নাগোর্নো-কারাবাখ সংঘর্ষে জয় ঘোষণা করল আজারবাইজান। আজারবাইজান জানিয়েছে, নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের বিদ্রোহীরা পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। তাই সামরিক অভিযানে ইতি টানা হল। আলোচনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। ১ দিনের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ২০০’র বেশি সাধারণ মানুষ। এই প্রসঙ্গে আজারবাইজানের ইলহাম আলিয়েভ জানিয়েছেন, ‘‘কারাবাখ অঞ্চলে সফল ভাবে উগ্রপন্থী কার্যকলাপের মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে। তারফলে আজারবাইজানের অখন্ডতা রক্ষা করা গিয়েছে।’’
দক্ষিণ ককেসাস পর্বতমালার কোলে এই নাগোর্নো কারাবাখ অঞ্চল অবস্থিত। আন্তর্জাতিক ভাবে এই অঞ্চল আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হলেও, প্রতিবেশি আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা এতদিন এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করত। ২০২০ এবং তারপর ২০২৩ সালে দুটি সামরিক অভিযান চালিয়ে এই অঞ্চলকে নিরঙ্কুশ ভাবে নিজেদের দখলে আনল আজারবাইজান।
আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট বিদ্রোহীদের দাবি, নাগোর্নো কারাবাখ আজারবাইজানের স্বীকৃত অংশ হলেও এই এলাকার সিংহভাগ মানুষ আর্মেনীয়। তাঁদের উপর অত্যাচার চালাত আজারবাইজানের সেনা। প্রসঙ্গত, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে অন্যান্য ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের মতোই জন্ম হয় আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের। এবং প্রথম থেকেই নাগোর্নো কারাবাখকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ।
নব্বই-এর দশকের গোড়ায় শুরু হয় প্রথম নগোর্নো কারাবাখ যুদ্ধ। প্রাণ হারান ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। ঘরছাড়ার সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। এই যুদ্ধে জয়লাভ করে আর্মেনিয়া এবং তাঁদের মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা। নাগোর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের মারফৎ চলে আসে আর্মেনিয়ার কাছে।
২০২০ সালে নতুন করে এই সংঘর্ষ মাথাচাড়া দেয়। তুরষ্কের মদতপুষ্ট আজারবাইজানের সামরিক শক্তির সামনে দাঁড়াতে পারেনি আর্মেনিয়ার সেনা। মাত্র ৪৪ দিনে শেষ হয় দ্বিতীয় কারাবাখ যুদ্ধ। বিতর্কিত এলাকার এক তৃতীয়াংশ দখলে নেয় আজারবাইজান সেনা। যুদ্ধে ৬৫০০’র বেশি মানুষ প্রাণ হারান। সেই প্রথম ব্যপক হারে ক্ষুদ্র আকারের ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে এর ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পায়।
চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। আজারবাইজানের দাবি ছিল, নাগোর্নো কারাবাখকে কেন্দ্র করে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে। সংঘর্ষ শুরুর একদিনের মধ্যেই পরাজয় স্বীকার করে নেয় আর্মেনীয় বিদ্রোহীরা। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর উদ্যোগে শুরু হয় শান্তি প্রক্রিয়া।
Comments :0