পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সাবজ্ কোহ গ্রামে হামলার ফলে ২জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ জানিয়েছে যে তেহরান থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কার করা হচ্ছে।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ইরানের এই পদক্ষেপ বেআইনি। এর ফল ভোগ করতে হবে ইরানকে। যদিও পাকিস্তানের তরফে কোনও সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার ইরাক এবং সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। সিরিয়ার ইডলিব এবং ইরাকের এরবিল শহরে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায় তেহেরান। ইরান জানিয়েছিল বিদেশের মাটিতে ইজরায়েলের ঘাঁটিতে ফেলা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইরানের কেরমান শহরে রেভল্যুশনারি গার্ডের জেনারেল কাসেম সোলেমানি’র প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ হয়। মঙ্গলবার ইরাক এবং সিরিয়ায় হামলার পরে ইরানের তরফে বলা হয়, সেই ঘটনায় জড়িত কোনও পক্ষকে রেয়াত করা হবেনা।
বিবিসি জানাচ্ছে, ইরানের অভিযোগ, কেরমান বিস্ফোরণে জড়িত রয়েছে ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। আইসিসের মত পাকিস্তান, ইরাক এবং সিরিয়ার উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করে ইরানের ভিতরে অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র করেছে ইজরায়েল। সেই ছকের অংশ ছিল কেরমান বিস্ফোরণ।
রুশ টেলিগ্রাম চ্যানেল স্লাভিয়ানগ্র্যাডের পোস্ট অনুযায়ী, ইরানের তরফে জানানো হয়েছে, ইরাকে মোসাদের প্রধান ঘাঁটি এবং মোসাদের সহযোগী এক প্রভাবশালী কুর্দি ব্যবসায়ীর বাসভবনে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালানো হয়। সিরিয়ায় ইডলিব সহ একাধিক জায়গায় আইসিস সহ উগ্রপন্থীদের ঘাঁটিতে হামলা চলে। ইরানের দাবি অনুযায়ী, বুধবার গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জৈশ আল-আদলের ঘাঁটি।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বর মাসেই সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে ঢুকে রাস্ক অঞ্চলের এক পুলিশ চৌকিতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল জৈশ আল-আদলের বিরুদ্ধে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় বেনজির তাণ্ডব চালাচ্ছে ইজরায়েলী সেনা। ইজরায়েল প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে এখনও অবধি ২৪ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে ইজরায়েল অভিযোগ করে এসেছে, হামাসকে সাহায্য করছে ইরান। আবার গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে লোহিত সাগরে ইজরায়েলী জাহাজের উপর হামলা চালানো শুরু করে ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহীরা। ইজরায়েল সহ পশ্চিমী বিশ্বের অভিযোগ, হাউথিদেরও অর্থ এবং অস্ত্র যোগায় ইরান।
চলতি মাসে আমেরিকা এবং ব্রিটেন ইয়েমেনে একশোর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে হামলা চালায়। আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল হাউথিদের বিমান এবং সামরিক ঘাঁটি। সেই হামলার পরে সপ্তাহ গড়াতে না গড়াতেই ইরাক, সিরিয়া এবং পাকিস্তানে হামলা চালালো ইরান।
Comments :0