মাঘে শীতের রেশ হারিয়েছে। আর সেই সঙ্গে কলকাতায় বাড়ছে মাত্রারিক্ত দূষণ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গেছে যে ময়দানের সবুজের সমারোহও তা ঠেকাতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে ময়দানে ইদানিং প্রার্তভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের বুধবারের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ওইদিন সকাল ১১টায় ময়দানের কোলে থাকা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে বাতাসে যে সূক্ষ্ম ধূলিকণা খোঁজ মিলেছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা মাত্রা এদিন পৌঁছে গেছে ৩০২ ঘরে। এই সূচকের মান কলকাতার অন্যান্য এলাকা থেকে বেশি। কিন্তু তা হওয়ার কথা নয়।
সবুজে ঘেরা ময়দানকে কলকাতার ‘ফুসফুস’ বলা হয়। ইদানিং ওই এলাকায় এতটা অবণতি দেখা যায় নি। কিন্তু আচমকা বুধবার সকালেই এই রিপোর্ট দেখা গেছে। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের রিপোর্ট বলছে, বুধবার সকাল ১১টার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভিক্টোরিয়া চত্বরে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার গড় ৩০২। এই মান ‘অত্যন্ত খারাপ’ বলে পরিচিত। বিগত দুই-তিন দিন বেলা ১২টা নাগাদ বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ সব থেকে বেশি ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায়।
সেই হিসাব মেনে বুধবার বা দিন কতক যাঁরা ময়দানে প্রার্তভ্রমণ করেছেন, তাঁরা কার্যত সবুজের মধ্যে গিয়েই ‘বিষবাতাস’ গ্রহণ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সকালের দিকে ময়দানে প্রার্তভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ছুটির দিকে সাধারণত সকাল-বিকালে প্রচুর মানুষ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে ভিড় জমান। সেখানে থাকেন প্রচুর বহিরাগত। ময়দান সংলগ্ন অসংখ্য দর্শনীয় স্থান দেখার তাগিদে আসা মানুষদের কাছেও এখন নতুন করে বিপদ তৈরি হলো।
হঠাৎ করে ময়দান এলাকায় বায়ুর স্বাস্থ্যের এমন অবনতির জন্য অনেকে দায়ী করছেন ধর্মতলা সংলগ্ন বাস টার্মিনালকে। আবার অনেকের মত, দিনকে দিন গাছের ঘনত্ব ময়দান চত্ত্বরে কমে যাওয়ার জের এখন উপলব্ধি করা যাচ্ছে। এসবের মধ্যে দূষণ পর্যদ অবশ্য জানাচ্ছে, কলকাতার চলতি আবহাওয়া এর অন্যতম কারণ। সেই সঙ্গে শীতকালে ময়দানের আশেপাশে যত্রতত্র পাতা পোড়ানো আর একটি কারণ। সম্প্রতি গঙ্গাসাগর মেলা আগতরা যেহারে ওই এলাকায় কাঠ পুড়িয়েছে তার জেরেই এমন হতে পারে। আবহাওয়ার শুষ্কতা কম থাকায় সেই দূষণ একজায়গায় জড়ো হয়ে থাকাতেই হঠাৎ এমনটা বৃদ্ধি বলে মনে করা হচ্ছে।
Comments :0