Winter kolkata

কলকাতায় ১২.৬ ডিগ্রি, পারদ নামল সর্বত্রই

রাজ্য

কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে শনিবার সকাল থেকে লাফিয়ে নামল পারদ। সোমবার মকর সংক্রান্তি। তার আগে আশান্বিত শীতের দেখা মেলায় খুশি দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। কলকাতায় শনিবার পারদ নামল ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
দমদম ও সল্টলেকের তাপমাত্রা নেমে হয়েছে ১১ এবং ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়াসহ পশ্চিমের জেলাগুলো। এদিন পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৭.১ ডিগ্রিতে। বাঁকুড়ায় এদিনের তাপমাত্রা নেমে হয়েছে ৮ ডিগ্রি। দুই বর্ধমানেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘুরপাক করছে।
পারদ পতন আরও চললেও মঙ্গলবার ফের পরিবর্তন হতে চলেছে আবহাওয়ায়। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে উত্তর ও দক্ষিণের দুই বঙ্গেই বুধ ও বৃহস্পতিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তিন দিন চলতে পারে সেই বর্ষণ।   প্রথমে হালকা, এরপরে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
পশ্চিম হিমালয় থেকে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে থাকবে জলীয় বাষ্প। এই সবের জেরেই মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যের একাধিক জেলায় বৃষ্টিপাত হবে। মঙ্গলবার রাজ্যের পাঁচ জেলায় বৃষ্টিপাত হবে।  আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, দার্জিলিঙ, কালিম্পঙ এবং আলিপুরদুয়ারে প্রথমে হালকা বৃষ্টি শুরু হবে। প্রথম দিন উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বাকি ১৮টি জেলা মোটের ওপরে শুষ্ক থাকবে।  
বুধবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদীয়া, হাওড়া, হুগলী এবং কলকাতায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলা যেমন পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে কোন বৃষ্টি হবে না।  
মঙ্গল ও বুধে উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি, কালিম্পঙ, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। বাকি তিন জেলা  উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদায় বৃষ্টি হবে সামান্য। শেষে বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বৃষ্টি হবে। 
ওই দিন উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।  
এদিকে যেভাবে পারদ নামা শুরু করেছে সেদিকে তাকিয়ে পর্যটকরা বরফের আশায় ছুটছেন পাহাড়ে। তুষার পাওয়ার আশায় অনেকেই দার্জিলিঙে ভিড় জমাচ্ছেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গের সব জেলার অবস্থা ততটা ভালো নয়। গত সাত দিন ধরেই কোচবিহারসহ  আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, বালুরঘাটে সূর্যের মেলেনি। 
আর জেরেই সেখানকার আলুচাষিরা বেশ বিপাকে পড়ে গেছেন। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা আরও বাড়লে এ যাত্রায় আলু চাষের ব্যানপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। কৃষিবিদদের মতে, বাড়তি শীত পড়লে অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে সমস্যা না হলেও আলু এবং টমেটো চাষে দারুণ ক্ষতি হতে পারে। 
তার ওপর যে কোনও পাল্লার বৃষ্টিই ক্ষতিকর। উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায় যেভাবে ঘন কুয়াশার দাপট দেখা যাচ্ছে, তাতে আলুর ধসা রোগের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সবজি চাষেও নিদারুণ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। 
শীতে বৃষ্টির মতো বিপরীত আবহাওয়া জেরে এবার চা বাগানে ইংরেজ আমলের নীতিরও পরিবর্তন আসছে। চা তোলার নতুন নিয়ম নিয়ে ১৫ জানুয়ারি, সোমবার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হওয়ার কথা। নতুন নিয়ম অনুসারে নভেম্বরের শেষেই পাতা তোলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।  তবে ভারতীয় চা পর্ষদের ডাকা ওই মিটিংয়ে সব পক্ষ একমত না হলে তা কার্যকর হবে না।
জলবায়ু বদলের জন্যই এই নতুন নিয়মের কথা আসছে। আর তা কার্যকর হলে ৩০ নভেম্বরের পর থেকে আর পাতা তোলা হবে না। এরপর আবার যখন বসন্তকাল আসবে তখন বাগানে নতুন পাতা আসবে। তখন আবার পাতা তোলার কাজ করা হবে। তার মানে চা বাগানে আগেই শীতকাল আসছে।
শীতকাল মানে চা বাগান শুনশান। চা পাতা তোলার কাজ বন্ধ। চা ফ্যাক্টরির কাজও বন্ধ থাকে। এতদিন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়। এই সময়কালকেই চা বাগানের শীতকাল বলে উল্লেখ করা হয়। মানে চা বাগানের শুখাকাল। আর সেই শুখাকাল এবার এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

 

Comments :0

Login to leave a comment