প্রবীর দাস-সন্দেশখালি
উত্তম সর্দারের পর শনিবার সন্দেশখালিকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন শিবপ্রসাদ হাজরা। এই খবরে আনন্দে মেতে উঠলেন সন্দেশখালির মহিলারা। তাঁরা বলেন, শিবু হাজরা গ্রেপ্তার হওয়ায় আমরা খুব খুশি। কেবল মহিলা নয়, স্থানীয় বাসিন্দারা সকলেই খুশি। তাই সন্দেশখালির ত্রিমনী বাজার আবার কোথাও চলছে বিনামূল্যে চা খাওয়ানো আবার কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণ।
জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা গ্রেপ্তার হওয়ায় কিছুটা হলেও আতঙ্ক কাটলো গ্রামে। নতুন করে স্বাধীনতা ফিরে পেলেন বলে জানাচ্ছেন সন্দেশখালির মহিলারা। কেউ বলছেন, অনেকটা সাহস পেলাম। আবার কেউ বলছেন, এবার নতুন করে জীবন ফিরে পাব। নতুন করে স্বাধীনতা পাব আশা করছি। তবে আশঙ্কা, এখনও শেষ শাহজাহান গ্রেফতার না হওয়ায়। শিবু হাজরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এবার তাঁর কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা। তবে শিবু হাজরা গ্রেপ্তার হলেও এখনই আন্দোলন থামছে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। তাঁদের কথায়, শিবু হাজরার মাথায় রয়েছে শেখ শাহজাহান। শেখ শাহজাহান গ্রেপ্তার হলেই আন্দোলন থামবে। শাহজাহান গ্রেপ্তার হলেই আতঙ্কের পরিবেশ কাটবে এবং এলাকাবাসী নির্ভয়ে বাঁচতে পারবে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।
শেখ শাহজাহান এবং তাঁর দুই সাগরেদ উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরার গ্রেপ্তারির দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল হয়ে ওঠে সন্দেশখালি এলাকা। রাস্তায় নেমে আসে গ্রামের মহিলারাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তারপর অশান্ত পরিবেশের মধ্যে অবশেষে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার হয় উত্তম সর্দার। তারপরেও আন্দোলন থামেনি। শিবু হাজরার বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজকর্ম-সহ গ্রামের মহিলারা যৌন নির্যাতন করার অভিযোগও তোলে। শিবুকে এতদিন না ধরে উলটে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গত রবিবারই গ্রেপ্তার করে সিপিআই(এম) নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিবু হাজরার লোকজন গ্রামের মহিলাদের বিকালের পর পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে যেত। তাঁদের উপর যৌন নির্যাতন চলত। যার প্রেক্ষিতে জমি দখল, মানুষের উপর অত্যাচার-সহ অন্যান্য ধারার পাশাপাশি শিবুর বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করে পুলিশ। এরপর শনিবার সন্ধ্যাতেই পুলিশ ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে শিবপ্রসাদ হাজরাকে গ্রেপ্তার করে।
Comments :0