Students union election

ছাত্র ভোটের দাবিতে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা

রাজ্য

অবিলম্বে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইনকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা দায়ের হয়েছে। আবেদনকারী প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঋষভ সাহার হয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী ঋতঙ্কর দাস। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মামলাকারির আইনজীবী ঋতঙ্কর দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ছয় বছর রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি।তিন বছর আগে যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি এবং ডায়মন্ড হারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সিতে ভোট হয়েছিল এসএফআই জয়ী হয়। মামলাকারির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে যাতে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট হয়।’’ 


রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ইউনিয়ন ইলেকশন নয় নমিনেশন হবে। রাজ্য সরকারের পাশ করা কাউন্সিল আইনে একথা বলা হয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টের কথার সাথে যায়না. এই আইন বাতিল করার কথাও আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দুই বিষয়ের পাশাপাশি আমরা আরও একটা বিষয় আদালতের সামনে রেখেছি। তা হচ্ছে বহিরাগত বিষয়টি। পাস আউটরা ফেস্ট, পুজো করে এর কি হিসাব রয়েছে? শুধু যাদবপুর নয় রাজ্যের সব ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগতদের বার করতে হবে।’’ 
আইনজীবী ঋতঙ্করের কথায়, ‘‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ন ভাবে হয় তার জন্য প্রধান বিচারপতির ডিভিসন বেঞ্চে মামলাকারির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে যে প্রয়োজনে আদালতের পক্ষ থেকে একটি প্যানেল তৈরি করা হোক যাদের নজরদারিতে ছাত্র ভোট হবে।’’


‘‘পুজোর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হবে।’’ মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ থেকে একথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় শেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ২০১৭ সালে। সেই নির্বাচন প্রসঙ্গে এসএফআই বার বার দাবি করে এসেছে যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ গায়ের জোড়ে ভোট না করে বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে না দিয়ে ছাত্র সংসদ দখল করেছে।
দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্টা দিবসের সমাবেশের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘পুজোর পর আপনাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ন ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে। আমরা যেমন শান্তিপূর্ন ভাবে নির্বাচন করি আপনারাও তেমন ভাবে করবেন।’’ এখানে না থেমে মঞ্চে বসে থাকা দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘‘ছেলে মেয়েরা যাতে ভালো ভাবে ভোট করতে পারে সেইদিকটা দেখবে তোমরা। ওদের সাহায্য করবে।’’


২০১১ সালের আগে থেকেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় প্রান গিয়েছে এসএফআই কর্মীর। হাওড়ার আন্দুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাতে খুন হন এসএফআই কর্মী স্বপন কোলে। তারপর এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কলেজ ক্যাম্পাস গুলো। কোথাও বিবরোধী ছাত্র সংসদের সদস্যদের ওপর আক্রমণ তো কোথাও তাদের মনোনয়ন দিতে না দেওয়া। বিগত ১২ বছরে যেই দুইবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে তাতে বেলাগাম অশান্তির সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। 


এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রতিকুর রহমানের কথায়, ‘‘মমতা ব্যানার্জি গনতন্ত্রকে ভয় পায় তাই চায়না নির্বাচন হোক। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতাদের বলছে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাহায্য করার জন্য। কলেজের ভোটে পাড়ার নেতারা কি করবে? তার মানে তিনি চাইছেন পঞ্চায়ের নির্বাচনের মতো ভোট লুঠ করতে। তিনি বলছেন পুলিশ বিরোধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। আমরা বলতে চাই পুলিশ, ভাই, ভাইপোদের দিয়ে ক্যাম্পাসে এসএফআইকে রোখা যাবে না। এসএফআই তৈরি ক্যাম্পাস থেকে চোর তাড়াতে। আমারা চাই র্যারগিং এবং চোর মুক্ত ক্যাম্পাস।’’

Comments :0

Login to leave a comment