের বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। সেই কারনেই শনিবার সকাল থেকেই পশং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মানুষের ভীড়। কিন্তু জলাতঙ্কের কোনো ভ্যাকসিন  ছিলো না। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি সেই টীকা। শনিবার রাত সাড়ে আটটার সময় পশং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেই ভ্যাকসিন এসে পৌঁছায়। তাতে লাইন দিয়ে মানুষ টিকা নেন। কিন্তু তাতেও সবার ঠিকা পাওয়া যায়নি অপ্রতুল থাকায়। রবিবারও শুরু হয় শিশু  থেকে বয়ষ্ক মিলিয়ে ২২২ জনকে  টিকা দেওয়া হলেও বাকি থেকে যায় আরো একশ জনের গায়ে। আজও সেই টীকা দেওয়া হয় ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
প্রতি জনকে তিনটি ডোজের টীকা নিতে হবে এমনই নির্দেশ স্বাস্থ্য কর্মীদের । বাকি দুটো ডোজের ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় পুরো গ্রাম।
পাশাপাশি আরও  জানা যায় পথ চলতি বহু মানুষকেও পাতায় করে প্রসাদ  বিতরণ করা হয়েছে। সেই সব মানুষের কাছে খবর না পৌঁছালে বড় ধরনের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা। ঐ ব্যাক্তিদের মুখের লালারস বা এ্যাঁটো খাবার থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।  ঘটনাস্থলে যায় সিপিআইএম  জেলা নেতা প্রানকৃষ্ণ মন্ডল, সুমিত অধিকারী সহ বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা।  তারা বলেন, একজন যেন টীকা করণ থেকে বাদ না যায়। সেই প্রচার পোষ্টার সহকারে গঞ্জে গঞ্জে প্রচারের দায়িত্ব পালন করছেন বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা।

Comments :0

Login to leave a comment