RUSSIA PRIGOZHIN

ভাড়াটে সেনারা ছেড়েছে রস্তভ, প্রিগোজিন কি বেলারুশে?

আন্তর্জাতিক

RUSSIA PRIGOZHIN

ভোরোনেজ ছেড়ে গিয়েছে ভাড়াটে সেনারা। নাগরিকদের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা এখনও রয়েছে। ধীরে ধীরে তা তুলে নেওয়া হবে, জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসক আলেকজান্ডার গুসেভ। 

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, বেসরকারি বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন বেলারুশে পৌঁছেছেন কিনা তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। তবে প্রিগোজিন এবং তাঁর বেসরকারি সেনা সংস্থা ওয়াগনারের কারও বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। 

শনিবার আচমকাই প্রিগোজিনের নেতৃত্বে মাথাচাড়া দেয় সশস্ত্র অভ্যুত্থান। দক্ষিণ রাশিয়ায় ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রস্তভ অন ডন শহরে রাষ্ট্রীয় সামরিক ঘাঁটির দখল নেয় প্রিগোজিনের বাহিনী। রাজধানী মস্কো অভিমুখে অভিযানের ঘোষণাও করেন। দাবি জানাতে থাকেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্তর বদলাতে হবে। প্রিগোজিনের অভিযোগ, রাশিয়ার সেনা তাঁর ভাড়াটে বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে 

শনিবারই ভারতীয় সময়ে গভীর রাতে প্রিগোজিনের সঙ্গে সমঝোতা হয় রাশিয়ার। মধ্যস্থতা করেন বেলারুশের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, প্রিগোজিনের সশস্ত্র বাহিনী তখন মস্কো থেকে চার ঘন্টা দূরত্বে। চুক্তিতে ঠিক হয়, বেলারুশে নির্বাসনে যাবেন প্রিগোজিন। মস্কো তাঁর এবং বাহিনীর বিরুদ্ধে অপরাধের কোনও অভিযোগ দায়ের করবে না। ভাড়াটে সেনাদের বিচারব্যবস্থার মুখে ফেলা হবে না। 

লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে সমঝোতার আগে যদিও চেচেন বাহিনীকে পাঠানো হয় ওয়াগনারের মোকাবিলায়। জানা গিয়েছে আর কোনও সংঘাত হয়নি। তবে রস্তভের স্থানীয় প্রশাসন জানাচ্ছে প্রিগোজিনের বাহিনী প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার রাস্তার ক্ষতি করে দিয়েছে। ট্যাঙ্ক এবং ভারি সেনা যান নিয়ে সোজা শহরে ঢুকে পড়েছিল ভাড়াটে বাহিনী। রাস্তা সারাতে অন্তত দু’দিন সময় লাগবে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস’র প্রতিবেদনে দাবি, আমেরিকারত গোয়েন্দাদের কাছে সম্ভাব্য সশস্ত্র অভ্যুত্থানের খবর ছিল। তবে মার্কিন প্রশাসন তা নিয়ে মুখ খোলেনি। রাশিয়ায় অভ্যুত্থানের দায় ঘাড়ে চাপার আশঙ্কা ছিল বলে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইউক্রেন সংঘাতের আবহে ভ্লাদিমির পুতনকে সহায়তা করার কোনও ইচ্ছে জো বাইডেন প্রশাসনের ছিল না। 

পরিস্থিতি যে পশ্চিমের শক্তিগুলির কাছে উৎসাহজনক তা গোপন রাখেননি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভোলোদমির জেলেনস্কি। পুতিনের উদ্দেশ্যে পরপর মন্তব্যে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘‘ক্রেমলিনের বাসিন্দা নিশ্চয় ভয় পেয়েছেন। তিনি কোথাও হয়ত লুকিয়ে আছেন।’’ 

আমেরিকার ‘ইনস্টিটিউট অব স্টাডি অব ওয়ার’-র বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে একই মর্মে সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাড়াটে সেনা বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিনকে সবাই জানত পুতিনের অত্যন্ত কাছের লোক বলে। সেই প্রিগোজিন সশস্ত্র বিদ্রোহ করল, তাকে দমানোর বদলে সমঝোতা করে রেহাই পেতে হলো পুতিনকে। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির পক্ষে এই পরিস্থিতি অবশ্যই অমর্যাদাকর।’’ 

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে যদিও বলা হচ্ছে যে পুতিন ইউক্রেন সংঘাতের মাঝে দেশের মধ্যে নতুন কোনও বিপদকে মাথাচাড়া দিতে নারাজ। অভ্যুত্থানের ডাক যত দ্রুত মিটিয়ে ফেলা যায় চাইছিলেন তিনি। লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতার আগেই যদিও পুতিন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলেন। সেই তকমা ফেরত নেয়নি ক্রেমলিন।    

Comments :0

Login to leave a comment