AIPSO ISRAEL-PALESTINE CONFLICT

গাজায় রক্তপাত বন্ধের দাবিতে মিছিল করল এআইপিএসও

রাজ্য আন্তর্জাতিক

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news AIPSO

পশ্চিম এশিয়ায় রক্তপাত বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার পথে নামলেন কলকাতার মানুষ। এদিন সারা ভারত শান্তি ও সংহতি সংস্থা বা এআইপিএসও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে ধর্মতলা লেনিন মূর্তির সামনে থেকে এন্টালি মার্কেট অবধি মিছিল হয়। মিছিল শেষে এন্টালি মার্কেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সভা হয়। 

শান্তি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ দাবি জানিয়েছেন, শনিবার থেকে শুরু হওয়া হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তারজন্য প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির উদ্যোগ নিতে। একইসঙ্গে শান্তি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত ইজরায়েলের বর্ণবিদ্বেষী জায়নবাদী রাজনীতির জন্য। তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশিত দুই-রাষ্ট্র নীতি অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। 

এন্টালি মার্কেটের সামনে বক্তব্য রাখেন এআইপিএসও’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কো—অর্ডিনেটর অঞ্জন বেরা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রসংঘের ১৯৪৭ সালের প্ল্যানে দুই রাষ্ট্র নীতির কথা বলা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, প্যালেস্তাইনের ভৌগলিক সীমার মধ্যে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন দুটি পৃথক সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা হবে। সেই রাষ্ট্র দুটির মাপও ঠিক করে দেয় রাষ্ট্রসংঘ। কিন্তু ইজরায়েল সেই ফর্মুলা মেনে নেওয়া দূরে থাক, প্যালেস্তাইনের জন্য বরাদ্দ এলাকার ৮০ শতাংশ দখল করেছে। একইসঙ্গে বর্ণবিদ্বেষী জায়নবাদী আদর্শকে মান্যতা দিয়ে বলা হচ্ছে, ইজরায়েল কেবলমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র হবে। এই বোঝাপড়া প্যালেস্তাইনের বহুত্ববাদী সমাজ ব্যবস্থার বিরোধী। 

অঞ্জন বেরা আরও বলেছেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের  রাজনীতির সঙ্গে জায়নবাদী বিদ্বেষের  মিল খুঁজে পাচ্ছে। তাই জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে, নিজেদের রাজনীতির স্বার্থে ইজরায়েলপন্থী পররাষ্ট্র নীতি নেওয়া হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী বলছেন, ইজরায়েল আক্রান্ত। হামাসের শক্তির সঙ্গে পরমাণবিক শক্তিধর ইজরায়েলের কোনও তুলনা চলে? আসলে একটি দুষ্টরাষ্ট্র, যাঁরা কোনও আন্তর্জাতিক আইন, চুক্তি মানে না, তাঁরা সন্ত্রাস মোকাবিলার অজুহাতে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। আর ভারত সরকার তাকে সমর্থন করছে। এটা মেনে নেওয়া যায়না। জনমত গঠন করে সরকারকে পিছু হঠাতে হবে। 

সভায় এআইপিএসও’র সর্বভারতীয় নেতা রবীন দেব বলেন, গাজায় নজিরবিহীন অবরোধ চলছে। ৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর আসছে। ৮ হাজার ভারতীয় সংঘর্ষে আটকে পড়েছেন। তাঁদের ফেরানোর উদ্যোগ নিতে হবে কেন্দ্রকে। 

রবীন দেব আরও বলেছেন, ইজরায়েলের নেতানিয়াহু সরকার বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিলেন। সারা ইজরায়েল জুড়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। নরেন্দ্র মোদী সেই পথেই হাঁটছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রক্রিয়া থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফা ভাবে জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করে দিয়েছিল। আসলে এই ট্রাম্প, নেতানিয়াহু, মোদী- সবাই একই ভাবনার শরিক। একে অন্যের দেখানো পথে হাঁটতে চাইছে। অপূর্ণ কাজ শেষ করতে চাইছে। 

রবীন দেব আরও বলেছেন, একসময় ভারতের বিদেশনীতির মূলে ছিল বর্ণবিদ্বেষী শক্তির বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই। তারফলে বর্ণবাদী ইজরায়েল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অস্তিত্বকে কূটনৈতিক ভাবে অস্বীকার করেছিল ভারত। বর্তমানে সেই ইজরায়েলের থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র কিনছে ভারত। আর লাভের টাকায় প্যালেস্তিনীয়দের উপর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। এদেশে নিউজক্লিককে নিয়ে ভুল প্রচার চালানো হয়েছে। একই কায়দায় হামাসকে নিয়ে মিথ্যা প্রচার করেছে ইজরায়েল। 

এদিন সভায় প্যালেস্তাইনের কবি রাফিফ জিয়াদা’ রচিত আরবি কবিতার বাংলা তর্জমা পাঠ করেন কবি মন্দাক্রান্তা সেন।  

 গোটা কর্মসূচি পরিচালনা করেন অশোকনাথ বসু। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রবীর দেব, প্রবীর ব্যানার্জী। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিনায়ক ভট্টাচার্য, কুণাল বাগচী, কল্যাণ ব্যানার্জি, অশোক গুহ প্রমুখ।  

Comments :0

Login to leave a comment