আদানি গোষ্ঠীর মালিকানায় থাকা অম্বুজা সিমেন্টের কারখানা হচ্ছে মুম্বাইয়ের কল্যাণে। ভয়াবহ দূষণের আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যেই পরিবেশ সংক্রান্ত বিধি শিথিল করতে নামল কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক খসড়া বিধি প্রকাশ করেছে। তার উদ্দেশ্য, আদানির সিমেন্ট গুঁড়ো করার কারখানার জন্য পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র নেওয়ার দায় না রাখা।
মুম্বাইয়ের কল্যাণে আদানি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন অম্বুজা সিমেন্ট ১৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বছরে ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদনে সক্ষম কারখানা তৈরি করছে।
২৬ সেপ্টেম্বরের পরিবেশ মন্ত্রক খসড়া নির্দেশিকা জারি করে বলেছে যে সিমেন্ট কারখানার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র না থাকলে পরিবেশ সংক্রান্ত আগাম অনুমোদন দরকার হবে না।
এই প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা হচ্ছে। স্থানীয় বিভিন্ন অংশ তীব্র দূষণ এবং উচ্ছেদের আশঙ্কায় প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর আগে ধারাভি বস্তির পুনর্গঠন প্রকল্প আদানির হাতে দেওয়ার পদক্ষেপেও এমন প্রতিবাদ হয়েছিল।
এই প্রকল্পে অম্বুজা সিমেন্ট কল্যাণে ৬টি সিমেন্ট গুঁড়ো করার যন্ত্র বসাচ্ছে। কল্যাণ অত্যন্ত ঘন জনবসতির এলাকা। সিমেন্টের গুঁড়ো বাতাসে মিশে শ্বাসজনিত মারাত্মক স্বাস্থ্য সঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস ঘিরে বিভিন্ন অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সই সংগ্রহ হয়েছে প্রকল্পের প্রতিবাদে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জনশুনানি করে। কল্যাণ সংলগ্ন অম্বিভিলির বহু বাসিন্দা অংশ নেন জনশুনানিতে। থানে জেলার মধ্যে হলেও মুম্বাই মহানগর অঞ্চলের মধ্যেই পড়ে এই এলাকা। বহু বাসিন্দা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন। জিপসামের মতো পদার্থের ছোট টুকরো থেকে সিমেন্ট গুঁড়ো করা হবে এই কারাখানায়। নেওয়া হবে প্রায় ২৩.১৬ হেক্টর এলাকা।
স্থানীয়েরা বলেছেন, এই এলাকায় বড় গুদাম এবং মাল সরবরাহের পরিকাঠামো হওয়ার কথা ছিল। সেই প্রকল্প বদলে কবে সিমেন্ট কারখানা করার সিদ্ধান্ত হলো তাঁরা জানেন না।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যম আদানি গোষ্ঠীর নিজের তৈরি পরিবেশ সংক্রান্ত প্রভাব মূল্যায়নের রিপোর্ট হাতে পেয়েছে। দেখা গিয়েছে তিন মাসের মধ্যে কোনোরকমে সেরে ফেলা হয়েছে এই রিপোর্ট তৈরির কাজ। কিন্তু সেখানেও স্বীকার করা হয়েছে যে শব্দ দূষণ এবং বায়ু দূ্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। তার প্রভাব কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব বলেও দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই রিপোর্টেই জানানো হয়েছে যে দিনে প্রায় ৬০০ কলো লিটার জল দরকার পড়বে। মাটির নিচের জল ব্যবহার করার দরকার পড়বে।
কারখানার ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে রয়েছে ৭০টি গ্রাম। তার বাসিন্দা সাড়ে ৩ লক্ষ পরিবার। দেড় কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে রয়েছে চারটি স্কুলও।
Adani Kalyan
মহারাষ্ট্রে আদানির সিমেন্ট কারখানার জন্য বিধি বদলাচ্ছে মোদীর মন্ত্রক

×
Comments :0