স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বোড়াই চন্ডী গঙ্গার ঘাটে। চন্দননগরে বহু পর্যটক আসেন প্রবর্তক আশ্রমে। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামীরা থাকতেন এই আশ্রমে। একসময়ে অরবিন্দ ঘোষ নিজেও ছিলেন এখানে। তাঁর স্মৃতি সৌধও রয়েছে। ঋষি অরবিন্দের স্মৃতি সৌধের সামনেই রমরমিয়ে চলছে মদের আসর।
প্রবর্তক সেবা নিকেতনের সভাপতি নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় ধিক্কার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘১৮৯০ সালে ১২ ফ্রেব্রুবারি চন্দননগরে বোড়াইচন্ডী তলার ঘাট দিয়ে মহাগুরু শ্রী অরবিন্দ এখানে আসেন। সামনেই প্রবর্তক আশ্রম। সেখানে মতিলাল রায়ের কাছে থাকেন। প্রবর্তক আশ্রম বিপ্লবীদের পীঠস্থান ছিল। এবং ওই ঘাট দিয়েই পন্ডিচেরী যাত্রা করেন। সেই স্মৃতি সৌধ কাছেই মদ্যপান চলছে। এটা সত্যি লজ্জাজনক ব্যাপার। কেবল চন্দননগরবাসী নয়, আমাদের সকলকে এর লড়াই সংগ্রাম করতে হবে। চন্দননগরে বহু মানুষ এখানে আসেন। তার জন্য চিরতরে এসব বন্ধ হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
চন্দননগর পৌরনিগম মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিস ঝোলালেও নেশাচক্র ভ্রুক্ষেপ করছে না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মদের আসর, প্রশাসনের নাকের ডগায়। স্থানীয় মানুষ, বিদ্বজ্জনরা ক্ষুব্ধ। এই ঘাটে চড়ননগর শ্মশান ঘাটে রয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। জনসমাগম হয়। তবে মদের ঠেক উচ্ছেদ করা যায়নি। সৌধের সামনে মদ্যপান নিষিদ্ধ বলে লাগানো পোস্টারে পাঁচশো টাকা জরিমানার উল্লেখও আছে। নেশার চক্র যদিও সেসবের তোয়াক্কাই করছে না।
এলাকাবাসীরা বলছেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন হচ্ছে। চন্দননগরের গৌরবময় ঐতিহাসিক এলাকাকে কলুষিত করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার দেদার মদের লাইন্সের দিয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে। কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় অবৈধ মদের দোকান বাড়ছে। কাজ, রোজগার নেই, তাই মদে ভুলিয়ে রাখছে। তৃণমূল নেতাদের মদতে এসব হচ্ছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে।
চন্দননগর পৌর নিগমের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শ্রী অরবিন্দ স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথিকৃৎ। সেই স্মৃতি সৌধের সামনে এই রকম কাজ হোক আমরা কখনই চাই না। এর আগেও আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। পাশের শ্মশান ঘাট তাই কিছু লোক এখানে এসে অপকর্ম করে থাকে। অসৎ কিছু লোক এই সব কিছু করছে।’’ তাঁর দাবি, পৌরকর্মীদের দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বলছেন, ‘‘সেই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন যাতে দেখে সেই ব্যবস্থা করছি।’’
Comments :0