গল্প | মুক্তধারা
বৈকল্য
অমল কর
তছনছ, হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে। স্বপ্নহীন জীবনহীন গানহীন সুরহীন তালহীন বিষণ্ণ। উত্তাল হয়ে ওঠা নদী যেন আঘাতে আঘাতে তির আছড়ায় নিষ্ফল।
স্বপ্নের ভাঙা সাঁকো বিষাদের তপ্ত অশ্রু অপমানের ফণা কুরে কুরে খুবলে নেয় কলিজা। পড়ে আছি অসহায় পাণ্ডববর্জিত নির্জন ব্রেকফেল মোটরগাড়ি।
তমালীকে বাঁধনে বাঁধতে উজাড় জীবন। আমাকে চোখ চেয়ে দেখেছিল সে, আমিও আকচাআকচি তাকে। আশকারার হাতছানি যখনতখন , এখন সে কেবল ডুবকি মারে,কাছে এলে তরঙ্গ খেলে সে।মরা ছাগলের মতো ফেলে রাখে সে উদাস।
বালকবেলায় খুব বাঁশি বাজাতাম। করুণ সুরে এখন বিষাদ বাজাই বাঁশির ফেরিওয়ালা। প্রতিদিন বাঁশি
নিয়ে তমালীর বাড়ির দরজায় বাউরা আমি লক্কা পায়রার মতো চক্কর খাই তিন-চারবার। সকাল বিকেল হয়ে যায়।পাষাণ গলে তো তমালী টলে না। বিকেল নিভে আসে আঁধার গিলে।
উদাসী বাঁশির দমকে ঠমকে ঠমকে তমালীর পাশের বাড়ির নাম -না -জানা অষ্টাদশী মগ্নতায় মুগ্ধতায়
সাত রং। সময়ের স্বরলিপি জীবনের দাড়ি-কমা নিয়ে আছড়ে পড়ে। যাকে আমি চাই,তাতে নেই ঠাঁই। এই অষ্টাদশী আমাকে বাজায়,গাঁথতে চায়। আকাশ চেয়ে নদী! আঘাটে ভিড়বে ডিঙি !
পিঞ্জরের দরজা খুলে দেব? পৃথিবী বলে দাও আমাকে। পাতা উড়ছে এলোমেলো। আমার দুদিকেই সমান দাহ। ভালোবাসা মরে যাবে, নাকি অষ্টাদশীর দাবি প্রতিষ্ঠা পাবে!
বাজো বাঁশি বাজো একসঙ্গে জলতরঙ্গ। হরিৎ আনন্দে উপচে পড়বে কলশি!
Comments :0