শ্যামল কুমার মিত্র
তৃণমূল কংগ্রেস ২০১১ সালের নির্বাচনী ইস্তাহারের ২৫ নম্বর পাতায় বলেছিল, ‘বাম সরকারের সময় ৫৬ হাজার কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, এই সব বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার জমির পরিমান ৪৪ হাজার একর।’ ৯ নম্বর পাতায় লেখা ছিল, ‘রাজ্যে শিল্প মানে শুধুই মদের বন্যা। চারিদিকে শুধু শুঁড়িখানা (মদের দোকান)।’ মমতার প্রতিশ্রুতি ছিল, (১)বন্ধ হয়ে যাওয়া ৫৬ হাজার কারখানা খোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহন করে নতুন শিল্প স্থাপন করা হবে। (২ )৫ বছরের মধ্যে প্রতিটি মহকুমায় অন্তত ১০ টি করে বড়, মাঝারি শিল্প গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বেকারদের মুখে হাসি ফোটাতে তৃণমূল বদ্ধপরিকর। (৩) শুঁড়িখানার এই বাড়বাড়ন্ত বন্ধ করা হবে। মদের নেশা থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করতে হবে। ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিধানসভায় বিধায়ক যোশেফ মুন্ডার প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল সরকার লিখিতভাবে জানালেন, ‘৩১ অক্টোবর, ২০১১ পর্যন্ত রাজ্যে ২৫টি বড় ও ৫৮টি মাঝারি (সর্বমোট ৮৩) কারখানা বন্ধ। ‘অর্থাৎ তৃণমূল সরকারই তথ্য দিয়ে স্বীকার করে নিলেন, ৫৬ হাজার নয়, বাম আমলে ৮৩ টি কারখানা বন্ধ হয়েছিল। তাই মমতা ৫৬ হাজার বন্ধ কারখানা খুলবেন কিভাবে? প্রশ্ন হল, এই ৮৩ টি বন্ধ কারখানা খোলার কোন উদ্যোগ কি তিনি নিয়েছেন? উত্তর, ‘না’। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে (বাম আমলে) আবগারি খাতে রাজ্যের আয় ছিল ২০০০ কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে তা হয়েছে ২২,৫৫০.৩৩ কোটি টাকা। রাজ্যে মোট সরকার অনুমোদিত মদের দোকান ৭,৭৪৬ টি। কলকাতায় ৬২১ টি, জেলায় ৭১২৫ টি, রাজ্যে পঞ্চায়েত আছে ৩৩৩৯ টি, অর্থাৎ তৃণমূল সরকারের সৌজন্যে রাজ্যে পঞ্চায়েত পিছু মদের দোকান ২.১৩ টি। অনুমোদনহীন মদের দোকান (চোলাই শিল্প) কত তার কোন হিসাব নেই। এর পরেও মদের ব্যবসার আরো শ্রীবৃদ্ধির জন্য ২০১৭ সালে তৈরি হয়েছে সরকারি সংস্থা ও বে বেভারেজ কর্পোরেশন লিমিটেট, যে সংস্থার লক্ষ্য রাজ্যে আরো বেশি সংখ্যায় সরকার অনুমোদিত মদের দোকান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া। আক্ষরিক অর্থে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ‘দুয়ারে মদ’ প্রকল্প। শুধু যুবসমাজ নয়, সর্বস্তরের মানুষের (ছাত্র/ছাত্রীসহ) মধ্যে মদ্যাশক্তি ও মদ্যপান প্রবণতাকে লঘু করে দেখার ক্রমবর্ধমান মানসিকতা গোটা রাজ্যটাকে উৎসন্নে পাঠাচ্ছে। অথচ পাশের রাজ্য বিহার রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করে ‘অপরাধের সংখ্যা’ ও ‘অপরাধ প্রবণতা’ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়েছে।
বর্তমানে রাজ্যে শিল্পের অবস্থাটা কেমন? রাজ্য সরকারের পরিবেশ দপ্তরের 'স্টেট অফ এনভায়র্রনমেন্ট রিপোর্ট ২০২১-এ লেখা হয়েছে, ‘২০২১ পর্যন্ত ৫ বছরে রাজ্যে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প মিলিয়ে ২১,৫২১ টি শিল্পকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।’ ২০১৬ সালে রাজ্যে চালু বৃহৎ শিল্প ছিল ১৩৩৭ টি, ২০২১ এ তা ১০৬৬ তে নেমে এসেছে, অর্থাৎ ৫ বছরে ২৭১ টি বৃহৎ শিল্প বন্ধ হয়েছে। সংসদে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক জানিয়েছেন, ‘২০১৯ থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২,২২৭ টি কোম্পানি তাঁদের স্থায়ী ঠিকানা (রেজিস্টার্ড অফিস) অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে গেছে (এ গুলির মধ্যে ৩৭টি শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত কর্পোরেট সংস্থা)।’ সংসদে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নিয়ে পেশ করা তথ্য,‘পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া ছোট শিল্পের সংখ্যা ১,৫৪৫।’ অর্থাৎ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তথ্য অনুসারে এ রাজ্যে বড় সংখ্যায় চালু বড়, মাঝারি ও ছোট শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে, বড় সংখ্যায় কোম্পানি এ রাজ্য থেকে তাঁদের স্থায়ী ঠিকানা ভিন রাজ্যে নিয়ে গেছে। এ সবই মমতার শাসনকালের সময়ের ঘটনা। রাজ্যে নতুন বিনিয়োগের পরিসংখ্যান কেমন? ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গুজরাট, দিল্লিতে যথাক্রমে ৬০৪৫, ৪০১৯, ৩০৩২এবং ২০৭০ লক্ষ কোটি টাকা। আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ১৩,৩৪৬ কোটি টাকা (সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পেশ করা তথ্য)। অন্য রাজ্য যেখানে লক্ষ কোটি টাকার অঙ্কে এফডিআই আনছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে তা হাজার কোটির অঙ্কে সীমাবদ্ধ। ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত (২০২০,২০২১ এবং ২০২৪ সালে হয়নি) ৭টি বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনে মোট ১৭,৬০,৬১৭ কোটি ২ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাবের ঘোষণা মমতা করেছেন। এই সময়কালে প্রকৃত বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে ৬৩,৬০৯ কোটি টাকার যা তাঁর ঘোষণার মাত্র ৩.৬১শতাংশ। বাস্তবে রাজ্যে এই ৬৩,৬০৯ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাবের কতটা সত্যিই বিনিয়োগ হয়েছে, তার কোনও সরকারি তথ্য নেই। অর্থাৎ বাংলায় বিনিয়োগের ঘোষণা আছে, ঘোষণার বাস্তবায়ন নেই। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। তাই কর্মপ্রার্থীদের কর্মসংস্থানের প্রশ্নে রাজ্যে শিল্পে, বিশেষতঃ উৎপাদন শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। শিল্পোন্নত রাজ্যগুলি তাঁদের রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ টানতে বাজেট প্রস্তাবে মূলধন খাতে এবং পরিকাঠামো খাতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ রাখেন। পশ্চিমবঙ্গে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মূলধন খাতে, পরিকাঠামো খাতে এবং সামাজিক খাতে বরাদ্দ যথাক্রমে ৩৫৮৬৬, ১০৫৯৫ এবং ৯২৮৪০ কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে এই অর্থাঙ্ক যথাক্রমে ৪০০৮৬, ১২১৪৮ এবং ৯৯০১৬ কোটি টাকা। মূলধন ও পরিকাঠামো খাতে এত কম বরাদ্দে রাজ্যে অন্য সব শিল্পোন্নত রাজ্যের সমতুল শিল্প অনুকুল পরিবেশ ও পরিকাঠামো দেওয়া কি ভাবে সম্ভব? রাজ্যের লক্ষ্য, সামাজিক খাতে বিনিয়োগের নামে ‘শাসকদল অনুকুল ভোটব্যাঙ্ক’ তৈরির প্রয়োজনে যতটা বেশি সম্ভব বরাদ্দের সংস্থান। সামাজিক প্রকল্পে কঠোরভাবে উপভোক্তা নির্বাচনে তাঁদের আর্থ-সামাজিক প্রয়োজনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিলে, তা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ধনী-নির্ধন সকলকে খুশি করার লক্ষ্যে, গরিবদের প্রাপ্য সামাজিক খাতে বরাদ্দ যেভাবে স্বচ্ছল, ধনী, অতিধনীদের বিলিয়ে দেওয়া হয়, তা একদিকে গরিব মানুষদের সঙ্গে বঞ্চনা ও প্রতারনা, অন্যদিকে শাসকদলের নির্বাচনী স্বার্থে রাজকোষ লুঠ। এই লুঠ বন্ধ করে, সেই অর্থ মূলধন ও পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ করলে, রাজ্যে শিল্প অনুকুল কাঠামো উপহার দিতে পারতেন সরকার। বিনিয়োগ টানার প্রশ্নে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রবল প্রতিযোগিতা। ফলে শাসক দলের ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক, রাজ্য সরকারকে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের অন্য রাজ্যের সমানুপাতে সুযোগ-সুবিধা দিতেই হবে। এই কথা মাথায় রেখে পূর্বতন বাম সরকার ১৯৯৩সালে শিল্পে ‘ইনসেনটিভ স্কিম’ চালু করেন। পরে চালু হয় শিল্পসংস্থায় বিদ্যুৎ বিলে ছাড়ের সুযোগ। ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে পূর্বতন বাম সরকার শিল্পসংস্থাগুলিকে বিদ্যুৎবিলে ছাড় দিয়েছিলেন ১১৬ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বর্তমান সরকার এই খাতে বরাদ্দ রেখেছিলেন ৮৫ কোটি টাকা। শিল্পসংস্থাগুলি ছাড় নিয়েছে মাত্র ৭৬ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। বেসরকারি উদ্যোগপতিদের লক্ষ্য মুনাফা সর্বাধিকীকরন, অথচ তাদের জন্য সরকার ৮৫ কোটি টাকা রাখলেও, তারা নিলেন মাত্র ৭৬ লক্ষ ৩৭? কারণটা কি? আসলে শিল্পই না থাকলে, বিদ্যুৎ বিলে ছাড়টা নেবেন কে? ১৯৯৩ সালে বাম সরকার শিল্পে যে ‘ইনসেন্টিভ স্কিম চালু করেছিলেন,তা সম্প্রতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মমতার সরকার, কারণ তারা উপলব্ধি করেছেন রাজ্যে শিল্প অনুকুল পরিবেশ, পরিস্থিতি, পরিকাঠামো না থাকলে, তথাকথিত বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর নাচ, গানে শিল্প আসবে না। সিঙ্গুরে ৯২শতাংশ কাজ সম্পূর্ন হয়ে যাওয়া, উৎপাদন শুরুর মুখে থাকা, টাটাদের মোটরগাড়ি কারখানা, ৫৬ টি অনুসারী শিল্পসহ একটা উপনগরীর ধ্বংসযজ্ঞ মমতাকে ক্ষমতার আসনে বসিয়েছে, কিন্তু সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা স্থায়ী আতঙ্ক তৈরি করেছে যে পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের কোন নিরাপত্তা নেই, এ রাজ্যে দলীয় রাজনীতির স্বার্থে টাটাদের মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পসংস্থাকেও উৎপাদন শুরুর মুখে রাজ্য ছাড়তে হয় প্রকল্প বন্ধ করে দিয়ে। প্রয়াত রতন টাটা একাধিকবার বলেছেন, ‘টাটাদের প্রতিদ্বন্দী শিল্পগোষ্ঠির স্বার্থে, তাদের অর্থে ও পরিকল্পনায় সিঙ্গুর আন্দোলন পরিচালিত হয়েছে।’ সত্য-মিথ্যা জানি না, কিন্তু প্রয়াত টাটার এ অভিযোগ স্রেফ হজম করে নিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। কারখানাটি নরেন্দ্র মোদীর গুজরাটকে উপহার দিয়েছেন তিনি, কিন্তু সিঙ্গুরসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে চিরতরে শেষ করে দিয়েছেন তিনি। শাকের উপর আঁটির মত, গোটা রাজ্যে শাসক দলের সর্বাত্মক তোলাবাজি, আইন শৃঙ্খলার অবনতি, পরিকাঠামোহীনতা, কাটমানি শিল্প মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে কাজ করছে। সব থেকে আতঙ্কের বিষয়, সরকার আন্তরিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করলেও, রাজ্যে অন্য শিল্পোন্নত রাজ্যের সমতুল শিল্প অনুকুল পরিকাঠামো তৈরি করতে পারবে না রাজ্য, কারণ অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, ‘নির্বাচনী ভোট ব্যাঙ্ক’ তৈরির লক্ষ্যে, বিপুল অপব্যয়ের কারণে বেপরোয়া গতিতে ঋণগ্রহণ করে চলেছে। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে (বাম আমলে) রাজ্যের ঋণ ছিল ১,৯২,০০০ কোটি টাকা যার মধ্যে স্বল্পসঞ্চয় থেকে নেওয়া বাধ্যতামূলক ঋণ ছিল ৭৯,০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাম সরকার স্বেচ্ছায় ৩৪ বছরে ১,১৩,০০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন, বছরে গড়ে ৩,৩২৩ কোটি টাকা। তৃণমূল সরকার অতিক্রান্ত ১৪ বছরে ঋণ নিয়েছেন ৫,৭৯,৬৭০ কোটি টাকা (২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে রাজ্যের ঋণ ৭,৭১,৬৭০ কোটি টাকা), বছরে ৪১,৪০৫ কোটি টাকা, বাম সরকারের তুলনায় ১২.৪৬ গুন বেশি হারে ঋণ করেছেন এই সরকার। গৃহীত ঋণের সিংহভাগ অর্থ ‘অনুৎপাদক’ (উন্নত রাজ্যগুলি গৃহীত ঋণ ‘উৎপাদন’ ক্ষেত্রে ব্যয় করে রাজ্যকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দেন) ক্ষেত্রে ব্যয় করে রাজ্যকে ‘ঋণের দুষ্টচক্র’ এর মধ্যে এনে ফেলেছেন যা প্রায় দেউলিয়া অবস্থা। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে রাজ্যের নিজস্ব আয় ১,১২,৫৩৪ কোটি টাকা, ঋণ শোধে খরচ ৮১,৫১০ কোটি টাকা, খরচ করার জন্য পড়ে থাকল মাত্র ৩১,০২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজ্যের দৈনন্দিন খরচ চালাতে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ও নতুন ঋণের উপর ভরসা করতে হবে। এই ভয়াবহ আর্থিক পরিস্থিতিতে শিল্প অনুকুল পরিকাঠামো তৈরির আর্থিক সক্ষমতাই নেই রাজ্যের। ফলে এ রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনা সোনার পাথরবাটি হয়েই থেকে যাবে। তীব্র কর্মসংস্থানহীনতার আবহে রাজ্য সরকার সরকারি ৭ লক্ষাধিক শূন্যপদে নিয়োগ করবেন না, বিনিয়োগ না আসায় বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, অন্য রাজ্যে কাজ করতে গেলে বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে অত্যাচারিত হবেন, এমন কি ‘বাংলাদেশী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হবে, কেন্দ্র সরকার ১০ লক্ষাধিক শূন্য পদে নিয়োগ করবেন না, দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ বন্ধ করে দেবেন, কেন্দ্র-রাজ্য সরকার কর্মপ্রার্থীদের কোন বাস্তবসম্মত ‘স্ব-নিযুক্তি’ প্রকল্পের সুযোগ দেবেন না, অথচ উভয় সরকার তীব্র কর্মসংস্থানহীনতাকে মূলধন করে ক্রীতদাস মালিকের কায়দায় শিক্ষিত কর্মপ্রার্থীদের নামমাত্র মজুরিতে কোন রকম সামাজিক সুরক্ষা ছাড়াই চুক্তি শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ করে, তাদের দিয়ে সরকারি কাজ করিয়ে নেবেন! চমৎকার বন্দোবস্ত! উপদেশ দেবেন ‘চপ’, ‘পকৌড়া’ শিল্পের মত ‘উন্নততর কর্মসংস্থান’ এর। ধিক্কার জানাই এই সরকারি নীতিকে।
Comments :0