কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার দাবিতে কলকাতার রানী রাসমণি এভিনিউ’তে ৩দিনের ধর্ণা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার্সরা। বৃহস্পতিবার থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ফাইটার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। চলবে শনিবার অবধি।
সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার্সরা জানাচ্ছেন, কার্যত জীবন বাজি রেখে বিপর্যয় মোকাবিলায় সামিল হন তাঁরা। কিন্তু তার বদলে না রয়েছে সম্মানজনক ভাতা, না রয়েছে কাজের নিশ্চয়তা। অগ্নিকান্ড থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা। কিন্তু তার কোনও প্রতিদান মেলেনি রাজ্য সরকারের থেকে। বহু ক্ষেত্রে মাসে গড়ে ২-৩দিন কাজ মেলে তাঁদের। প্রশিক্ষণ থাকলেও বহু ক্ষেত্রে তাঁদের বদলে সরকারি চুক্তিভিত্তিক পদে শাসকদলের কর্মীদের নিয়োগ করা হয়।
সংগঠনের অন্যতম সংগঠক প্রসেনজিৎ বারিক বলেন, ‘‘আমাদের মূল দাবি, ৬০ বছর বয়স অবধি মাসে ৩০ দিন কাজের নিশ্চয়তা দিক সরকার। আমাদের প্রশিক্ষণ রয়েছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারকাজে সামিল হতে ভয় পাইনা। তারপরেও সরকার আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে।’’
সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার্সদের বক্তব্য, মহকুমা, জেলাস্তর থেকে শুরু করে নবান্ন- রাজ্য প্রশাসনের হেন কোনও স্তর নেই, যেখানে গিয়ে তাঁরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেননি। এর পাশাপাশি বিধানসভা, বিকাশভবন, শ্রমদপ্তর, উত্তরকন্যা সহ দপ্তরগুলির মুখ্য আধিকারিকদের সঙ্গেও দেখা করা হয়েছে। পুলিশি নিপীড়ন উপেক্ষা করেই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে আধিকারিকদের। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।
ভলান্টিয়ার্সদের ক্ষোভ, ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। মমতা ব্যানার্জি তাঁদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও কোনও কাজ হয়নি এখনও। এর পাশাপাশি মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু, সাবিনা ইয়াসমিন সহ রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তাঁরা। প্রতিক্ষেত্রে মৌখিক আশ্বাস মিললেও স্থায়ী কর্মসংস্থানের কোনও সুরাহা হয়নি।
আন্দোলনকারীদের তরফে সুফিয়া খাতুন, জয়গোপাল ভৌমিকরা বলছেন, রাজ্য সরকারের সামনে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে এর আগেও আন্দোলন করেছেন তাঁরা। বিকাশভবন অভিযান, দিবারাত্রি অবস্থান, বিক্ষোভ, এমনকি শেয়ালদহতে শীতের কনকনে ঠান্ডায় রাত্রিযাপন, রামলীলা ময়দানে অবস্থান, বিধানসভা অভিযান,উত্তর কন্যা অভিযান, এমনকি নবান্ন অভিযানও করেছেন তাঁরা। কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়ে উত্তরকন্যা অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টের চত্ত্বর থেকেও তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘসময় হেয়ারস্ট্রিট থানার লকআপে রাখা হয়েছিল আন্দোলনকারীদের।
Comments :0