আততায়ীরা কিভাবে জানলো হেপাজতে বন্দি আতিক এবং আশরাফ আহমেদের গতিবিধি? উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। ১৫ এপ্রিল এলাহাবাদে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে দুই বন্দিকে গুলি করে হত্যা করা হয় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে।
শুক্রবার বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট এবং দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ আরও একগুচ্ছ প্রশ্নের ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকারের কাছে। আইনজীবী উমেশ পাল হত্যায় অভিযুক্ত আর যারা পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত বলে দেখানো হয়েছে, তাদের ঘটনাগুলিরও তদন্ত পদ্ধতি জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
১৫ এপ্রিল রাতে এলাহাবাদ, অধুনা প্রয়াগরাজের হাসপাতালের সামনে কুখ্যাত দুষ্কৃতী আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরফ আহমেদকে গুলি করে মারে তিন আততায়ী। কড়া পুলিশ বেষ্টনী তো ছিলই, এমনকি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা ছিল চারদিকে। কিন্তু হেপাজত থেকে দুই মারাত্মক বন্দিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার সরকারি যুক্তি নিয়েই সন্দেহ রয়েছে বিভিন্ন মহলে।
আদালত এদিন প্রশ্ন তুলেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেওয়া হলে দুই বন্দিকে অ্যাম্বুল্যান্সের বদলে হাঁটিয়ে কেন নেওয়া হয়েছিল। বিধি অনুযায়ী হেপাজতে নেওয়ার আগে বা শুনানি থাকলে আদালতে নেওয়র আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হওয়ার কথা। এই দুই বন্দির ক্ষেত্রে তা ছিল না। সেক্ষেত্রে কারও স্বাস্থ্যের সমস্যা হলে পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু দুই অভিযুক্তের আইনজীবী জানিয়েছেন যে আতিক বা আশরফ শারীরিক সমস্যার কথা বলেননি।
আইনজীবী উমেশ পাল ছিলেন বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। রাজু পাল হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ছিল আতিক আহমেদ। খুন, জমি হাতানোর মতো প্রায় একশোটি গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত আতিক রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন। উমেশ পাল হত্যায় অভিযুক্ত আতিকের এক ছেলে আসাদ গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান। পুলিশ বলেছে, আসাদ পালাতে যাচ্ছিল। সে সময় এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে। এমন সব বক্তব্যের ভিত্তিতে তদন্ত প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আসীন হওয়ার পর থেকে প্রকাশ্যে এনকাউন্টার হত্যার পক্ষে সওয়াল করেছেন। উত্তর প্রদেশে হেপাজতে মৃত্যুর সংখ্যাও অন্য রাজ্যের তুলনায় উদ্বেগজনক হওয়ায় মানবাধিকার কমিশন চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু হেপাজত হত্যাকে রাজনৈতিক প্রচারে সামনে রেখে কড়া অপরাধ দমনের প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। সেই সঙ্গে অপরাধের জন্য দায়ী করা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। উত্তর প্রদেশে যদিও জনসাধারণের সুরক্ষার প্রশ্ন রক্ষিত হচ্ছে না। কলেজছাত্রী থেকে মহিলাদের খুন-হুমকির অভিযোগ বহু।
Comments :0