প্রথমার্ধে ছিল তুল্যমূল্য লড়াই। দ্বিতীয়ার্ধে ভূবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়াম সাক্ষী থাকল কার্যত লাল হলুদ ঝড়ের। ২০২০ সালে আইএসএলে পা রাখা ইস্তক যেই ইস্টবেঙ্গলকে খুঁজছিলেন সমর্থকরা, সেই চেনা মশাল বাহিনীর দেখা মিলল এদিন। তারফলে ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচের ফলাফল ৩-১। জোড়া গোল ক্লেইটন সিলভা’র।
এদিন ম্যাচের ১৯ মিনিটে কর্ণার পায় মোহনবাগান। কর্ণার থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হেক্টর ইয়ুস্তে।
কিন্তু সেই লিড দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২৪ মিনিটে লাল হলুদকে সমতায় ফেরান দলের অধিনায়ক ক্লেইটন সিলভা। ইস্টবেঙ্গল কর্ণার পায়। কর্ণার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ার করতে কিছুটা দেরি করেন বাগানের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। সেই সুযোগে চকিতে গোলার মত শট নিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান ক্লেইটন।
প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল বক্সে কিয়ান নাসিরির নেওয়া শটে হাত লাগিয়ে ফেলেন হিজাজি মাহের। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সেই পেনাল্টি মিস করেন বাগানের দিমিত্রি পেত্রাতস।
প্রসঙ্গত, সুপার কাপের সেমিফাইনালে যেতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হত মোহনবাগানকে। অপরদিকে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকার সুবাদে এই ম্যাচ ড্র করলেই পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ ছিল লাল হলুদের সামনে। কিন্তু যেমনটা ইস্টবেঙ্গলের হেডকোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বলেছিলেন, জেতার জন্যই এদিন ঝাঁপিয়েছিল গোটা দল।
তারফলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে প্রবল চাপ বাড়াতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। তেমনই এক মোমেন্টামের হাত ধরে ৬৩ মিনিটে ২-১ ব্যবধানে দলকে এগিয়ে দেন নন্দকুমার শেখর। তাড়া করে বাগানের পরিবর্ত খেলোয়াড় রবি রানার কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন বোরহা হেরেরা। তিনি দ্বিতীয় পোস্ট লক্ষ্য করে বাঁকানো শট নেন। কিপারকে পরাস্ত করলেও সেই শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বল জালে ঠেলেন নন্দকুমার।
এর কয়েক মিনিটের মাথায় কিয়ান নাসিরি চেষ্টা করেও লক্ষ্যচ্যুৎ হন। নাসিরি এবং পেত্রাতস প্রান্ত এবং মাঝমাঠ ব্যবহার করে পালটা আক্রমণ ফেরানোর চেষ্টা করলেও দলের বাকিদের মধ্যে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এদিন আর্মান্দো সাদিকু, এবং দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামা জেসন কামিংস নজর কাড়তে ব্যর্থ হন। তারফলে বাগানের আক্রমণভাগ নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
মোহনবাগান কফিনে শেষ পেরেক পোঁতেন ক্লেইটন সিলভা। ৮০ মিনিটের মাথায় হিজাজি মাহেরের শট প্রতিহত করতে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান বাগান কিপার অর্শ আনোয়ার। ওঁত পাতা শিকারির মত ছোঁ মেরে সেই বল জালে ঠেলেন ক্লেইটন।
এদিন ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন ক্লেইটন। ৩ ম্যাচে ৪ গোল করে সুপার কাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে শীর্ষে উঠে এলেন তিনি।
Comments :0