প্রবীর দাস: হাসনাবাদ
জমি মাফিয়াদের কবলে 'হাট'। ভেঙে ফেলা হলো পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে তৈরি করে দেওয়া কংক্রিটের হাট শেডের একাংশ। এই পদক্ষেপ ঘিরে ছড়ালো ক্ষোভ।
উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের মাখালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতি ১৯৮৬ সালে পাকা কংক্রিটের ছাদ করে দিয়েছিল। জানালেন পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি সুবিদ আলি গাজি।
এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে আপাতত ভাঙার কাজ বন্ধ থাকলেও শাসক দলের মদতে জমি মাফিয়াদের হুমকির মুখে পড়েছেম স্থানীয়দের পাশাপাশি হাটের শতাধিক ব্যবসায়ী।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার, বসিরহাট মহকুমা শাসক, বিডিও হাসনাবাদ, হাসনাবাদ থানার আইসি-কে গত ৬ ডিসেম্বর ডাক বিভাগের মাধ্যমে লিখিত গণ অভিযোগ জানিয়েছেন মাখালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আবুল কালাম গাজি সহ অন্যান্যরা।
তারপর এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত। পুলিশ প্রশাসনের নীরবতায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ ও হাটের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে গোটা হাট চলে যাবে জমি মাফিয়াদের পেটে। যা শুরু হয়েছে জনৈক হালিম মণ্ডলকে বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমে।
দলিল দস্তাবেজ ঘেঁটে দেখা গেল ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপুর মৌজায় জে এল নম্বর ৩৪ ও ৯৪ নম্বর দাগে ৬ শতক জমির উপর এই হাট। ঐতিহ্যমণ্ডিত কুমারপুকুর মেলা দীর্ঘ তিন শতাধিক বছর ধরে সম্প্রীতির বার্তা বহন করে চলেছে। হাটের বয়স ১৫০। দান করেছিলেন টাকির জমিদার বীরেন্দ্র নাথ চৌধুরী এবং তাঁর পরিবার। এই চৌধুরী পরিবারের কোন একজন আনুমানিক বছর তিনেক আগে হালিম মণ্ডলকে বিক্রি করে কমবেশি দুই শতক জায়গা। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, কী করে এবং কোন আইনের বলে দান সম্পত্তির উপর তৈরি হাটের জায়গা বিক্রি হয়? প্রশ্ন উঠছে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের ভূমিকা নিয়েও।
দপ্তর এই বেআইনি কাজের সাথে যুক্ত, এমনই প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
বহু দূর থেকে হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ প্রাচীন এই মেলা কুমার পুকুর মেলায় আসেন। অনেকেই রাতে থাকেন এই হাটের পাকা ছাদের তলায়। হাটের ভাঙা শেডটি পুনর্নির্মাণ করে সম্প্রীতির পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে পুলিশ প্রশাসন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক, এলাকায় জোরালো এই দাবি।
Comments :0