Bhima Koregaon Case

ভীমা কোরেগাঁও মামলায় জামিন সোমা সেনের

জাতীয়

সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেলেন সমাজকর্মী সোমা সেন। ভীমা কোরেগাঁওয়ে হিংসার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান সোমা সেনকে। ভীমা কোরেগাঁওয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে  ২০১৮ সালের ৬ জুন পুলিশ সোমা সেন সহ সমাজকর্মী মহেশ রাউত, আইনজীবী সুরেন্দ্র গাডলিং, দলিত সমাজকর্মী সুধীর ধাওয়ালে, রোনা উইলসনকে গ্রেপ্তার করে মাওবাদী যোগ সূত্রের তকমা দিয়ে। পুনে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করে। তারপর ধৃত অধ্যাপক সোমা সেনকে নাগপুরের বিশ্ববিদ্যালয় সাসপেন্ড করে। সোমা সেনের স্বামী তুষারকান্তি ভট্টাচার্যকে ২০১০সালে মাওবাদী যোগসূত্রের কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সোমা সেনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জের বেঞ্চ সোমা সেনকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এদিন আদালত যে শর্ত অধ্যাপক সোমা সেনকে দিয়েছে তা হল তাঁকে সবসময় তাঁর ফোনের জিপিএস কুলে রাখতে হবে। ফোন নম্বর ও ঠিকানা জানিয়ে রাখতে হবে পুলিশকে। সেই সঙ্গে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। মহারাষ্ট্রের বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। এই মামলায় প্রথম মুক্তি পেয়েছেন ভারাভারা রাও।
২০২২ সালের ১০ আগস্ট ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত ৮২ বছরের কবি তথা সমাজকর্মী ভারভারা রাওয়ের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৮-র ১ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁওয়ে হিংসাত্মক ঘটনার জন্য দায়ী করে মহারাষ্ট্রের তদানীন্তন বিজেপি সরকারের পুলিশ প্রথমে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। পুনে, মুম্বাই, নাগপুর এবং দিল্লিতে একসঙ্গে তল্লাশি চালিয়ে আটক করা হয় দলিত আন্দোলনের বিশিষ্ট কর্মী সুধীর ধাওয়ালে, আইনজীবী সুরেন্দ্র গাদলিঙ, সমাজকর্মী মহেশ রাউথ, অধ্যাপিকা সোমা সেন, সমাজকর্মী রোনা উইলসনকে। পরে, এই ঘটনার সূত্রেই ‘মাওবাদী যোগাযোগ’, এমনকি ‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র’ অভিযোগে গ্রেপ্তার হন একের পর এক বুদ্ধিজীবী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী গৌতম নাভলাখা, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হানি বাবু, অধ্যাপক আনন্দ তেলতুম্বদে, সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ, কবি ভারভারা রাও, সমাজকর্মী ভের্নন গনজালভেজ, অরুণ ফেরেইরা, ভীমা কোরেগাঁও শৌর্য দীন প্রেরণা অভিযানের কর্মী জ্যোতি জগতপ, সাগর গোরখে, রমেশ গাইচোর। এই মামলাতেই মাঝরাতে রাঁচির বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় বৃদ্ধ স্ট্যান স্বামীকে। যিনি জীবনে কখনও ভীমা কোরেগাঁওয়েই যাননি। জেসুইট এই ধর্মপ্রচারক তাঁকে গ্রেপ্তারের আগের দিনই এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, তাঁকে জোর করে মুম্বাই নিয়ে যাবার চেষ্টা হচ্ছে। করোনার প্রথম প্রবাহের মধ্যেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলবন্দি করা হয়। তাঁকেও মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে আটক করা হয়। মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার পরিবর্তন হবার পরে কেন্দ্র এই মামলা দিয়ে দেয় এনআইকে-কে। তারপরে গ্রেপ্তারি আরও বেড়ে যায়। এখনও পর্যন্ত ‘চার্জশিট’ দেওয়া হয়েছে ৮ জনের বিরুদ্ধে। বাকিদের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা দায়ের করেছে এনআইএ। অভিযুক্তদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারা দেওয়া হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment