MD SALIM ELECTION

অশান্তির শক্তিকে তাড়ানোর ডাকে সাড়া মানুষের: সেলিম

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

‘‘কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের কর্মীরা গত এক-দেড় মাস ধরে দেশ ও এলাকার শান্তি সম্প্রীতির জন্য ভোট দিতে বলেছে। দেশে ও রাজ্যে যাতে শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরে আসে, অশান্তির শক্তিকে যাতে বিতাড়িত করা যায়, সেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। মানুষ তাতে সাড়া দিয়েছেন।’’
তৃতীয় দফার নির্বাচনের পর এই প্রতিক্রিয়া সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের। মঙ্গলবার এই দফায় ভোট হয়েছে মুর্শিদাবাদ, জঙ্গীপুর, মালদহ উত্তর এবং দক্ষিণ কেন্দ্রে। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে প্রার্থী ছিলেন সেলিম। 
সেলিম বলেছেন, ‘‘ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। আমরা কমিশনের কাছে অবাধ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের দাবি করেছিলাম। বড় কোনও ঘটনা ছাড়াই ভোট হয়েছে এদিন।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রায় প্রতি বুথেই আমরা এজেন্ট বসাতে পেরেছি। কিছু জায়গায় কসরৎ করে ঢোকাতে পেরেছি। কিন্তু তৃণমূল অনেক জায়গায় পোলিং এজেন্ট দিতেই পারেনি। ধরেই নিয়েছিল সিপিআই(এম)’র এজেন্ট দিতে পারবে না।’’
এদিন মুর্শিদাবাদে তৃণমূল বারবার মানুষকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। চেষ্টা হয়েছে গোলমাল পাকানোর। বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে সেলিমকেও। সেসব পার করে সর্বত্র ছুটেছেন তিনি। 
সেলিম বলেছেন, ‘‘৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে শুনেছি। কোথাও কোথাও ‘স্লো’ হয়েছে, কোথাও কোথাও তৃণমূলের গুণ্ডারা মানুষকে বাধা দিয়েছে স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে। আমরা অভিযোগ করার পরে, কেন্দ্রীয় বাহিনী যাওয়ার পরে মানুষ জেদের বশে ভোট দিয়েছে। এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে সাত বছর পরে মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন।’’ 
নির্বাচন কমিশন এদিন জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসেবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৭৬.৪৯ শতাংশ ভোট হয়েছে মুর্শিদাবাদে। রাজ্যে চার কেন্দ্রের গড় ৭৩.৯৩ শতাংশ। তবে আরও তথ্য এলে ভোটদানের হার বাড়বে। 
সেলিম বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশন, রাজ্য পুলিশের দলদাস ভূমিকায়, মমতা ব্যানার্জির ব্যবস্থাপনায় ভোট লুট হয়েছিল, গণনায় লুট হয়েছিল, প্রাণ গিয়েছিল। আমরা বলেছিলাম, নির্বাচন মতাদর্শগত রাজনৈতিক লড়াই, দেশ বাঁচানোর জন্য গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান বাঁচানোর জন্য লড়াই। রুটি রুজি হকের লড়াই। সেখানে পাড়ার ছিঁচকে মস্তানি করে লাভ হবে না। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনে হয়েছিল। মানুষ ভরসা পেয়েছে। প্রচারে এসে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ভোট দিতে পারব তো?’’ 
সেলিম বলেছেন, ‘‘কিছু জায়গায় কিছু স্থানীয় দুষ্কৃতী আর কিছু পুলিশ অফিসারের দৌলতে ভোটদানে বাধা দিয়েছে। কিন্তু মানুষ জেদের বশে ভোট দিয়েছেন। কোথাও কোথাও আমাদের যেতে হয়েছে। পুলিশের সামনে মহিলারা অভিযোগ করেছেন, শ্লীলতাহানি করেছে, গলা টিপে ধরেছে। আমাকে যেতে হয়েছে কারণ আমাদের পোলিং এজেন্টকে মেরে বের করে দিয়েছিল। আমি খবর পেয়ে গিয়ে উদ্ধার করে আবার বুথে বসাই।’’ 
সেলিম করিমপুরের মানুষকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘‘বুথের পাশে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে বাধা দিচ্ছিল। কিন্তু মানুষ মার খেয়েছেন, লড়েছেন, পুলিশ কিছু করেনি, তারপরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাধ্য করায় সরিয়েছে দুষ্কৃতীদের। তারপরে ভোট দিয়েছেন মানুষ। এখন চাই, ঠিকমতো বাক্স সিল হোক, স্ট্রং রুমে আমাদেরও পাহারার ব্যবস্থা থাকবে। অনেক দিনের ব্যবধানে গণনা।’’ একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর ভুয়ো ডিগ্রি দেখেছি, ভুয়ো ভ্যাকসিন, ভুয়ো অফিসার দেখেছি, এবারের নির্বাচনে আমরা ভুয়ো পোলিং এজেন্ট দেখেছি। আমাদের এজেন্টকে আগের রাত থেকে ভয় দেখিয়ে, বুথ থেকে তাড়িয়ে, জাল কাগজপত্র নিয়ে, নকল সই লাগিয়ে আমাদের পোলিং এজেন্ট সেজে বসে গেছে বুথে। বেশ কিছু জায়গায় এমন নকলদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি, নইলে ‘মব লিঞ্চিং’ হতে পারত।’’ 
সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও সেলিম ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘অবাধে ভোটদানে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা হয়েছে, এমন সংবাদ তুলে ধরেছেন আপনারা। তৃণমূলের অনেক স্থানীয় কর্মীও এবার পঞ্চায়েতের মতো ভোট লুটে সক্রিয় ভুমিকা নেননি, তাঁদেরও ধন্যবাদ।’’

Comments :0

Login to leave a comment