CPI(M)

সেচের আকাল জন্ম দিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকের, ক্ষোভ ঝাড়গ্রামে

রাজ্য জেলা

CPIM MD SALIM SANDESHKHALI VIOLENCE LEFT FRONT BIMAN BASU NIRAPADA SARDAR  BENGALI NEWS

প্রস্তাবিত ব্যারেজ না করে শুধুমাত্র সেতু তৈরি  করায় সুবর্ণরেখার তটভূমি আজ অনাবাদি জমিতে পরিনত হয়েছে সেচের অভাবে। রুটি রুজির সঙ্কটে  গত ১৩ বছরে সাতটি ব্লক নিয়ে গঠিত ঝাড়গ্রাম জেলায় ২৯ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক জন্ম নিয়েছে। সুবর্ণরেখা নদীতে ব্যারেজ ও ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ওডিশার বারিপদা পর্যন্ত রেল লাইন কার্যকর করার দাবিতে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী সোনামণি মুর্মূ টুডুকে জয়ী করার আহ্বান  জানিয়ে শনিবার হাতিবাড়ি মোড় থেকে গোপীবল্লভপুর বাজার পর্যন্ত লাল ঝান্ডার মিছিল ও প্রচার সভা হয়। 

প্রচার সভায় প্রার্থী সহ সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, রাজ্য কমিটির সদস্য পুলিন বিহারী বাস্কে ও ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার বক্তব্য রাখেন। ৩২ডিগ্রি তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে কয়েক শো আদিবাসী মানুষ প্রচারে সামিল হন। মহিলাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত ছিল।  

প্রচারে উঠে আসে, জঙ্গলমহল জুড়ে ২২ভাগ বনভূমি ধ্বংস করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। বিজেপির সাহায্য নিয়ে গড়ে ওঠা তৃণমূল ভাড়াটে  মাওবাদীদের দিয়ে খুনের রাজনীতি করে ক্ষমতায় এসেছিলো। এখন সেই পথে জমি হাঙ্গরের দল এসে বর্গাদার পাট্টাদারদের উচ্ছেদ করার চক্রান্ত চালাচ্ছে। একরের পর একর বনভূমি কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে। 

স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, পানীয় জল ও সেচের আকাল তৈরীর হওয়ায় ঝাড়গ্রামে কৃষির বিকাশ হয়নি। তারফলে গত ১৩বছরে ২৯ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক সৃষ্টি হয়েছে সাতটি ব্লক নিয়ে গঠিত ঝাড়গ্রাম জেলায়। বামফ্রন্টকে বেকায়দায় ফেলতে সংবাদমাধ্যমের একটা অংশ আমলাশোলে দুই ব্যাক্তির মৃত্যু নিয়ে অনাহারের গল্প ছড়িয়ে ছিলো। কিন্তু তৃণমূলের আমলে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের পূর্ণাপানিতে ১ মাসে ১৩জনের মৃত্যু হয়েছিলো অনাহার ও অপুষ্টি জনিত অসুখের কারনে। সেই নিয়ে মিডিয়া কোনও শব্দ করেনি।  ২০২৩ সালের  এপ্রিল -মে মাসের ৫সপ্তাহে দাঁতনের মনোহরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিলো অনাহার ও অপুষ্টি জনিত অসুখে। সেটা নিয়েও প্রশাসন থেকে শুরু করে মিডিয়া মৌণ ছিল। 

মানুষের এই ক্ষোভ ভাষা পাচ্ছে সিপিআই(এম) প্রার্থীর প্রচারে। জঙ্গলমহলের ল্যাম্পস গুলো কে আগের মতো পুনরুজ্জীবিত করা, সমবায়কে বিকশিত করা, ভষরাখাটে সুবর্ণরেখা নদীতে প্রস্তাবিত ব্যারেজ ও  ঝাড়গ্রাম  শহর থেকে গোপীবল্লভপুর নয়াগ্রাম হয়ে ওডিশার বারিপদা পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেললাইনকে কার্যকর করার দাবি উঠে এসেছে প্রচারে। প্রচারের অভিমুখ হল, মানুষের স্বার্থে জনতার কন্ঠস্বরকে সংসদে তুলে ধরে দাবি আদায় করার লক্ষ্যে  বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির প্রার্থী সোনামনি মুর্মু টুডু কে নির্বাচনে জয়ী করতে হবে। 

স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্ব বলছেন, বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে ভষরাঘাটে ব্যারেজ তৈরীর জন্য সার্ভের কাজ সহ তার দপ্তর  চালু হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে সেই ব্যারেজ প্রকল্প বন্ধ করে সেখানে সুবর্ণরেখার উপর সেতু নির্মান করে ক্ষান্ত হন। ডিসেম্বর মাস থেকে সুবর্ণরেখা শুকিয়ে যায়। কারন মিস্টি জল গড়িয়ে বয়ে যায় ওডিশায়।  তারফলে ডিসেম্বর মাসের পর থেকে জঙ্গলমহল জুড়ে জলের স্তর নেমে গিয়ে পানীয় জলের হাহাকার শুরু হয়। 

সিপিআই(এম) জানাচ্ছে, ভষরাঘাটে ব্যারেজ হলে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ২১টি ব্লক এলাকায় সেচের জলের সঙ্কট সহ পানীয় জলের সঙ্কট মেটানো যেত। এলাকার তিন ফসলী জমিগুলি চার ফসলী জমিতে পরিণত হত।  এলাকায় কাজ তৈরি হত। কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হত না শ্রমজীবী মানুষকে। 

Comments :0

Login to leave a comment