Tram Kolkata

ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে পথে এসএফআই

রাজ্য কলকাতা

বিশ্ব উষ্মায়নের অন্যতম কারণ দুষণ। এই দুষণ রোধের ক্ষেত্রে অন্যতম উপায় পরিবেশ বান্ধব যান বাহন ব্যাবহার। কলকাতার ঐতিহ্য এবং পরিবেশ বান্ধব যান হলো ট্রাম। কিন্তু কলকাতার ঐতিহ্য, দেড়শো বছর ধরে এই শহরে চলা ট্রামকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চলছে তৃণমূল সরকারের মদতে। পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি খরচ সাশ্রয়কারী এই যানকে দিনে দিনে রুগ্‌ণ করে তা সম্পূর্ণ ধ্বংস করার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। কোনও কারণ ছাড়া একের পর এক ট্রাম রুটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 


পরিবেশ দিবসের দিন তাই ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে কলেজ স্ট্রীটে পথে নামলো এসএফআই। সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিন এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রীট ক্যাম্পাসের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাম ফেরানোর, কলকাতার পরিবেশ বাঁচানোর শপথ নিল এসএফআই। 
ট্রাম রুটগুলি বন্ধ করার পেছনে রাজ্য সরকারের প্রধান অজুহাত ছিল যানজট, দ্বিতীয় অজুহাত ট্রামের শ্লথ গতি। কিন্তু ধর্মতলা-খিদিরপুর রুটে কোনও যানজট নেই, তাহলে সেখানে ট্রাম বন্ধ কেন। আমফানের সময়ে ওই রুটে ওভারহেডের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও কাজ হয়নি, উপরন্তু তারগুলি চুরি হয়ে গেছে। অন্যদিকে গালিফ স্ট্রিট থেকে বিবাদী বাগ রুট যা গেছে রবীন্দ্র সরণির ওপর দিয়ে, সেখানেও বন্ধ ট্রাম চলাচল, ওই রাস্তায় পিচ ঢেলে দেওয়ার কথা বলেছেন কলকাতার মেয়র। 


তেমনই মা ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার পর পার্ক সার্কাস ট্রাম ডিপো এলাকায় ট্রাম চালাতে এখন কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু কোনও উদ্যোগ নেই সরকারের। 
বেলগাছিয়া ও শিয়ালদহে দুর্বল ব্রিজের অজুহাতে ট্রাম বন্ধ রাখা হয়েছে কিন্তু ট্রামের থেকেও অত্যন্ত ভারী পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে কোনও নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। 
উলটোডাঙ্গা ট্রাম ডিপো থেকে কোনও কারণ ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রাম চলাচল। এভাবেই ক্রমশ ধ্বংস করা হয়েছে ট্রামকে। অথচ যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে রাস্তায়। 


পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালে যেখানে কলকাতার ৩৭টি রুটে ট্রাম চালানো হতো, গাড়ি মজুত ছিল প্রায় ২২০টি। তার মধ্যে প্রতিদিন চালানো হতো ১০০ থেকে ১১০টি। এখন অর্থাৎ ২০২৩ সালে মাত্র ২টি রুটে ট্রাম চালানো হয়। এখন মজুত ট্রামের সংখ্যা ২০টি, চলে দিনে ১১ থেকে ১২টি। স্থায়ী কর্মীর সংখ্যাও কমে গেছে হুহু করে। কিন্তু এখনও ৭৫ থেকে ৮০টি ট্রাম এমন অবস্থায় আছে যে পুরানো রুট চালু করে সেগুলিকে নিয়মিত চালানো সম্ভব। কিন্তু সম্পূর্ণ উদাসীন সরকার। শুধু তাই নয়, উপরন্তু ট্রাম লাইনের ওপর পিচ ঢেলে দিতে চাইছে সরকার, খুলে নেওয়া হচ্ছে ওভারহেড তার। অভিযোগ, ৩৭টি ট্রামকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। 


টালিগঞ্জের জমিতে শপিং মল, গড়িয়াহাটের জমিতে কফি শপ ইত্যাদি পরিকল্পনা হচ্ছে কিন্তু ট্রাম চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। শুধু হেরিটেজ নাম দিয়ে ২-৪টি ট্রাম চালিয়ে লাভ কি হবে। ট্রাম তো পরিবেশবান্ধব এবং কিছুটা কম ভাড়াতে যাতায়াত করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

Comments :0

Login to leave a comment