ঝালদা পৌরসভায় তৃণমূল সরকারের চাপিয়ে দেওয়া চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কংগ্রেসের দখলেই থাকলো ঝালদা পৌরসভা। নির্দল কাউন্সিলার শীলা চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলারকে চেয়ারম্যানের পদে বসানোর সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আপাতত ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে নির্বাচিত কংগ্রেস কাউন্সিলার পূর্ণিমা কান্দুই চেয়ারপারসনের দায়িত্ব সামলাবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে নির্বাচিত চেয়ারপারসনের কাউন্সিলার পদ খারিজ করে তৃণমূলের একজন কাউন্সিলারকে চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে, তা নিয়েও শুক্রবার উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘এত তাড়া কীসের?’ পাশাপাশি শীলা চট্টোপাধ্য়ায়ের কাউন্সিলার পদ খারিজ করার যে নির্দেশ ঝালদার মহকুমা শাসক দিয়েছিলেন, তার উপরেও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, যেন তেন প্রকারে ক্ষমতা দখল রাখতে রাজ্যের শাসক দলের নির্লজ্জতার নজির তৈরি হয়েছে ঝালদা পৌরসভা নিয়ে। মানুষের রায়ে পরাজিত হওয়ার পরেও কোনভাবেই যেন তৃণমূল ঝালদা পৌরসভা হাতছাড়া করতে চায় না। তাই ঝালদায় পৌরভোটের পর থেকেই টানাপোড়েন চলছে। ভোটের পরই খুন হন কংগ্রেসের নির্বাচিত কাউন্সিলার তপন কান্দু। যার জেরে পৌরবোর্ড গঠন নিয়ে তৈরি হয় অচলাবস্থা। প্রথমে তৃণমূল সুরেশ আগরওয়াল পৌরপ্রধানের পদে বসলেও আস্থা ভোটে তিনি পরাজিত হন। এর পর শাসক দলের এক কাউন্সিলারকেই প্রশাসক হিসেবে পৌরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্ট। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে ঝালদা পৌরসভায় জয়ী হয় কংগ্রেস। কংগ্রেসের সমর্থনে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন শীলা চট্টোপাধ্যায় নামে এক নির্দল কাউন্সিলার।
পরদিনই দলত্যাগবিরোধী আইনে শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলার পদই খারিজ করে দেন মহকুমাশাসক। শীলা চট্টোপাধ্যায়কে চেয়ারপারসন পদ থেকে সরিয়ে ঝালদার পৌরপ্রধান হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূল কাউন্সিলার সুদীপ কর্মকারকে। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শীলা চট্টোপাধ্যায়। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি। এদিন এই মামলাতেই তৃণমূল সরকারের চাপিয়ে দেওয়া চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
Comments :0