Adenovirus West Bengal

রাজ্যে ফের দুই শিশুর মৃত্যু জ্বর, শ্বাসকষ্টে

রাজ্য

Adenovirus West Bengal

ফের রাজ্যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক শিশুর। মৃত্যুর শংসাপত্রে নিউমোনিয়া লেখা হলেও পরিবারের দাবি অ্যাডিনো পজেটিভ ছিল শিশুটি। হুগলির পোলবার মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা সমীর মন্ডলের নয় মাসের মেয়ে সুস্মিতা মন্ডল বেশ কিছুদিন জ্বর শ্বাস কষ্টে ভুগছিল। স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখানো হয়। জ্বর না কমায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। সোমবার সকালে পাঁচটা নাদাদ তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। নিহত শিশুর পরিবারের দাবি শিশুটি অ্যাডিনো ভাইরাস পজিটিভ ছিল সেই কথা হাসপাতালের তরফে তাদের জানানো হয়েছিল। তবুও মৃত্যু শংসাপত্রে নিউমোনিয়া লেখা হয়। তাদের আরো অভিযোগ এক লক্ষ টাকা দামের একটি ইনজেকশন দেওয়া হয় দুদিন আগে। হাসপাতালে অনেক সময় চলে যায় পরীক্ষা নিরিক্ষা করতেই। হাসপাতালের ভিতরে কি হচ্ছে সেই বিষয়ে কিছুই বলে জানান তারা। সর্দি বসে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। রবিবার জানানো হয় শিশুর অবস্থা ভালো না। তাই আমরা সবাই গেলাম। তাদের অভিযোগ কি চিকিৎসা হয়েছে কিছুই বুঝতে পারলাম না। হাসপাতালের বেহাল পরিকাঠামোর দিকে আঙুল তুলছেন ভুক্তভুগী পরিবারগুলি।


হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুইঁয়া জানান, হুগলিতে এখনো পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৩০৪ জন। তার মধ্যে সক্রিয় ১৩০ জন। এদিন ভর্তি হয়েছে ৫৯ জন। প্রতিদিন গড়ে ত্রিশ থেকে ষাট জন আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব হাসপাতালকে সতর্ক করা হয়েছে। জ্বরে আক্রান্তদের জন্য পৃথক আইসোলেশান ওয়ার্ড খোলা হচ্ছে। ওই ওয়ার্ডে মাস্ক পরতে হবে। তিনি বলেন, অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা জানার জন্য পরীক্ষার পরিকাঠামো এখনো জেলায় নেই। তবে উপসর্গ দেখে প্রয়োজনে কলকাতার ল্যাবে নমুনা পাঠানো হবে। তিনি আরো বলেন, জ্বর হলে পেট ভরে খাওয়া আর পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। জল বেশি করে খেতে হবে। শরীর দূর্বল থাকলে ইমিউনিটি কম থাকলে ভাইরাস আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। এদিন সকালে কলকাতার বিসি রায় হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিতে চলেছে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ। দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। আইসিইউ, এনআইসিইউ, পিআইসিইউগুলি ভর্তি হয়ে রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। মহানগরেই গত ৪৮ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ শিশুর। 
অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হলে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আইসিইউ দরকার হয়। কিন্তু হাসপাতালগুলির, বিশেষত শিশু হাসপাতালগুলিতে, খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে আইসিইউ, এনআইসিইউ বা পিআইসিইউগুলি ভর্তি। অভাব রয়েছে অন্যান্য পরিকাঠামোর। ফলে চিকিৎসকদের চিকিৎসা করতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
ক্ষোভ বাড়ছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলির। স্বাস্থ্যভবন থেকে নির্দেশিকার পর নির্দেশিকা জারি হচ্ছে কিন্তু হাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি হচ্ছে না বলছেন চিকিৎসক মহলই।
 

Comments :0

Login to leave a comment