DSP Strike

শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল ডিএসপি

রাজ্য

সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত শিল্পে দুইদিনের ধর্মঘটের সমর্থনে শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল হলো ডিএসপি। কর্তৃপক্ষের শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ধর্মঘট। ২৯ এবং ৩০ জানুয়ারি দুইদিনের ধর্মঘট। 
প্ল্যান্টের ভিতরে মার্চেন্ট মিলের সামনে ধর্মঘটের আহ্বানকারি সংযুক্ত শ্রমিক সংগঠনের ডাকে সাড়া দিয়ে শ্রমিক কর্মচারিরা জড়ো হয়েছিলেন। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন(এইচএসইইউ) নেতা বিশ্বরূপ ব্যানার্জি, শ্রীমন্ত চ্যাটার্জি, এইচএমএস’র সুকান্ত রক্ষিত, আইএনটিইউসি’র রজত দীক্ষিত প্রমুখ।
রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাতে শেষ বেতনচুক্তি হয়েছে ২০১৪ সালের ১ জুলাই। চুক্তির মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বকেয়া ছিল বেতনচুক্তি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বেতনচুক্তির মেয়াদ শেষ। নিয়ম মেনে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতনচুক্তি সম্পাদিত হয়নি। কর্তৃপক্ষ বেতনচুক্তি না করে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী মউচুক্তি করেছ। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মউচুক্তি লাগু হয়নি। ৪ বছর ৯ মাস অর্থাৎ ৩৯ মাসের বকেয়া মেটানো হয়নি। যবে থেকে মউচুক্তি হয়েছে, তবে থেকে বেতন বৃদ্ধি সহ অন্যান্য সুবিধা প্রযোজ্য হয়েছে। শ্রমিক কর্মচারিদের ইনক্রিমেন্ট, যথার্থ হাউস রেন্ট, নাইট শিফ্‌ট ভাতা, পেনসনের দাবি, সিলিং বিহীন গ্র্যাচুইটি (যা ইস্পাতে বরাবর ছিল) তুলে দিয়ে গ্র্যাচুইটিতে সিলিং চাপানো হয়েছে। ঠিকা শ্রমিকরা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত। পরিস্থিতি এমন যে ঠিকা শ্রমিক বিহীন ইস্পাত উৎপাদনের কথা ভাবাই যায়না। অথচ ঠিকা শ্রমিকরা বঞ্চিত। তাদের জন্য বেতনচুক্তির দাবি এড়িয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। গত ১৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি(বিএমএস ব্যতিরেকে) ইস্পাত শিল্পে ধর্মঘটের সিদ্ধা্ন্ত নিয়েছে। ১২ জানুয়ারি সংযুক্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্মঘটের নোটিস দিয়েছে। এমতাবস্থায় গত শনিবার দিল্লিতে কর্তৃপক্ষ ন্যাশানাল জয়েন্ট কমিটি ফর স্টিল(এনজেসিএস)-এর বৈঠক ডেকেছিল। ওই বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনগুলি ৩৯ মাসের বকেয়া মিটিয়ে দেবার দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে গেছে। ধর্মঘটের দাবিগুলির ইতিবাচক ফয়সাল হয়নি। এনজেসিএস-এর বৈঠক ব্যর্থ হয়। মউচুক্তি সেইল-এর শ্রমিক কর্মচারিদের জন্য লাগু হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড(আরআইএনএল)'র শ্রমিক কর্মচারিদের অনৈতিক ও বেআইনি ভাবে মউচুক্তির আওতার বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত শ্রমিক সংগঠন দাবি জানিয়েছে আরআইএলএল-এর শ্রমিক কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। 
এই মুহূর্তে সেইল-এ স্থায়ী শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার। আরআইএনএ-এ স্থায়ী শ্রমিক ৯ হাজার। সেইল-এ ঠিকা শ্রমিক রয়েছেন ৮০ হাজার। আরআইএনএ-এ ঠিকা শ্রমিকের সংখ্যা ১০ হাজার জন। ২৯ এবং ৩০ জানুয়ারি ধর্মঘট সর্বত্র সফল ও সর্বাত্মক করে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

Comments :0

Login to leave a comment