এখানেই প্রশ্ন উঠছে ৯ আগস্ট নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘ সময় টালা থানায় কেন বসিয়ে রাখা হলো? পুলিশ প্রশাসন কি ময়নাতদন্তের পর পরিবারের অগোচরে কেন দেহ শ্মশানে নিয়ে যায়, সেখানে পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ দাঁড়িয়ে থেকে দ্রুততার সাথে কেন দেহ দাহ করালেন? দেহ মেলার এগারো ঘন্টারও পরে কেন দায়ের হয়েছিল অভিযোগ? কেন সেমিনার রুমে, যেখানে দেহ মিলেছিল চিকিৎসক ছাত্রীর, সেখানে ভিড় ছিল বহু জনের? তাদের আড়ালের চেষ্টাতেও কেন ব্যস্ত থাকল পুলিশ এবং রাজ্য? অভিযুক্ত অভীক দে-কে কেন ফিরিয়ে নেওয়া হলো রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে? এই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বেই প্রশাসন চার্জশিট দায়েরের অনুমতি দেয়নি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের, ঘটনার সময়ের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। টালা থানার ওসি-র বিরুদ্ধেও চার্জশিট দায়েরের অনুমতি দেয়নি সিবিআই-কে। যিনি ফাঁসি চাইছেন, তিনিই কেন অপরাধীদের আড়ালে এত সক্রিয়, উঠছে সে প্রশ্নও। দেহই বা কেন তাড়াহুড়ো করে পরিবারকে সরিয়ে রেখে দাহ করে দেওয়া হয়েছিল সরকার এবং তৃণমূলের তৎপরতায়, উঠছে সে প্রশ্নও।
পরবর্তী সময় নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে ওই দিন দেহ দাহ না হলে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা যেত।
উল্লেখ্য আরজি কর কাণ্ডের পর সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে তখন আরজি কর হাসপাতালে থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে অধ্যক্ষ করে। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দুর্নীতির বিষয় যখন সামনে আসে সেই সময়, সন্দীপকে সাসপেন্ড করেনি রাজ্য সরকার।
এই ঘটনার তদন্ত ভার প্রথমে ছিল কলকাতা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু প্রথমে নির্যাতিতার পরিবারকে ফোন করে খবর দেওয়া হয় যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সেই আধিকারিককে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করেনি কলকাতা পুলিশ তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার বাবা মা।
১৪ আগস্ট যখন রাত জাগা কর্মসূচি চলছে সেই সময় হামলা হয় আরজি কর হাসপাতালে। অভিযোগ সেই সময় ঘটনাস্থলে ভাঙচুর চালানো হয়। এখানে আরও একটা প্রশ্ন উঠছে তা হচ্ছে কেন ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রাখেনি কলকাতা পুলিশ? যারা হামলা করলো তাদের একজনও কেউ কেন গ্রেপ্তার হলেন না?
মুখ্যমন্ত্রী এখন বলছেন তিনি বিচারের পক্ষে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের হাতে যখন তদন্ত ভার ছিল তখন যেই ঘটনা ঘটেছে প্রমাণ লোপাট করার জন্য, তার ব্যাখ্যা তিনি দেননি। কলকাতা পুলিশ কেন কোন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি উঠছে সে প্রশ্নও।
Comments :0