অনিন্দ্য হাজরা ও প্রতীম দে
মানুষকে বাঁচাতে হবে। ঐক্য গড়তে হবে দেশ ও সমাজকে বাচাতে। তাই চোর তাড়াতে হবে। সেই চোর ঘাসফুল হোক আর পদ্মফুল, যে ঝান্ডা নিয়েই আসুক, হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে তাদের তাড়াতে হবে। পুরুষ-মহিলা, উত্তর-দক্ষিণ নির্বিশেষে একজোটে সেই লড়াই লড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে সমাবেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন সিপিআি(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এখানেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির দপ্তর। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এবং সিবিআই রাজ্যে দুর্নীতির তদন্ত করছে না। মূল অপরাধীদের ধরার দাবিতেই এদিন সিপিআই(এম)’র ডাকে হয়েছে ‘সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান’।
সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা মানুষের দাবি জানাতে এখানে এসেছি। আমরা ইডি সিবিআইকে কাজে দ্রুততার দাবি জানাতে এসেছি, আর রাজ্যর পুলিশ আমাদের আটকাচ্ছে। তৃণমূল আর বিজেপি’র বোঝাপড়ায় সাঁকোর ভূমিকায় রয়েছে আরএসএস।’’
সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র, রামচন্দ্র ডোম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীও।
সেলিম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আজ এখানে প্রতিবাদ জানানো হলো। তাতেও কাজ না হলে এখানে চার্জ শিট নিয়ে আসব।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘শুধু স্কুল নয়, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনেও চুরি হয়েছে। আর বিজেপি বলছে স্কুল আর মাদ্রাসা আলাদা। উত্তরবঙ্গ আলাদা, দক্ষিণবঙ্গ আলাদা। মাদ্রাসা দুর্নীতিতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’র নেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলা অবধি ডুবে রয়েছে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘আমাদের অভিযান এখানে শেষ নয়। রাজনৈতিক স্বার্থে এই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা যাবে না। ইডি, সিবিআই ছাড়লেও মানুষ এই চোরদের ছাড়বে না। তৃণমূল ভয় পেয়েছে।’’
একশো দিনের কাজ আবাস যোজনা প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, ‘‘তৃণমূল লুট করেছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা। আর গ্রামের মানুষের টাকা আটকাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কার শাস্তি কাকে দেওয়া হচ্ছে?’’
তিনি বলেন, ‘‘ইউপিএ-১ সরকারের সময় এই প্রকল্পগুলি আনা হয়েছিল। বামপন্থীরা এগুলি দাবিতে সরব ছিল। ওই সরকার বামপন্থীদের সমর্থনে চলত। একশো দিনের কাজের সেই আইনে বলা আছে, টাকা বন্ধের দুই ধাপ আগে ব্যবস্থা নিতে হবে। তদন্ত করতে হবে। অথচ কেন্দ্র ২০১৪ থেকে একটা এফআইআর-ও করেনি। একটিও তদন্তের নির্দেশ দেয়নি। আসলে বিজেপি চায় না এই প্রকল্পগুলি চালু থাক। তাই তদন্ত না করে টাকা বন্ধ করা হচ্ছে। আর অভিষেকের আন্দোলনকে হাওয়া দেওয়া হচ্ছে।’’
তৃণমূল ২ এবং ৩ অক্টোবর দিল্লিতে প্রকল্পের বকেয়ার দাবিতে কর্মসূচি নেয়। কেন্দ্রের দিল্লি পুলিশ আবার জমায়েত হটিয়ে দেয়। এদিনও রাজভবনে বিক্ষোভ দেখায়। দলের নেতা অভিষেক ব্যানার্জি যদিও মেনে নিয়েছেন যে দুর্নীতি হয়েছে।
সেলিম বলেন, ‘‘তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপর হামলার অজুহাতে সিপিআই(এম)’র দেড় হাজারের বেশি দপ্তরে হামলা হয়েছিল। আর দিল্লিতে এতকিছুর পরেও বিজেপি’র একটিও অফিসে ঢিল পড়েছে?’’
Comments :0