Mangoes From Hooghly

ফলন কম, চিন্তায় হুগলির আম চাষিরা

জেলা

ছবি - অভীক ঘোষ।

হুগলিতে এবার আমের ফলনে ঘাটতি থাকায় চিন্তায় কৃষক থেকে শুরু করে ব্যাবসায়ীরাও। ভীন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে হুগলির আম, দাম পাচ্ছে না কৃষকেরা। এবারে আমের ফলন কম থাকায় দামও চড়া। অনেকেই মনে করছেন আবহাওয়ার খামখেয়ালি জেরে এই পরস্থিতি। পাশাপাশি অনেক কৃষকই মনে করছেন, দাম বেশি হলেও অন্য খরচ বেশি থাকায় লাভের মুখ সেভাবে দেখতে পারবেন না কৃষকরা। 
মালদার পর বেশি আম চাষ হয় এ রাজ্যের হুগলিতে। ব্যান্ডেল, সুগন্ধা, চুঁচুড়া, গোটু, বৈদ্যপাটি, বলাগড় সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আমের বাগান রয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে আমের ফলন খুব একটা ভালো হয়নি। প্রতিবছর বাগান মালিকদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে আম চাষ করেন কৃষকেরা। ল্যাংড়া, হিমসাগর, বোম্বাই সহ বিভিন্ন প্রজাতির আম খেতে সুস্বাদু। আর সে কারণেই প্রতিবছর হুগলি থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ চেন্নাই দিল্লি সহ অন্যান্য রাজ্যে পাড়ি দেয় এ রাজ্যের আম। কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পান হুগলির আম চাষীরা। তবে এবছর আমের ফলন কম , চাহিদা থাকলেও অন্যান্য রাজ্যে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমের মুকুল আসার সময় বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তীব্র গরমে অসময়ে ঝরে পড়েছে আমের মুকুল। তার ওপর বেড়েছে ওষুধ ও শ্রমিকের খরচ। অধিকাংশ চাষি যারা বাগান লিজ নিয়ে চাষ করেছেন। তাই এ বছর আম চাষে লাভের মুখ দেখতে পাবে না বলেই মনে করছেন চাষিরা। সামনেই রয়েছে জামাইষষ্ঠী তার আগে জামাইদের পাতে আম দিয়ে আপ্যায়ন করাটাই শাশুড়িদের কাছে অনেকটাই খরচ সাপেক্ষ। 
আম চাষী বিনয় পাদক বলেন, ‘‘প্রতিবারই বাগান লিজ নিয়ে চাষ করতে হয়। এবছর আমের যা ফলন তাতে চাষীরা যে টাকা খরচ করেছে সেই টাকা উঠবে না। আমের মুকুল আসার পর গাছে তিনবার স্প্রে করতে হয় । নাবী বোলের সময় আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য মুকুল ঝরে গেছে। ওষুধের দাম অত্যাধিক বেড়ে গেছে তার ওপর বেড়েছে শ্রমিকের খরচ। আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার লিজ নিয়ে চাষ করা হয়েছে কিন্তু এবছর সেই টাকা উঠবে কিনা সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। তার উপর আম তৈরি করা থেকে পাড়া পর্যন্ত প্রায় দু লাখ টাকা খরচা পড়ে। আগামী বছর আমের ফলন হলে পরেও বাজার হবে না’’। 
ব্যবসায়ী তাপস পাল জানান, ‘‘ গত বছরের তুলনায় আবহাওয়ার জন্য এ বছরে ফলন অনেক কম। যারা বাগান নিয়ে চাষ করেছে তাদের অনেকের কাছে ফলন হয়নি। গাছপাকা হিমসাগর পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৮০- ৮৫ টাকা। গটু বাজারে অন্যান্য বছর ১০০ টা গাড়ি লোড করা হয়, কিন্তু এ বছর ৮ থেকে ১০ টা করে গাড়ি লোড করা হচ্ছে। এ বছর ৮ থেকে ১০ টন করে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে এ রাজ্যের আম। অন্যান্য বছরের তুলনায় যা দশ শতাংশ। যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। 

Comments :0

Login to leave a comment