সোমবার এসআইআর ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিকেলে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গতকাল দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্যে এসআইআরের ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সোমবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্যে এসআইআরের ঘোষণা করলেন মুখ্যনির্বাচনী আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার, নির্বাচন কমিশানার সুখবীর সিং সান্ধু, বিবেক যোশী। জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘বিহারে সফল ভাবে এসআইআরের কাজ হয়েছে। দেশের ২৬টা রাজ্যে এসআইআরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারদের সাথে আলোচনার পর। এসআইআরের মূল উদ্দেশ্য যোগ্য ভোটারদের নাম তালিকায় ভোটার তালিকায় রাখা এবং অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া। বিহারে সাড়ে সাত কোটি ভোটার এসআইআরে অংশ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ১২ রাজ্য এই এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।’ নথি হিসাবে আধার কার্ড নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
তিনি জানান আন্দামান, ছত্তিশগড়, গুজরাট, কেরল, গোয়া, লাক্ষ্মাদ্বীপ, মধ্য প্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাডু, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ- এই ১২ রাজ্যে। ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে এই ১২ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। উল্লেখ্য আসামে সামনে ভোট হলেও এসআইআর হচ্ছে না।
কমিশনের কথায়, ‘বাড়ি বাড়ি বিএলওরা এনুমারেশন ফর্ম পৌঁছে দেবে। আজ রাত ১২টার পর ভোটার তালিকা ফ্রিজ করে দেওয়া হবে। যাদের নাম ২০০৩ – ২০০৪ এ প্রকাশিত ভোটার তালিকায় আছে তাদের কোন নথি দিতে হবে না। সেই সময় যাদের নাম ছিল না তার বাবা বা মায়ের নাম যদি সেই তালিকায় থাকে তবে তাকেও আর কোন আলাদা নথি দিতে হবে না। বিএলও তিনবার একটি বাড়িতে যাবেন এই কাজের জন্য। যারা রাজ্যের বাইরে থাকেন তারা অনলাইনেও ফর্মপূরণ করতে পারবেন।’
রাজ্যে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গের মোট ভোটারের ৫২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩.৭ কোটি ভোটারের নাম ২০০২-র ভোটার তালিকায় রয়েছে। ২০২৫’র জানুয়ারিতে শেষ যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তার ৪৮ শতাংশ, অর্থাৎ ৩.৫ কোটি ভোটারের নাম সেই পুরনো তালিকার বাইরে। উল্লেখ্য রাজ্যে ২০০২ সালেই শেষ ‘নিবিড় সংশোধন’ বা ‘আইআর’ হয়েছিল। কিন্তু সেবার কাউকে ফর্ম ভরতে হয়নি, নথিও চাওয়া হয়নি। বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম খোঁজ করে দেখেছিলেন।
এসআইআর-এ প্রত্যেককে ফর্ম ভরতে বলা হয়েছিল বিহারে। কিন্তু ফর্ম জমার পর রসিদ কাউকে দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টেও সে বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। রাজ্যের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা চালু হবে কিনা স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, দুই তালিকার ব্যবধান মানে প্রায় তেইশ বছরে বহু মানুষ যেমন মারা গিয়েছেন তেমনি স্বাভাবিক নিয়মেই বহু নাম যুক্ত হয়েছে। অনেকে নিজের বাসস্থান পরিবর্তন করেছেন।
সিইও দপ্তরের সূত্র জানাচ্ছে, এসআইআর কাজ কেবল বাকি রয়েছে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এই দুই জেলায় প্রায় ৪০ লক্ষ ভোটদাতা রয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিহারে ২০০২’র তালিকার তুলনায় নতুন নামের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি। পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যা ৩.৫ কোটি।
Election Commission West Bengal
বিকেলে সর্বদলীয় বৈঠক রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে
×
Comments :0