অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধনের সঙ্গে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি এবং আরএসএস’র তরফে একাধিকবার এই দাবি সামনে আনা হয়েছে। কিন্তু সেই দাবি যে ভাঁওতা, লোকসভার আগে ধর্মীয় মেরুকরণের লক্ষ্যেই যে আধা-নির্মিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন করবেন নরেন্দ্র মোদী, তা স্পষ্ট করলেন রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস।
পিটিআই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়াণ সত্যেন্দ্র দাস বলেছেন, ‘‘এই ইংরেজি নতুন বছর শুভ হতে চলেছে, কারণ এই বছরেই রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালা প্রতিষ্ঠিত হবেন। আবার এই বছরেই লোকসভা নির্বাচন হবে। দুটি ঘটনাই শুভ হতে চলেছে।’’
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে দেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা পাবে। ব্যথা, বেদনা, দুঃখ, যন্ত্রণা, মানসিক অশান্তি সহ সমস্ত সমস্যা দূর হয়ে যাবে মন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে।’’
রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের বক্তব্য, ‘‘শুধু মন্দির প্রতিষ্ঠাই নয়, গোটা দেশ এবং অযোধ্যা জুড়ে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে দেশের সরকার।’’
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, রাম মন্দিরকে সামনে রেখে দেশজুড়ে হিন্দু ভাবাবেগ উষ্কে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপি এবং আরএসএস’র নানা স্তর থেকে রাম মন্দিরকে জাতীয় স্মারক ঘোষণারও দাবি উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি চেষ্টা করছে, ২০২৪’র প্রাক্কালে রাম মন্দির স্থাপনকে মূল ইস্যু বানিয়ে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, দারিদ্র, অনাহার, গণতন্ত্রকে হত্যা করা, সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার মত ইস্যুগুলিকে পিছনের সারিতে পাঠিয়ে দিতে।
সেই চেষ্টার অঙ্গ হিসেবে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট রাম মন্দিরের ভূমিপূজন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩’র ৩০ ডিসেম্বর অযোধ্যায় রোড শো এবং জনসভা করেন মোদী। সেখান থেকে অযোধ্যায় নতুন বিমানবন্দরের উদ্বোধন, অযোধ্যা রেল স্টেশনের নতুন ভবন উদ্বোধন সহ একগুচ্ছ কর্মসূচি সারেন তিনি। সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘বিরাসত এবং বিকাশকে সঙ্গী করে অমৃতকালে প্রবেশ করবে ভারত।’’
ওয়াকিহাল মহলের বক্তব্য, বিজেপি উন্নয়ন এবং ধর্মীয় উগ্রতার মডলকে হাতিয়ার করে ভোট বৈতরণী পেরতে চাইছে। যদিও এই উন্নয়নের মডেলে সাধারণ মানুষের কথা নেই। একদিকে বুলেট ট্রেন, বন্দের ভারত এক্সপ্রেসের স্বপ্ন বিলি করা হচ্ছে, অপরদিকে সাধারণ ট্রেনগুলি ভয়ঙ্কর অব্যবস্থার সামনে দাঁড়িয়ে। জেনারেল কামরায় যাতায়াত করা নরক যন্ত্রণার সামিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Comments :0