MD SALIM

লুট আটকাতে পারবে একমাত্র বামপন্থীরা, মুর্শিদাবাদ থেকে প্রত্যয়ী সেলিম

রাজ্য জেলা

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWS

অনির্বাণ দে 

 

পাঁচ বছর যদি স্কুলে কলেজে, মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ না হয়, তাহলে ১৫ বছরে সেই শিক্ষাকেন্দ্রে ছাত্র ভর্তি হবে না। গোটা দেশে বিজেপি নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে এসে সরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তুলে দিচ্ছে। এরাজ্যে মোদীর নির্দেশে মমতা ব্যানার্জিও একই কাজ করছেন। যেখানে ১২ বছরে শিক্ষক থাকবে না, সেখানে ১৫ বছর পর ছাত্রও থাকবে না। আর সেই সুযোগে স্কুলের মাঠ, বাড়ি, গাছ নিলামের স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। 

রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলার স্বপনগড় মোড়ের জনসভা থেকে এমনটাই বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন সভায় সেলিম ছাড়াও সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সম্পাদক জামির মোল্লা সহ জেলার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। 

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকারের সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, স্কুলে যাওয়ার বয়সী কোনও ছেলে মেয়ে স্কুলের বাইরে থাকবে না। এখন দিদি আর মোদী প্রশ্ন করছে, এত পড়ুয়া স্কুলে থাকবে কেন? লকডাউন থেকে শুরু হয়েছিল। একের পর এক ছুটি। স্কুলে যাওয়ার অভ্যাস নষ্ট করা হচ্ছে। তারফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। স্কুল পড়ুয়ারা পরিযায়ী শ্রমিকে পরিণত হয়ে ভিনরাজ্যে চলে যাচ্ছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলাকে তিলে তিলে নতুন ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলাম। তেভাগা আন্দোলন হয়ে অপারেশন বর্গা। ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে ১৪ লক্ষ একর জমি বন্টন করা হয়েছে। মানুষের পায়ের তলায় মাটি ফিরিয়ে দেওয়ার পরে তাঁর স্বপ্নের পরিধি বাড়ে। সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজন, এবং শিক্ষার শেষে কাজের প্রয়োজন। সেই পথে হেঁটে আমরা রাজ্যে শিল্পায়ন করতে চেয়েছিলাম।’’

সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা শুধুমাত্র ভূমি সংস্কার করে থেমে থাকিনি। সেচের ব্যবস্থা করে এক ফসলা জমিকে তিন ফসলা জমিতে পরিণত করা হয়েছে। এরাজ্যের কৃষকরা পরিশ্রম করতে জানেন। কিন্তু সেই পরিশ্রমের ফসলের দাম তাঁরা পাচ্ছেন না। বীজের দাম, সারের দাম, জ্বালানির দাম, সেচের দাম, বিদ্যুতের দাম হুহু করে বাড়ছে।’’

কৃষি সঙ্কট প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, ‘‘আগে পাট কেনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ছিল। চাল কিনত ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। তৃণমূল এবং বিজেপির রাজত্বে এই সংস্থাগুলির নাম শোনা যায়না। সবটাই ফড়েরা নিয়ন্ত্রণ করে। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে জোরদার করা হয়েছিল, যাতে গরিব মানুষের পাশে প্রয়োজনে দাঁড়ানো যায়। গ্রামসভা মানুষকে ভরসা যোগাত। এখন সেগুলো লুটেরাদের আখড়া হয়ে গিয়েছে। মমতা ব্যানার্জি বিধানসভা চৌপাট করেছেন, আর মোদী লোকসভা এবং রাজ্যসভা চৌপাট করেছেন।’’

এই সমাবেশ লাগোয়া অঞ্চলে পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘মীরজাফর, জগৎ শেঠদের বেইমানের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেশকে লুট করার সুযোগ পেয়েছিল। আজকে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানি একই ভাবে দেশকে লুটতে চাইছে। মমতা ব্যানার্জির দল সেই লুট আটকাতে পারবে না। কারণ চোর, দুর্নীতিবাজরা লড়াই করতে পারে না। ইডি সিবিআই দিয়ে তাদের ভয় দেখানো যায়। একমাত্র সিপিআই(এম) এই লড়াই লড়তে পারবে।’’

সভা থেকে স্লোগান তুলে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই কে করবে? আপনি করবেন। আপনারা করবেন। এবং সেই লড়াইয়ে কোনও মন্দির, মসজিদ, জাত পাত থাকবে না। রমজান, দুর্গাপুজো, বড়দিন নিজের জায়গায়। মানুষ নিজের মত করে সেই উৎসব পালন করবেন। কিন্তু যখন জীবন জীবিকার কথা হবে, মূল্যবৃদ্ধির কথা হবে, কর্মসংস্থানের কথা হবে, তখন সেখানে ধর্ম আসবে না।’’

 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment