UTSAVE ANUVABE / ANAYAKATHA / SOURAV DUTTA / BHAIFOTA-BONFOTA / MUKTADHARA / 23 OCTOBER 2025 / 3rd YEAR

উৎসবে অনুভবে / অন্যকথা / সৌরভ দত্ত / মনস্বীতায় ভাইফোঁটার পাশাপাশি বেড়ে উঠুক বোনফোঁটার চারাগাছ / মুক্তধারা / ২৩ অক্টোবর ২০২৫, বর্ষ ৩

সাহিত্যের পাতা

UTSAVE ANUVABE  ANAYAKATHA  SOURAV DUTTA  BHAIFOTA-BONFOTA  MUKTADHARA  23 OCTOBER 2025  3rd YEAR

উৎসবে অনুভবে 

মুক্তধারা / অন্যকথা

মনস্বীতায় ভাইফোঁটার পাশাপাশি বেড়ে উঠুক বোনফোঁটার চারাগাছ

সৌরভ দত্ত  

২৩ অক্টোবর ২০২৫, বর্ষ ৩
 

{ad

গার্গী,অপলা, লোপামুদ্রা,বিশ্ববরার কথা আমরা জানি বিদূষী নারী হিসেবে।নারী চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ রাখা সেকালের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রচলিত ছিল।ঋক্-বৈদিক যুগে নারীর অবনমন ও অবদমনকে তুলে ধরা হয়েছে।যা চাণক্যের শ্লোকের মধ্যে ও লক্ষ্য করা যায়।জ্যোর্তিবিদ নারী ক্ষণার বচন আমরা জানি বহুল প্রচলিত।যে ছড়াগুলো মূলত কৃষিকাজ ভিত্তিক।
সত্য ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য ক্ষণার জিভ কেটে নেওয়া হয়। অর্থাৎ নারীর ক্ষমতায়নকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি কোনকালে।সেকালের নারীরা সম্মানজনক অবস্থানে ছিলেন না।সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখনীতে স্তরে স্তরে উন্মোচিত হয় প্রাচীন ভারতে নারীর ক্রমাগত অবদমনের ইতিবৃত্ত, তুলে ধরে নারীর আস্টেস্পৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা শৃঙ্খলকে।বর্তমানেও খুব একটা নেই বললেই চলে। সেজন্যই অতীতের সতীদাহ, সেজন্যই বিধবা বিবাহ রদ এর মতো কুপ্রথা চালু ছিল। মাইকেল মধুসূদন যতই তাঁর বীরাঙ্গনা কাব্যে পৌরাণিক চরিত্রের সন্নিবেশে নারীদের স্বাধীকারের কথা বলুন না কেন তা বাস্তবে‌ প্রতিফলিত হয়নি।নারীকে ঘিরে নানা সংস্কার-কুসংস্কারের বেড়াজাল। পৌরাণিক মতে ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার অনুষঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের নরকাসুর বধ ও সুভদ্রার জয়টীকা পরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ আছে।যম-যমী-যমুনার প্রসঙ্গে আসছি না অদ্ভুত রাষ্ট্রতান্ত্রিক কাঠামো ও ভ্রান্ত দর্শনের জন্য বোনফোঁটা নয় ভাইফোঁটা হল। কন্যা সন্তান জন্মালে পরিবারে অনেক অসন্তোষ।আজও শবরীমালার মতো ঘটনা ঘটে।ইসলামিক আচার বিচারে আষ্টেপৃষ্ঠে শৃঙ্খলিত মেয়েরা আজো হিজাববন্দি বা পর্দানশীন।আজো তিলোত্তমার ঘটনা ঘটে । কন্যাভ্রূণ হত্যা,নারী নির্যাতন, ধর্ষণ– মনুষ্যত্বের অবলোপনে কলঙ্কিত সমাজ ও দেশকাল।নারীকে কোনদিন স্বাধীনভাবে নিজের কথা বলতে দেয়নি সমাজ।টুঁটি চেপে ধরেছে সত্যের। কিন্তু দেবীপক্ষে অসুরদলনী হয়ে ওঠে নারী। দশমহাবিদ্যায় শক্তিরূপিণী কালীর আরাধনা চলে। তবুও নারী সমাজ থেকে যায় সেই তিমিরেই। বর্তমান মহিলা প্রশাসক ক্ষমতায় আসীন থাকা সত্ত্বেও বাংলার নারী নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।নারী স্বাধীনতার কন্ঠরোধ। সীমাহীন অত্যাচার।আজও তামান্না বিচার পায়নি। বর্তমান সংস্কৃতিতে‌ নবমিলেনিয়েয়ামের আলোয় বদলে গেছে‌ ভাইফোঁটার চিত্রকল্প।নারীর সম্মান রক্ষিত হচ্ছে কি!কেন শুধু ভাইফোঁটা হবে? বোনেরা পাবে স্বাধীকারের আস্বাদ। বাঙালি জনজীবনে ভাইবোনের অটুট বন্ধনের উৎসব না হয়ে নৈতিক মূল্যবোধের অবনবনে ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া অনেকটাই ক্লিশে ও খাওয়া দাওয়ার উৎসবে পরিণত হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment