প্রধানমন্ত্রীর প্রচার ঘিরে এমনই উদ্বেগ জানিয়ে শুক্রবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারকে চিঠি দিলেন দেশের বিশিষ্টদের একাংশ।
চিঠিতে সই রয়েছে পবিত্র সরকার, শমীক বন্দোপাধ্যায়, শুভঙ্কর চক্রবর্তী, পল্লব সেনগুপ্ত, অশোকনাথ বসু, সুদিন চট্টোপাধ্যায়, শোভনলাল দত্তগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, পরাণ বন্দোপাধ্যায়, দীপালি ভট্টচার্য, জিয়াদ আলি, কমলেশ্বর মুখার্জি, স্বপ্নময় চক্রবর্তী, অরুণ মুখার্জি, শতরূপা সান্যাল, চন্দন সেন, শ্যামল সেনগুপ্ত, অনীক দত্ত, বিকাশ ভট্টাচার্য, দেবজ্যোতি মিশ্র, শুভেন্দু মাইতি, মালিনী ভট্টাচার্য, কল্যাণ সেন বরাট, বাদশা মৈত্র, রাহুল অরুণোদয় ব্যানর্জি, রজত ব্যানার্জি, গীতা চৌধুরী, মানসী সিন্হা, পূরবী মুখার্জি, মোনো সোরেন সহ ১০২ জন বিশিষ্ট শিল্পী, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী সহ সমাজের বিশিষ্টরা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের আক্রমণ করতে গিয়ে মোদী তাঁদের ‘রামের শত্রু’ হিসেবে দাগিয়ে দিচ্ছেন। একইসঙ্গে বিরোধীদের ‘রাম মন্দিরের বিরোধী’-ও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাম নবমীর মুখে একের পর এক জনসভায় তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘রাম নবমীর আগে ভুললে চলবে না কারা কারা পাপ করেছে।’’ অপর এক জনসভায় তিনি বলেছেন, রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে বিরোধীরা রামের অপমান করেছে। এই ভাবে নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে সমাজে ঘৃণা তৈরি করতে ধর্মকে হাতিয়ার করছেন মোদী।
বিশিষ্টরা কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছেন, বিজেপি সহ প্রধানমন্ত্রীর সমস্ত সভায় ‘জয় শ্রী রামের’ মতো একটি ধর্মীয় স্লোগানকে রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিজেপির তরফে সামনে আনা নির্বাচনী গানেও মানুষকে মনে রাখতে বলা হচ্ছে কারা রামকে ‘ঘরে ফিরিয়েছে’।
একইসঙ্গে তাঁরা বলছেন যে হিন্দুদের দেবতা রামের নামকে ব্যবহার করে ভারতীয় সমাজের একটা অংশে প্রতিক্রিয়া তৈরি করা হচ্ছে, যা থেকে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হচ্ছে।
বিশিষ্টরা চিঠিতে তুলে ধরেছেন, কেন্দ্রের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে যখন উসকানি ছড়ানো হয়, তখন দলের নিচের স্তরেও তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে দেশে খাদ্যের এবং কাজের সঙ্কট মাথাচাড়া দিচ্ছে, সেই অবস্থায় এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ধর্ম নিয়ে পড়েছেন, যা মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।
বিশিষ্টদের তরফে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, এই জাতীয় গুরুতর অভিযোগ সামনে এলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যেন অবিলম্বে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নিজের পদাধিকার বলে তিনি যেন ছাড়া না পেয়ে যান। এর অন্যথা হলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা হারাবেন সাধারণ মানুষ।
Comments :0