UKRAINE WAR

কাজের টোপ দিয়ে রুশ সেনায় নিয়োগের চক্রের মাথা বিজেপি নেত্রীর পুত্র

জাতীয়

SCAM BJP UKRAINE WAR CBI BENGALI NEWS

রুশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর টোপ দিয়ে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে যুবদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে। এই মামলার পরতে পরতে হিন্দুত্ববাদী একাধিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্তদেরও নাম উঠে এসেছে। 

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হায়দরাবাদের এক যুবকের কাতর আবেদন ভাইরাল হয়। তিনি বলেন, তাঁকে রুশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠানোর নামে ইউক্রেনের যুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মুক্তির আর্তি জানান তিনি। তাঁকে উদ্ধার করার আগেই যুদ্ধে প্রাণ হারান ওই যুবক। সুরাটের এক  যুবকও একই আবেদন জানান। তিনিও উদ্ধারের আগেই প্রাণ হারান। 

এরপর নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিবিআই’র তদন্তে উঠে এসেছে, এই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রী হলেন মধ্যপ্রদেশের ধর মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলরের বিজেপি কাউন্সিলর অনিতা মুকুটের পুত্র সুযশ মুকুট। 

ঘটনা সামনে আসার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন সুযশ  মুকুট। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি অনিতা মুকুটও। সুযশ  মুকুটের বাবা রমাকান্ত মুকুট ধরের এক হাসপাতালে জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। তিনিও বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। 

সোশ্যাল মিডিয়ায়, মুকুট পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্বের ছবি রয়েছে। এবং ছবির ভঙ্গিমা অনুযায়ী, মুকুট পরিবারের সঙ্গে ভালোরকম পরিচয় রয়েছে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের। 

যদিও সমালোচনা এড়াতে বিজেপির ধর জেলা কমিটির সভাপতি মনোজ সোমানি বলেছেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে।’’

সিবিআই’র অভিযোগ, সুযশ  মুকুটের পরিচালিত সংস্থা ২৪X৭ আরএএস ওভারসিজ ফাউন্ডেশন’-র মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসা ব্যবহার করে যুদ্ধে সৈনিক জোগান দেওয়া হত মোটা টাকার বিনিময়ে। এফআইআর-এ সিবিআই অভিযোগ করেছে, ‘‘বিভিন্ন ভুয়ো রুশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে পড়ুয়াদের থেকে মোটা টাকা নেওয়া হত। তারপর তাঁদের ইউক্রেন যুদ্ধে নামিয়ে দেওয়া হত।’’

সুযশ  মুকুটের পাশাপাশি দূতাবাসের একাধিক কর্মচারীর বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। 

২৪X৭ আরএএস ওভারসিজ ফাউন্ডেশনের অপর কর্তা তনুকান্ত শর্মাও এই চক্রান্তে যুক্ত বলে এফআইআর করেছে সিবিআই। হরিয়ানার পালওয়ালের বাসিন্দা তনুকান্ত শর্মার সোশ্যাল মিডিয়া জুড়েও মোদী ভক্ত হওয়ার নমুনা ছড়িয়ে রয়েছে। নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে নিজেকে চৌকিদার তনুকান্ত শর্মা বলে দাবি করেছেন এই ব্যক্তি। নরেন্দ্র মোদী নিজেকে দেশের চৌকিদার দাবি করার পরে বহু বিজেপি কর্মী সমর্থককে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের নামের আগে চৌকিদার শব্দটি জুড়তে দেখা গিয়েছে। 

‘চৌকিদার’ তনুকান্ত শর্মার এক্স অ্যাকাউন্টে মাত্র ৪জন ফলোয়ার রয়েছে। তারমধ্যে ২জন রাশিয়ার ভোরোনেজ স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে। সেই দুই পড়ুয়ার ১জন আবার নিজেকে জয়পুরের শিবসেনা জেলা সভাপতি হিসেবে দাবি করেছে। 

সুযশ  মুকুট এবং তনুকান্ত শর্মার দাদা রবিকান্ত শার্মার এক্স বায়োতেও লেখা রয়েছে, তারা ভোরেনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। 

ভোরোনেজ বিশ্ববিদ্যালয় যদিও ভুয়ো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সেটি রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন। 

Comments :0

Login to leave a comment