হরিয়ানার পুলিশ আড়াল করছে মারাত্মক অপরাধীদের। কিন্তু রাজস্থান সরকারকেও পুলিশের ভূমিকা তদন্ত করে দেখতে হবে। গোরক্ষার নামে নিরীহ দুই মুসলিম যুবককে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় এই দাবি তুলেছে সিপিআই(এম)।
পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজস্থান রাজ্য সম্পাদক অমরা রাম মেওয়াতির ঘটমিকা গ্রামে গিয়েছিলেন শুক্রবারই। বজরঙ দলের কুখ্যাত গোরক্ষক বাহিনীর হাতে নিহত জুনেইদ এবং নাসিরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। ১৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনার বিশদ জানিয়ে শনিবার বিবৃতি দিয়েছেন কারাত এবং রাম।
শনিবার সংবাদমাধ্যমে মারাত্মক অভিযোগ সামনে এসেছে। হরিয়ানা পুলিশের কাছে জীবিত অবস্থায় রক্তাক্ত দুই যুবককে নিয়ে গিয়েছিল বজরঙ দলের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরা। গোরক্ষার নামে এমনই তাণ্ডব চালায় এই বাহিনী।
ধৃতদের একজনের বয়ান উল্লেখ করে রাজস্থান পুলিশই সেই বক্তব্য জানিয়েছে। ধৃত রিঙ্কু সৈনি জানিয়েছে তারা চারজন গরু পাচারকারী রব তুলে মারধর করে জুনেইদদের। মারধর হয় হরিয়ানার নুহতে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হরিয়ানা পুলিশের হাতে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ বাদেই মারা যান ওই দুই যুবক। পুলিশ দায়িত্ব নেয়নি, দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারও করেনি। চার দুষ্কৃতী দেহ গাড়িতে তুলে হরিয়ানার ভিওয়ানিতে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
সিপিআই(এম)’র দাবি, দুই যুবক জুনেইদ এবল নাসিরকে অপহরণ করা হয়েছিল রাজস্থানেই। পরে তাঁদের দগ্ধ দেহ এবং পোড়া গাড়ি পাওয়া যায় হরিয়ানার ভিওয়ানির লোহারুতে। অপহরণ যেহেতু রাজ্যেই, তাই রাজস্থান সরকারকে তদন্তের দায়িত্ব নিতে হবে। দৃঢ়তা দেখা হবে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। অসহায় পরিবারকে ৫০ লক্ষ করে টাকা দিতে হবে।
তাঁরা জানান যে দোষীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা না দিয়ে কেবল অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। অথচ তার আগে রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী পরিবারকে আশ্বাস দেন যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই আশ্বাসে ভরসা করে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে পরিবার।
কারাত, রাম এবং পার্টি নেতৃবৃন্দ ঘটমিকায় নিহত দুই তুতো ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। জুনেইদ ছিলেন দোকান ব্যবসায়ী। লকডাউনের জেরে খেতমজুরি করে সংসার চালাতেন। তাঁর এক ভাইয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। সেই পরিবারকেও তিনি দেখতেন। ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধের জন্যই সেদিন হরিয়ানার ভিওয়ানিতে গিয়েছিলেন তাঁরা।
তুতো ভাই নাসির ছিলেন ট্রাকচালক। দু’টি পরিবারই অসহায় হয়ে গিয়েছে। এর আগে ২০১৭’তে গোরক্ষার নামে এই গ্রামেই একজনকে হত্যা করা হয়।
বিজেপি সরকারের মেয়াদে রাজস্থানে প্রায়ই মুসলিম যুবকদের নামে গরু পাচারের মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হতো। গোরক্ষার নামে হত্যার একের পর এক ঘটনা আড়াল কররতেই তা চলত। রাজস্থান-হরিয়ানা সীমান্তে পশুপালক বা পশু ব্যবসায়ী মুসলিম হলেই আক্রমণ করা হতো। হরিয়ানার বিজেপি সরকার এমন অপরাধীদের আড়াল করেই চলছে।
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Comments :0